মতুয়ারা এদেশের নাগরিক, কোনও প্রমাণপত্রের প্রয়োজন নেই: মুখ্যমন্ত্রী

ফের মতুয়া সম্প্রদায়ের পাশে থাকার বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার উত্তর 24 পরগনার গোপালনগরের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “মতুয়ারা সকলেই এদেশের নাগরিক। কারও কোনও প্রমাণপত্রের প্রয়োজন নেই”। জন্মগতভাবে বাড়িতে একজনের জাতিগত শংসাপত্র থাকলেই সেটা প্রমাণ।

ঠাকুর পরিবারের আগুন ধরিয়ে গত লোকসভা নির্বাচনে বনগাঁ ভাষণটি ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক ফেরানোই লক্ষ্য শাসকদলের।

এদিন, বনগাঁর অন্তর্গত গোপালনগরের সভা থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াইয়ের ডাক দেন তৃণমূল নেত্রী। এই সরকারের আমলে রাজ্যে মতুয়াদের জন্য নেওয়া উন্নয়নমূলক কাজের খতিয়ান দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “বড়মার চিকিৎসা আমি নিজে করিয়েছি। এটা আমার পুরনো জায়গা”। হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মদিনে রাজ্যে সরকারি ছুটির ঘোষণা করা হবে বলেও জানান মমতা।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাউরি সম্প্রদায় ও মতুয়াদের উন্নয়নে বোর্ড তৈরি করেছে বর্তমান রাজ্য সরকার। ১০ কোটি টাকাও দিয়ে দিয়েছে। হরিচাঁদ গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের পাঠ্যপুস্তকে হরিচাঁদ ঠাকুরের জীবনী অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলেও জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সিএএ নিয়ে কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ করে তৃণমূলনেত্রী বলেন, সিএএ করে প্রতারণার চেষ্টা করা হচ্ছে। ফের তিনি জানিয়ে দেন, বাংলায় এনআরসি-এনপিআর হবে না। “রাজ্যকে গুজরাত বানাতে দেব না।” রাজ্য সরকারের উদ্বাস্তু কলোনিগুলিকে স্বীকৃতি দিয়েছি। অন্য সব কলোনিগুলিকেও স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

সভা থেকে একসঙ্গে সিপিআইএম এবং বিজেপিকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, “সিপিআইএমের হার্মাদরাই এখন বিজেপির ওস্তাদ হয়ে গিয়েছে। বাইরে থেকে আরএসএস-এর গুন্ডা নিয়ে আসছে”।

তৃণমূলনেত্রীর বলেন, বাইরে মানুষরা এসে হিন্দুধর্ম শেখাচ্ছে। আমরা স্বামীজীর থেকে হিন্দুধর্ম শিখব, বহিরাগতদের থেকে নয়।

মতুয়াদের ঠাকুরবাড়ির এক সদস্য মমতাবালা তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ, অপরজন শান্তুনু ঠাকুর বিজেপির বর্তমান সাংসদ। এই প্রেক্ষিতেই নাম না করে মমতা বলেন, “বিভেদের রাজনীতি করছে। মতুয়াদের ভেঙে দিয়েছে।হিন্দু-মুসলমান ভাগ করছে”।

কৃষক আন্দোলন নিয়েও এদিন ফের কেন্দ্রের আইনের বিরুদ্ধে সুর চড়ান মমতা। বলেন, “গায়ের জোরে কৃষক বিরোধী তিনটি আইন করেছে। কৃষকরা যা তৈরি করে জোতদার, আড়তদাররা নিয়ে নেবে”।

রাজ্যের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প ও দুয়ারে সরকার কর্মসূচির বিষয়েও বোঝান মুখ্যমন্ত্রী। নিউটাউনে আইটি সেক্টরে দুশো একরে সিলিকন ভ্যালি তৈরি হচ্ছে বলে জানান তিনি। বলেন, রাজ্যের প্রতি বঞ্চনা আর লাঞ্ছনা চলছে। আট বছরে বাংলা যা করেছে তা উদাহরণযোগ্য।

 

 

Previous articleগেহলট-পাইলটের দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে রাজস্থান পঞ্চায়েত নির্বাচনে বড় জয় বিজেপির
Next articleনবদম্পতির আবেদনে ব্যাপক সাড়া, উপহারের টাকা কৃষকদের দিলেন অতিথিরা