ঠিক যেন লড়াকুনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ছায়া। রবিবার বিকেল সোয়া তিনটে থেকে সোয়া চারটে। ঠিক এক ঘন্টা। ডায়মন্ড হারবারের (Diamond harbour) কেল্লার মাঠে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) এলেন, স্লোগান দিলেন, স্লোগান দেওয়ালেন, জবাব দিলেন, চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন, আশ্বাস দিলেন, সাহস জোগালেন। নেতৃত্ব দিয়ে বোঝালেন অভিযোগের মুখোমুখি হতে তরুণ সাংসদ ভয় পান না। চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বুঝিয়ে দিলেন লড়াইটা হবে মাঠেই। আর তার জন্য প্রস্তুত।
কেল্লার মাঠের (kella play ground) সভা কেন চোখ টানল? টানল তার কারণ, কানায় কানায় ভর্তি কর্মী-সমর্থকদের ভিড়। পথ চলতি মানুষের থেমে গিয়ে সভা শুনতে ঢুকে পড়া। উপচে পড়ল মাঠ। এবং যে যে অভিযোগ তুলে গিয়েছিলেন অমিত শাহ তাঁর ডায়মণ্ড হারবারের সভা থেকে, তার প্রত্যেকটি প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। শুধু তাই নয় এই প্রথম নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকে
মেরুদণ্ড বিক্রি করা নেতা বলতেও পিছপা হননি। ভাষা, শব্দচয়ন আর মানুষকে ‘কনভিন্স’ করার প্রশ্নে তিনি চোখ টানলেন সকলের।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে সভার শুরুতেই দলের নেতাদের সম্মান জানান, সভা শেষে নিজেই স্লোগান লিড করেন, অভিষেক এদিন ঠিক যেন সেইরকম। চোখ টেনেছেন দলের বর্ষীয়ান, অভিজ্ঞ নেতাদের।
অভিষেকের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ এদিন ছিল দেখার মতো। সভায় বক্তব্য রেখেছেন, উচ্চগ্রামে নয়, ধীর-স্থির। ৩-৪বার স্বর চড়িয়েছেন। আবার ফিরে এসেছেন আগের স্কেলে। নিয়ন্ত্রিত। লক্ষ্য করলে মনে হবে পরিণত তরুণ নেতা, রেডি টু লিড। যুক্তির পিঠে যুক্তি, অভিযোগের পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন, অথচ নেই কোনও উত্তেজনা বা চোখে মুখে টেনশন।
২৪ ঘন্টা আগে শুভেন্দু বলেছিলেন এই দলটার সঙ্গে ২১ বছর ছিলাম, ভাবতে ঘেন্না লাগে। আর পাল্টা অভিষেক বললেন, বাড়িতে তো তৃণমূল সাংসদরা রয়েছেন। তাদের সঙ্গে থাকতে ঘেন্না করছে না! অকাট্য যুক্তি। জবাব দেওয়া মুশকিল।
আরও পড়ুন : First Ever: ও উপসর্গহীন বেইমান, শুভেন্দুকে ধুয়ে দিয়ে বললেন অভিষেক
একদিকে রাজ্যের পজিটিভ দিক, অন্যদিকে কেন্দ্রের জনবিরোধী নীতির কথা এই হাই ভল্টেজ সভাতে তুলে ধরেছেন সুচারু ভঙ্গিতে। এর মাঝেই কথা বলেছেন দলীয় নেতাদের সঙ্গে, খবর নিয়েছেন। মানুষকে বেশিক্ষণ আটকেও রাখেননি। বিধানসভা ভোটের আগে অভিষেক বুঝিয়ে দিলেন, তিনি এবার ইটের জবাব দেবেন পাটকেলেই। তাতে যে অনেকেরই বেশ লাগবে, ছরে যাবে, রক্তাক্ত হতে হবে, তা বুঝিয়ে দিলেন।