দলবদলের পর এক সভায় বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী অন্য প্রসঙ্গে বলেছিলেন, “চাপে পড়লে বেড়ালও গাছে ওঠে”৷

মাঝে কিছুদিন ‘ছাড়াছাড়ি’ অবস্থায় দু’জন ছিলেন৷ এখন ফের একইসঙ্গে ‘পদ্মাসন’-এ৷ এখন শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক সতীর্থ শোভন চট্টোপাধ্যায় ৷ আর শুভেন্দুর ওই মন্তব্য একেবারে ‘ফিট’ হয়ে গেলো শোভন সম্পর্কে৷
এতদিন জলে নামলেও চুল ভেজাচ্ছিলেন না শোভন৷ বিজেপির পক্ষে কোনও কথাই বলছিলেন না তিনি৷ বিজেপি স্কুলে ভর্তি হলেও ‘ক্লাস’ করছিলেন না৷ উল্টে বিজেপির মুখে বারবার কালি মাখাচ্ছিলেন শোভন এবং তাঁর অভিন্নহৃদয় বৈশাখী দেবী ৷

আর ‘সহ্য’ করলো না বঙ্গ-বিজেপি৷ স্পষ্ট জানালো, এবার নিজেদের ‘এলেম’ প্রমান করতে হবে শোভন- বৈশাখীকেই৷ দল হিসাবে বিজেপি আর তাঁদের ‘লঞ্চ’ করতে অপারগ৷


বিজেপির পতাকা নিয়ে সোমবার কলকাতায় পদযাত্রায় সামিল হওয়ার কথা কলকাতার প্রাক্তণ মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের৷ গত সপ্তাহের অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে এ বার শুধু সতর্ক থাকাই নয়, ওই কর্মসূচি থেকে নিজেদের সরিয়ে রাখছেন দলের একাধিক রাজ্য নেতা। পদযাত্রা সফল করার দায় নিতে হবে শোভন-বৈশাখীকে৷

এতদিন ধরে দুজনে বিজেপিকে ল্যাজে খেলানোর পর এই শর্ত সামনে আসায় ‘বেড়াল গাছে উঠে পড়েছে’৷
ভাবনার বাইরে থাকা এমন চাপে পড়েই রবিবার রাতে শেষপর্যন্ত বিজেপির সুরে সুর মেলাতে বাধ্য হলেন শোভন৷ হেস্টিংসে বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকের পর সংবাদমাধ্যমের সামনে নব্য বিজেপি নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “তৃণমূলের আত্মসমালোচনা করা উচিত। তৃণমূলে দমবন্ধ পরিস্থিতি। তৃণমূলের পা ঢাকা দিতে গিয়ে মাথা বেরিয়ে পড়ছে। যাঁরা সংগ্রাম করে তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সেই মুকুল রায়রা থাকতে পারলেন না তৃণমূলে”।

আরও পড়ুন- আইসিসিতে বোর্ডের প্রতিনিধি জয় শাহ, জানালেন এক বোর্ড কর্তা

আরও অনেক কথা এবার তাঁর মুখ থেকে বেরিয়ে এসেছে৷ বলেছেন,

• সবাইকে নিয়েই চলতে হবে। হাতে হাত ধরে কাজ করতে হবে।
•নাড্ডার কনভয়ে হামলা অভিপ্রেত নয়।

• যে ডালে বসছে, সেই ডাল কাটছে তৃণমূল৷

• কালকের মিছিলে থাকবো৷ আমার সঙ্গে বৈশাখীও থাকবে।

• ‘বহিরাগত’ বলতে কাদের বোঝায়? বারবার বহিরাগত বলে আক্রমণ কেন?’ কে ঠিক করছে এই বহিরাগত সংজ্ঞা?

সম্ভবত শোভনবাবু বুঝতে পেরেছেন, এবার আর বিষয়টি এত সহজ নেই৷ এবার বিজেপি তাঁদের দু’জনকে বিরাট পরীক্ষার মুখে ফেলেছে৷ এই পদযাত্রার সাফল্য- ব্যর্থতার মধ্যেই দুই বন্ধুর রাজনৈতিক অস্তিত্ব এবং ওজন নির্ভর করছে৷ আর সেটা বুঝেই এবার ‘অতি-বিজেপি’ হয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্বল কিছু তোপ দেগেছেন৷ তিনিও জানেন, সব কিছুই নির্ভর করছে সোমবারের পদযাত্রা সাফল্য অথবা ব্যর্থতার উপর৷

তবে জানা গিয়েছে, শোভন ‘ট্রাম্প-কার্ড’ বানাতে চলেছেন জনাতিনেক তৃণমূল কাউন্সিলর তথা কো-অর্ডিনেটরকে৷ শোনা যাচ্ছে, সোমবারই কলকাতা তৃণমূলে ভাঙ্গন ধরাতে চলেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ৷
আরও পড়ুন- ‘স্বাস্থ্যসাথী’ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ বিজেপি নেতা, অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির