Tuesday, May 20, 2025

গুরুংয়ের শিবির বদলানোর কারণ খুঁজছে বিজেপিও, কিশোর সাহার কলম

Date:

Share post:

কিশোর সাহা

বিমল গুরুং বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতিভঙ্গের অভিযোগ তুলে তৃণমূলে সামিল হয়েছেন। ঘটা করে প্রেস কনফারেন্স করে বিমল গুরুং সেটা বলেছেন। কিন্তু গুরুং ঘনিষ্ঠদের একাংশের অভিযোগ, যতদিন দার্জিলিঙের সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া ছিলেন, ততদিন তিনি নিয়ম করে দুবেলা গুরুংয়ের খবরাখবর নিতেন। হালে গুরুংরা অনেক সময়ে ফোন করেও দুয়েকজন নেতার কাছ থেকে সাড়া পাননি বলে তাঁদের অভিযোগ। এমনকী, কথা বলার জন্যও গুরুংদের দিনের পর দিন অপেক্ষা করিয়েছেন এক জনপ্রতিনিধি। গুরুত্ব না পেয়েই গুরুংরা তলে তলে তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ করে শিবির বদলেছেন বলে সূত্রটি দাবি করেছে।

মোর্চার সূত্রটি ক্ষোভের সঙ্গে জানিয়েছে, ২০১৯ সালের আগে অবধি একজনের সঙ্গে কথা বলেই হত। কিন্তু তার পরে দার্জিলিঙের কোনও জনপ্রতিনিধিকে বললে তিনি অ্যাপয়নমেন্ট ছাড়া কথা বলতে অভ্যস্ত নন বলে জানাতেন। এই দার্জিলিং, কলকাতা, দিল্লি ঠেলাঠেলি কতদিন পোষায়? সেই প্রশ্নে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন গুরুংয়ের একান্ত অনুগামী এক মোর্চা নেতা। সেই তুলনায় দিদি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) চটজলদি সিদ্ধান্ত নেন ও তাতে কেউ আপত্তি করার প্রশ্ন নেই বলে মোর্চার নেতাটির উপলব্ধি।

ঘটনাচক্রে, গুরুং শিবিরের ক্ষোভ-অভিমানের বিষয়টি বিজেপির দিল্লির সদর দফতর, কলকাতার রাজ্য নেতৃত্ব ও দার্জিলিং জেলা কমিটির অনেকেই শুনেছেন। তা নিয়ে একান্ত আলাপাচারিতায় অনেকেই এক জনপ্রতিনিধির ভূমিকা ও আচরণ নিয়ে ক্ষোভ ও বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। এমনকী, গুরুংয়ের শিবির বদলানোর পিছনে তাঁর কতটা ভূমিকা রয়েছে তা খতিয়ে দেখার দাবিও বিজেপির অন্দরে উঠেছে।
বর্তমানে দার্জিলিঙের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি বলতে রাজু বিস্ত।

দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু যে গুরুংয়ের আচমকা শিবির বদলানোয় কিছুটা ভেঙে পড়েছেন তা তাঁর সাম্প্রতিক সাংবাদিক বৈঠকে দার্জিলিঙের প্রসঙ্গ উঠলেই বোঝা যায়।

সূত্রের খবর, দলের একাংশ যাঁরা গুরুংদের গত সাড়ে তিন বছরে কাছ থেকে দেখেছেন, তাঁরা রাজু বিস্তের ভূমিকা নিয়েও একান্ত আলোচনা দু-চার কথা বলছেন। যদিও রাজু বিস্ত দাবি করেছেন, গুরুং শিবির বদলালেও তাঁর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। গুরুং শিবির বদলানোর পরে দিল্লি, কলকাতা হয়ে শিলিগুড়ি ফেরার পরে রাজু বিস্ত বলেছিলেন, বিমলজির সঙ্গে এখনও যোগাযোগ রয়েছে।

যদিও গুরুং শিবিরের কয়েকজন নেতা সাফ জানিয়ে দেন, তাঁদের নেতা এখন বিজেপির কারও সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে চান না। কারণ, প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে বিজেপির ছাতার তলায় থেকেও পাহাড়ে ওঠার রাস্তা মসৃণ করতে পারেননি তিনি। গুরুং অনুগামী জানান, পাহাড়ের মানুষ সমতলের তুলনায় অতিরিক্ত কষ্টসহিষ্ণু হলেও অবজ্ঞা, অবহেলা একেবারেই না-পসন্দ তাঁদের। তাই তাঁদের নেতা গুরুংয়ের ফোন পেয়েও কেউ সাড়া দেননি সেটা ভাবতেই পারেন না বলে ওই অনুগামী জানিয়েছেন।

অবশ্য বিজেপির দার্জিলিং জেলা কমিটির এক নেতা জানান, যা পরিস্থিতি হয়েছিল তাতে গুরুংকে তৃণমূলে যেতেই হতো। না হলে গুরুং মামলার জাল কেটে পাহাড়ে ফেরার রাস্তা খুঁজে পেতেন না। তা হলে এতদিন গুরুং কেন অন্তরালে বসে বিজেপির হয়ে লাগাতার ভিডিও ফুটেজ মারফৎ প্রচার করেছেন এবং তখন তাঁকে কী বলে সাহস যোগানো হয়েছিল! বিজেপির ওই নেতা জানান, গুরুং রাজনৈতিক কারণে তৃণমূল গিয়েছেন বলে নিজে দাবি করেছেন। তা ছাড়া বিজেপির কারও ভূমিকায় গুরুংয়ের ক্ষোভ-অভিমান বেড়েছে কি না সেটা প্রয়োজনে রাজ্য ও দিল্লির নেতৃত্ব খতিয়ে দেখবেন বলে ওই নেতা জানিয়েছেন।

বিজেপির একটি সূত্র দাবি করেছে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই দলীয় পর্যায়ে খোঁজখবর শুরু হয়েছে এবং একাধিক জনপ্রতিনিধিকে সতর্কও করেছেন বিজেপির শীর্ষ নেতারা।

আরও পড়ুন- কেউ কেউ আমার মৃত্যু কামনা করছে! কাকে লক্ষ্য করে কেন বললেন তৃণমূলনেত্রী?

 

spot_img

Related articles

সৌভিক, জ্যোতির্ময়ীদের হাতে উদ্বোধন ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবের স্পোর্টস মিউজিয়াম

অভিনব উদ্যোগ ক্যালকাটা স্পোর্টস জার্নালিস্ট ক্লাবের(CSJC)। শহরের বুকে নয়, এবার জেলাতে স্পোর্টস মিউজিয়াম(Sports Museum)। ক্যালকাটা স্পোর্টস জার্নালিস্ট ক্লাবের...

এফডি-তে সুদের হার ফের কমাল এসবিআই!  ক্ষতির মুখে আমানতকারীরা

ফিক্সড ডিপোজিটে (FD) বিনিয়োগকারীদের জন্য বড় ধাক্কা। ফের একবার সুদের হার কমাল স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (SBI)। সর্বশেষ...

সরকারি প্রকল্পে পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে পড়ে থাকা টাকা ফেরত নেওয়ার উদ্যোগ রাজ্যের 

পাঁচ বছর বা তার বেশি সময় ধরে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের খাতে পড়ে থাকা অব্যবহৃত অর্থ ফেরত নেওয়ার প্রক্রিয়া...

এভারেস্ট জয় মনোজ ভার্মার দেহরক্ষী কনস্টেবল লক্ষ্মীকান্তের! শুভেচ্ছা মুখ্যমন্ত্রীর

পর্বত আরোহণের নতুন দৃষ্টান্ত গড়লেন পশ্চিমবঙ্গ সশস্ত্র পুলিশের তৃতীয় ব্যাটালিয়নের কনস্টেবল লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডল (Lakhsmikanta Mandol)। কলকাতার পুলিশ কমিশনার...