সিঁথি থানায় পুলিশ হেফাজতে ব্যবসায়ী রাজকুমার সাউয়ের মৃত্যুর ঘটনায় রহস্যজনক ভাবে উধাও হয়ে গিয়েছেন ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী আসুরাবিবি।নির্মীয়মান একটি বহুতলের সামগ্রী চুরির অভিযোগের তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথম আটক করে আসুরাবিবিকে। পেশায় তিনি কাগজকুড়ানি।মঙ্গলবার সকালে ডাক্তার দেখাতে যাওয়ার কথা বলে বের হন আসুরা বিবি। কিন্তু তারপর থেকে আর তাঁর কোনও খোঁজ নেই। পুলিশ দাবি করে, তাঁর বয়ানের ভিত্তিতেই আটক করা হয় ছাঁট লোহার ব্যবসায়ী রাজকুমারকে। তিনি পাইকপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি চোরাই জিনিস কিনেছেন, এমন অভিযোগেই তাঁকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। গত সোমবার তাঁর মৃত্যুর পরেও প্রকাশ্যে আসুরাবিবি দাবি করেন, তাঁকে জোর করে মিথ্যে বলিয়েছিল পুলিশ।
পুলিশের দাবি, ব্যবসায়ী আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন। পুলিশের জেরার মুখে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। তবে আসুরাবিবি জানান, তাঁর সমানেই মারধর করা হয় ব্যবসায়ীকে। এমনকী তাঁকেও চড় মারা হয়। তিনি যে অন্তঃসত্ত্বা, সে কথা পুলিশকে জানানো সত্ত্বেও তাঁর সঙ্গে নির্দয় আচরণ করা হয়। মৃতের পরিবারের দাবি, আসুরাবিবি তাঁদের জানিয়েছিলেন, থানায় জেরার সময় দোষ স্বীকার করানোর জন্য ইলেক্ট্রিকের শক দেওয়া হয় ব্যবসায়ীকে। এ ব্যাপারে ব্যবসায়ীর ভাই রাকেশ সাউ দাবি করেছেন, এসআই সৌমেন্দ্রনাথ দাস এবং আরও দুই অফিসার অরিন্দম দাস এবং চিন্ময় মোহান্ত তাঁর দাদার মৃত্যুর জন্য দায়ী।
লালবাজার জানিয়েছে, অভিযুক্ত তিন পুলিশ আধিকারিককে ‘ক্লোজ’ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ঘটনার রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে মানবাধিকার কমিশন। গত মঙ্গলবার সকালেই ওই ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করার আবেদন করেন মৃতের প্রতিবেশী এক আইনজীবী। শুনানিতে হাইকোর্ট জানায়, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নির্দেশিকা মেনে মৃতদেহের ময়নাতদন্তের ভিডিওগ্রাফি করতে হবে।