Monday, August 25, 2025

তাপস পাল নেই, মন খারাপ মহিষাদল রাজবাড়ির

Date:

Share post:

পরিচিতি লাভ করেছিলেন চলচ্চিত্র জগৎ দিয়ে। জীবনের মাঝপথে রাজনীতিতে এসে কিছুটা বিতর্কিত হলেও টলিউডে তাঁর খ্যাতি বা জনপ্রিয়তা কোনও অংশেই কমেনি।
তিনি তাপস পাল। আজ নেই। আর তাই তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ হল মহিষাদলের রাজপরিবার।

রাজবাড়ির অন্দরে-অলিগলিতে তিনি ছবির শুটিং করতে গিয়ে ঘুরে বেরিয়ে ছিলেন। বেশকটা দিন কাটিয়েও ছিলেন এই বাড়িতেই। আর তখনই পরিচয় হয় রাজবাড়ির সদস্য ও পরিচারিকাদের সঙ্গে। সেদিন প্রিয় অভিনেতার মৃত্যুর খবর এসে পৌঁছাতেই শোকস্তব্ধ হয়ে যায় গোটা রাজবাড়ি।

প্রয়াত অভিনেতার বেশ কয়েকটি সিনেমায় আজও সাক্ষী রয়েছে মহিষাদল রাজবাড়ি। সালটা ২০১২। সে সময় রাজীব কুমার বিশ্বাস পরিচালিত বাংলা সিনেমা ‘খোকা ৪২০’-এর শুটিং হয় রাজবাড়িতে। সিনেমায় তিনি দেবের বাবার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। টাইট সিডিউল থাকায় কলকাতায় ফিরে না গিয়ে রাজবাড়িতে থেকেই টানা কয়েক দিন শুটিং সেরেছিলেন।

পরে ২০১৩ সালে এই রাজবাড়িতেই শুটিং হয় তাপস পাল অভিনিত খিলাড়ি সিনেমারও। সে সময় গ্রামে বহু দূর-দূরান্ত থেকে অভিনেতাকে দেখতে প্রতিদিনই রাজবাড়ি চত্বরে ভিড় জমাতেন এলাকার বাসিন্দারা। অভিনেতা হওয়া সত্ত্বেও সে সময় তিনি এলাকার সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়েছিলেন নিবিড় ভাবে। আবার প্রযোজককে অনুরোধ করে এলাকার একাধিক মহিলাকে সুযোগ করে দিয়েছিলেন সিনেমায় অভিনয়ের। যার ফলে মহিষাদলবাসীর বহু মানুষের কাছে তাপস পাল আজও সুখস্মৃতির স্মৃতির সাক্ষী। স্বপ্নের ফেরিওয়ালা।

প্রায় দুই পুরুষ ধরে মহিষাদল রাজবাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে চলেছেন স্থানীয় বাসিন্দা স্বপন চক্রবর্তীর পরিবার। তাপস পালের শুটিংয়ের সময় রাজবাড়ির তরফ থেকে সর্বক্ষণের সঙ্গী ছিলেন তিনি। তাই তাপস পালকে ঘিরে স্মৃতিটা অনেক বেশি । কয়েকদিনের সঙ্গীর মৃত্যুর খবর পেয়ে শোকস্তব্ধ তিনিও জানান, “রাজ পরিবারের সঙ্গে তাপসবাবুর একটা ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল। যে কারণে উনি রাজবাড়ির দোতালায় থাকতেন। এখানে আসার আগে শুনেছিলাম উনি খুব অহংকারী। একসঙ্গে থাকার সুযোগ পেয়ে বুঝতে পারলাম উনি খুব সহজ-সরল একটা মানুষ। দীর্ঘদিন শারীরিক ভাবে অসুস্থ থাকার পর চলে যাওয়ার খবরটা পেয়ে খুব খারাপ লাগছে।”

তাপস পালের হাত ধরেই সিনেমায় প্রথম অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছিলেন মহিষাদলের বাসিন্দা পাপিয়া গুমট‍্যা। তাপস পালের মৃত্যু মেনে নিতে পারেননি তিনিও। তাঁর কথায়, “উনি যখন মহিষাদলে এসেছিলেন তখন একবার আমি ওনার সঙ্গে নাচ করার সুযোগ পেয়েছিলাম । সে সময় উনি খুব খোলামেলাভাবেই আমাদের সঙ্গে মিশে ছিলেন। ওনার মৃত্যু মন থেকে মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে।”

রাজপরিবারের সদস্য হরপ্রসাদ গর্গ জানিয়েছেন, “পারিবারিক সম্পর্ক থাকার কারণে ওনাকে আমরা দীর্ঘদিন ধরেই চিনতাম। দাদার কীর্তির মতো সিনেমা স্রষ্ঠা এভাবে চলে যাবে ভাবতেই পারছি না।”

আরও পড়ুন-জিএসটি ক্ষতিপূরণ মিলবে তো! চিন্তায় রাজ্য

spot_img

Related articles

মহিলা সংঘের ভোটে বিপুল জয় তৃণমূলের, অন্য সমিতিতে জিতেই নন্দীগ্রামে ‘তাণ্ডব’ বিজেপির!

নন্দীগ্রামের সমবায় নির্বাচনে একদিকে নাটশাল–১ মহিলা সংঘে বিপুল জয় পেল তৃণমূল, অন্যদিকে বিরুলিয়া সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির বোর্ড...

কলকাতার সর্বজনীন পুজো ডিরেক্টারি: দু-মলাটে বাংলার দুর্গোৎসবের ৪৩৪ বছরের ইতিহাস

রবিবাসরীয় সন্ধেয় গড়িয়াহাটের একটি ব্যাঙ্কয়েটে আড্ডার আবহে প্রকাশিত হল সাংবাদিক-লেখক সম্রাট চট্টোপাধ্যায়ের বই 'কলকাতার সর্বজনীন পুজো ডিরেক্টারি'। উপস্থিত...

তৃণমূল–সমাজবাদী পার্টির পথে এবার আম আদমি পার্টি! জেপিসিতে থাকছে না আপও 

সংবিধান সংশোধনী বিল খতিয়ে দেখতে গঠিত যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিল আম আদমি পার্টি।...

মোদির বিরুদ্ধে সরব! হিটলারি কোপে লাদাখের সোনম ওয়াংচু

দফা এক দাবি এক। লাদাখের জন্য একই দাবিতে আজও অনড় সমাজকর্মী সোনম ওয়াংচু (Sonam Wangchuk)। লাদাখের জমি, যা...