Wednesday, November 5, 2025

মা গঙ্গার তীরে দাঁড়িয়ে বলছি…কৃষক বিক্ষোভ নিয়ে বার্তা প্রধানমন্ত্রীর

Date:

Share post:

“মা গঙ্গার তীরে দাঁড়িয়ে বলছি কৃষকদের আমরা এতটুকু ঠকাতে চাই না। যুগ যুগ ধরে তাঁদের যেভাবে শোষণ করা হয়েছে তাতে তাঁদের মাথায় পুরনো কিছু ধারণা গেঁথে আছে। কিন্তু আমি তাঁদের আশ্বস্ত করে বলতে চাই আমরা কৃষকদের আরও বেশি আর্থিক সুবিধা দিতে কাজ করছি। আমাদের উদ্দেশ্য গঙ্গার জলের মতই পবিত্র। কৃষকদের স্বাধীনতা কেউ কেড়ে নেবে না। নতুন আইন কৃষকদের স্বার্থ পুরোপুরি রক্ষা করবে। আগে যেমন কৃষি মান্ডি ছিল ভবিষ্যতেও থাকবে। ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যও আগের মতই থাকছে। কেউ যদি মনে করেন আগের ব্যবস্থায় থাকবেন তিনি তা থাকতে পারেন। কৃষকদের নিজেদেরই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকছে।” সোমবার নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র বারাণসীতে দাঁড়িয়ে কৃষকদের ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টায় এই বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কেন্দ্রীয় সরকার ‘কৃষকবন্ধু’ ভাবমূর্তি তৈরির চেষ্টা চালালেও মোদির এই বার্তার পরেও আইন বদলের দাবিতে অনড় কৃষকরা।

সোমবার পঞ্চম দিনে সকাল থেকেই বিক্ষোভ অব্যাহত। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন প্রতিবাদী কৃষকরা। বিকল্প স্থানে জমায়েত ও আলোচনার প্রস্তাব উড়িয়ে দিয়ে কৃষক সংগঠনগুলির পক্ষে বলা হয়েছে, ‘দিল্লি চলো’ অভিযান জারি থাকবে। নতুন কৃষি আইন পুরোপুরি প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন চলতেই থাকবে। দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা হাজার হাজার কৃষক রাজধানী সীমান্তে লাগাতার অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন। কৃষকদের অনড় মনোভাব বুঝে বিকল্প সমাধানসূত্রের খোঁজেই রবিবার মধ্যরাতে বৈঠকে বসেছিলেন কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার বাড়িতে এই বৈঠক হয়। বৈঠকে যোগ দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে বুরারি গ্রাউন্ডে কৃষকদের সঙ্গে কৃষিমন্ত্রীর আলোচনার জন্য বসতে বলে যে প্রস্তাব পাঠানো হয়, তা নাকচ করা হয়েছে। এই মুহূর্তে আলাপ আলোচনার পথে যেতে রাজি নন কৃষকরা। ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের মুখপাত্র রাকেশ টিকাইত জানান, রামলীলা ময়দানেই বিক্ষোভ দেখানো হবে। কেন্দ্রের ঠিক করে দেওয়া এলাকায় তাঁরা যাবেন না। কেন্দ্রের তরফ থেকে যে সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, তাও নাকচ করে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।

এই মুহূর্তে একের পর এক রাজ্য থেকে রাজধানীর দিকে হাজার হাজার কৃষকের যাত্রা অব্যাহত। উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, পাঞ্জাব এবং হরিয়ানার সীমানা পার করে দিল্লি ঘেরাও করতে মরিয়া কৃষকরা। মোদি সরকারকে টানা অবরোধে ঘিরে ফেলতে অন্তত ছয় মাসের খাবার সঙ্গে নিয়ে এসেছেন বলে জানিয়েছেন বিদ্রোহী কৃষকরা। পরিস্থিতির গুরুত্ব আঁচ করে কেন্দ্রীয় সরকার শর্তসাপেক্ষে আলোচনার বার্তা দিলেও কৃষকরা এখনও তা মানতে নারাজ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, সরকার আলোচনা করতে তৈরি। আগামী ৩ ডিসেম্বর বৈঠকের দিন ধার্য হয়েছে। এই বার্তার পর বিক্ষোভের তীব্রতা বেড়ে গিয়েছে। কংগ্রেস, সিপিএম, সিপিআই সহ বিভিন্ন বাম দল ও একাধিক বিরোধী দল কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন করেছে। এনডিএ ত্যাগের পর পাঞ্জাবের আকালি দল প্রত্যক্ষভাবে কৃষক আন্দোলনে অংশ নিয়ে কৃষি আইন বাতিল করার দাবি তুলেছে।

 

spot_img

Related articles

বিলাসপুরের ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত বেড়ে ৮: মৃত চালকের উপরই দায় চাপানোর চেষ্টা!

বরাবর যেভাবে ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত ট্রেনের চালকের উপর দায় চাপিয়ে অব্যবস্থা ও পরিকাঠামোর অভাবকে ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করে...

ঠাকুরবাড়িতে প্রকাশ্যে ঘরোয়া কোন্দল! শান্তনুর সঙ্গ ছাড়লেন দাদা সুব্রত 

মতুয়া সংগঠন ঘিরে দীর্ঘদিনের অন্দরের টানাপোড়েন এবার প্রকাশ্যে। পারিবারিক অশান্তি এবং সংগঠনের ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে ঠাকুরবাড়িতে দেখা দিল...

বিরোধীদের কুৎসায় কালি: রাজ্যে SIR প্রক্রিয়ার প্রথমদিন শান্তিপূর্ণ, তথ্য পেশ কমিশনের

নির্বাচন কমিশনের তরফে বিএলও। রাজনৈতিক দলের তরফে বিএলএ। রাজ্যের নাগরিক ভোটার। এই তিনের সমন্বয়ে মঙ্গলবার থেকে গোটা রাজ্যে...

খুব তাড়াতাড়ি আসবেন কলকাতায়, মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছাবার্তার উত্তরে জানান শাহরুখ

রবিবার শাহরুখ খানের ৬০তম জন্মদিন ছিল। এদিন শাহরুখকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই শুভেচ্ছার এবার উত্তর...