আত্মহত্যা রুখে বধূকে ভাত খাইয়ে, বুঝিয়ে ঘরে ফেরাল পুলিশ

সংসারের নিত্য অশান্তি। উঠতে বসতে শাশুড়ির গঞ্জনা। শ্রীরামপুরের বধূ সটান হাজির হয়েছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার ইছাপুরে। নবাবগঞ্জের ঘাটে যখন জলে ঝাঁপ দেবেন তখনই ছুটে আসেন স্থানীয়রা। পরিত্রাতা হয়ে নববধূকে স্বামীর কাছে ফিরিয়ে দেন নোয়াপাড়া থানার পুলিশ অফিসার। জল খাইয়ে, ভাই খাইয়ে, কাউন্সেলিং করিয়ে তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় স্বামীর কাছে। পুলিশের এই কর্তব্যপরায়ণতায় স্ত্রীকে ফেরত পেয়ে কৃতজ্ঞ শ্রীরামপুরের বাসিন্দা বধূর স্বামী।

আরও পড়ুন : এখনও স্মৃতিতে স্পষ্ট একরত্তি রিয়া, মাদকযোগের অভিযোগ অবিশ্বাস্য বলছে তুনতুড়ি

ন’মাস আগে মহিলার বিয়ে হয়েছিল শ্রীরামপুর। প্রথম দু’মাস সংসারের মোটামুটি সমস্ত ঠিকই ছিল। স্বামী সোহাগে স্বপ্নের দিন বুনছিলেন বধূ। তাল কাটে মাস দুয়েক পরেই।পণ নিয়ে অশান্তি শুরু করেন শাশুড়ি। তা নিয়েই নিত্য ঝগড়।স্বামী অত্যাচার না করলেও, স্ত্রীর পক্ষও নিতেন না। ফলে মনে তীব্র অভিমান জমতে শুরু করে বধূ। শাশুড়ির কথা শুনতে শুনতে একসময় ঠিক করেন, আর এ জীবন রাখবেনই না।

দুঃস্বপ্নে পরিণত হওয়া সংসার ছেড়ে এদিক-ওদিক ঘুরে চলে আসেন ইছাপুরে। নবাবগঞ্জে গঙ্গার ঘাটে বসে কাঁদছিলেন। জলে ঝাঁপ দিতে যাবেন ঠিক সেই সময় ধরে ফেলেন স্থানীয়রা। খবর পেটে ছুটে আসে পুলিশ। বধূকে বুঝিয়ে থানায় নিয়ে যায় নোয়াপাড়ার পুলিশ অফিসাররা। ডেকে পাঠান বধূর স্বামীকে। হতাশায় ভোগা বধূকে বোঝান, আত্মহত্যা মানে হেরে যাওয়া। সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে। জীবন অনেক বড়। সুন্দর। আর তাছাড়া পুলিশ তাঁর পাশেই আছে। সাহায্য করবে। বধূ জানান, তাঁর স্বামী ভালো।তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই।

এরপরই পুলিশ স্বামীর হাতে তুলে দেন বধূকে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তিও জানান, স্ত্রীর খেয়াল রাখবেন।এমনটা আর ঘটবে না।

মার্চ মাস থেকে শুরু হয়েছে লকডাউন। টানা তিন মাস লকডাউনে ঘরবন্দি জীবনে মানুষ মেজাজ হারিয়ে ফেলছেন। রিপোর্ট বলছে, বাড়িতে থাকায় বাড়ছে গার্হস্থ্য হিংসা। বহু মহিলা অত্যাচারের সম্মুখীন হচ্ছেন। এ জন্য বিভিন্ন রাজ্যের তরফে হেল্পলাইন চালু হয়েছে। রাজ্য মহিলা কমিশনও তত্পর। করোনা পরিস্থিতিতে আতঙ্ক, গার্হস্থ্য হিংসা, ঘরবন্দি জীবনে দমবন্ধ হয়ে অনেকেই আত্মহত্যা প্রবণ হয়ে উঠছেন। মনোবিদরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে যেহেতু বাড়ির বউরা, মহিলারা একেবারেই বের হতে পারছেন না তাই মনের কথা কাউকে বলতেও পারছেন না। গুমড়ে মরছেন। তার জেরেই আসছে তীব্র অবসাদ। হঠকারি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন পুরুষ থেকে মহিলারা।