প্রধানমন্ত্রী ট্যুইট করতেই হরিবংশকে সামনে রেখে বিজেপির ‘চিত্রনাট্য’ প্রকাশ্যে

কৃষি বিল নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার যে বিরোধী আন্দোলনে বেকায়দায় পড়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলন দানা বাঁধছে বুঝতে পেরে এবার ‘চাতুরী’র পথ নিল বিজেপি। সংসদে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ধরণায় বসা সাংসদদের কাছে সকালেই যান রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ। এই যাওয়া যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই, তা পরিষ্কার হয়ে যায় কিছুক্ষণের মধ্যেই। ফাঁস হয়ে যায় চিত্রনাট্য।


এদিন সকালে, নিরাপত্তারক্ষীদের নিয়ে সংসদে চলে আসেন রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ। সঙ্গে বাড়ির তৈরি চা। ডেরেক ও ব্রায়েন, দোলা সেন সহ সাংসদরা সেই চা প্রত্যাখ্যান করেন। এবার ডেপুটি চেয়ারম্যান ধরণায় বসে পড়েন। ভাবা গিয়েছিল, তিনি সহমর্মিতা প্রকাশের জন্য বসেছেন। কিন্তু সংসদ ভবন থেকে বেরিয়ে গিয়েই হরিবংশ জানান, সাংসদদের ‘অভব্য আচরণের’ বিরুদ্ধেই তিনি কিছুক্ষণ ধরণায় বসেছিলেন। অদ্ভুত যুক্তি! প্রতিবাদ জানাতে হলে সংসদের বহু জায়গা রয়েছে যেখানে বসতে পারতেন। কিন্তু সাসপেন্ড হওয়া সাংসদদের ধরণায় কেন?

হাস্যাস্পদ এই ঘটনার কারণ বোঝা যায় কিছুক্ষণের মধ্যেই। প্রধানমন্ত্রী ট্যুইট করতেই ঘটনা চলে আসে প্রকাশ্যে। প্রধানমন্ত্রী লিখছেন, ‘গণতন্ত্রের পীঠস্থানে ডেপুটি চেয়ারম্যান অপমানিত হন। যাঁরা অপমান করেন, তাঁরাই ধরণায় বসেছেন। অথচ ডেপুটি চেয়ারম্যান তাঁদের ধরণা মঞ্চে গিয়ে সৌজন্য দেখান। বাড়ি থেকে চা তৈরি করে নিয়ে যান। এটা হরিবংশজির উদারতা যে তিনি গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা রেখে এই সৌজন্য দেখিয়েছেন। এই কারণে আমি তাঁকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। হরিবংশ বিহারের মানুষ আর বিহারের মানুষ বহু আগে থেকেই দেশকে গণতন্ত্রের শিক্ষা দিয়েছেন। হরিবংশজি সেই ধারাকেই বয়ে নিয়ে চলেছেন।’

বিরোধীরা বলছেন, আসলে এটি প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক চাল। তাঁর মুখোশ খুলে গিয়েছে। কৃষি বিল নিয়ে সারা দেশের কাছে বিজেপি এখন ভিলেনে পরিণত হয়েছে। বিজেপি কোণঠাসা। সাসপেন্ড সাংসদদের আন্দোলন চলছে। প্রচারের সব সার্চলাইট তাদের ওপর। প্রচারের সেই আলো তাদের উপর থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সকালের এই ‘নাটকটি’ তৈরি করা হয়। কিন্তু দেশের মানুষ এই ‘নাটকে’ ভুলবেন না। বিজেপির এই চিত্রনাট্য ফাঁস হয়ে গিয়েছে। আন্দোলন আরও জোরদার ও যৌথ হবে।