রাজ্যের পুলিশ বাহিনী ঘিরে বড় চাল বাংলার এক বিজেপি-সাংসদের

শুধু দল নন, CAA বিরোধিতায় কার্যত প্রশাসনকেও পথে নামিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
এবার সেখানেই ফাটল ধরানোর কৌশল নিতে চলেছে বিজেপি৷

গেরুয়া-বাহিনির এক অভিনন্দন যাত্রায় অংশ নিয়ে রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনকে CAA-কে সমর্থন করার আবেদন জানালেন বাংলার বিজেপি সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া। বড় মাপের এই বিজেপি সাংসদের এ ধরনের বক্তব্য ঘিরে এখন রাজ্যের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে৷ পুলিশ-প্রশাসনেও এর প্রভাব পড়ছে বলে সূত্রের খবর৷

কলকাতা তথা রাজ্য পুলিশ এবং সিভিক ভলেন্টিয়ারদের মধ্যে বিজেপি-মনোভাবাপন্ন কর্মী নেই, এমন ধারনা করা মূর্খামি৷ চাকরির তাগিদে তারা সরব হন না৷ তা ছাড়া নন-গেজেটেড পুলিশের ইউনিয়ন বা সংগঠন করার ক্ষেত্রেও রাজ্য সরকার কয়েক বছর আগেই বিধিনিষেধ জারি করেছে৷ ফলে, সরকারি দলের নিজস্ব বক্তব্য পুলিশ বাহিনিতে প্রচার করার আর সুযোগ নেই৷ এবার সেই সুযোগকে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা নিয়েছে বিজেপি৷ বিজেপির ধারনা, পুলিশ বাহিনিতে বিজেপি’র বার্তা একবার ঢুকিয়ে দিতে পারলে, সামগ্রিকভাবে ১০০ভাগ সাফল্য মিলবে৷ পুলিশের উপরে শাসক দলের প্রভাব কমবে এবং পুলিশের সাহায্য নিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলগুলিকে হেনস্থা করার প্রবনতাও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে৷ রাজ্যের শতাধিক পুরসভার ভোটের মুখে বিজেপির এই চাল মারাত্মক বলেই রাজনৈতিক মহলের ধারনা৷

মঙ্গলবার বর্ধমান সাংগঠনিক জেলা বিজেপি আয়োজিত এক ‘অভিনন্দন যাত্রা’-য় ছিলেন বিজেপি সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া, রাজ্য বিজেপি সহ-সভাপতি বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরি-সহ জেলা বিজেপির অন্যান্য নেতারা৷ মিছিল শেষে স্থানীয় এক মাঠে জনসভারও আয়োজন করে বিজেপি৷ আর সেখানেই CAA-কে সমর্থন করার জন্য পুলিশ প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানান বিজেপি সাংসদ আলুওয়ালিয়া। তিনি বলেন, “এখানে যারা সিভিক ভলেন্টিয়ার আছেন তারা ১১% উদ্বাস্তু পরিবার থেকে এসেছে। সরকারের কথায় এই আইনের বিরোধিতা করে তারা নিজেদের পায়ে কুড়াল মারছেন। আমাদের পুলিশের মধ্যে, প্রশাসনের মধ্যে প্রায় ৬৫ শতাংশ উদ্বাস্তু পরিবার থেকে এসেছেন। তারাও রাজ্য সরকারের হুকুম মানতে গিয়ে নিজেদের জটিল অবস্থায় ফেলছেন। কেন সরকারের প্ররোচনায় পা দিচ্ছেন?” প্রশ্ন তোলেন
আলুওয়ালিয়া৷

সাংসদ আলুওয়ালিয়া পুলিশকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ” CAA নিয়ে সরকারের হুকুম মানতে গিয়ে নিজেদের ভবিষ্যত কেন অন্ধকারে ফেলে দিচ্ছেন? বাস্তব বুঝুন৷ বিপদ আপনাদেরই হবে৷”

এদিকে, বিজেপি সাংসদ পুলিশ প্রশাসনে ফাটল লাগাতে চাইছেন বলে তৃণমূল অভিযোগ এনেছে৷ তৃণমূলের বক্তব্য, রাজ্য প্রশাসনকে হুমকি দিচ্ছেন সাংসদ৷ শৃঙ্খলা ভাঙ্গতে প্ররোচনা দেওয়া হচ্ছে৷

রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, বিজেপি যদি একবার পুলিশ বাহিনিকে প্রভাবিত করতে পারে, তাহলে বিপাকে পড়বে রাজ্য সরকার ৷ পুলিশ বাহিনিতে সরাসরি সংগঠন করা নিষিদ্ধ ৷ ফলে দলগতভাবে তৃণমূল কিছুই করতে পারবে না৷ পুলিশে তৃণমূলের সংগঠন থাকলে এত সহজে ফাঁকা মাঠ বিজেপি পেতো না৷ অঙ্ক করে সেই পথেই এগোতে চাইছে বিজেপি৷ এদিন তারই ইঙ্গিত দিয়েছেন আলুওয়ালিয়া৷

আরও পড়ুন-ক্ষমতা বদলালেও, বদলায়নি পেনশনভোগীদের হাল, ফের বিক্ষোভ ভাটপাড়া পুরসভায়

Previous articleBreaking: লখনউ আদালতে দুষ্কৃতী হামলা
Next articleখোঁজ মিলল আসুরা বিবির, বয়ান বদল ঘিরে নতুন করে চাঞ্চল্য