Saturday, August 23, 2025

বেসরকারি স্কুলগুলিতে এক শ্রেণির অভিভাবকদের চক্রান্ত, প্ররোচনা, রাজ্যের কড়া পদক্ষেপের দাবি

Date:

Share post:

এক শ্রেণির অবাঙালি অভিভাবক
রাজ্যের বেসরকারি শিক্ষাক্ষেত্রে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছেন বলে অভিযোগ উঠছে নানা মহল থেকে। এই শ্রেণির অভিভাবকদের কখনও সখনও রাস্তায় নামতেও দেখা যাচ্ছে। এবং বিস্ময়ের বিষয় হলো, এই মিছিল থেকে মাঝে মধ্যেই ‘জয়শ্রীরাম’ আওয়াজও উঠছে। এইসব মিছিল বা বিক্ষোভের কারণ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। আবার এর পিছনে ‘ইন্ধন’-এর অভিযোগ উঠছে, যা মোটেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

কেন এই বিক্ষোভ? এক শ্রেণির অভিভাবকদের বক্তব্য, কোভিডের কারণে ক্লাস হচ্ছে না, তাই বেতনও দেব না। অথচ রাজ্যের অধিকাংশ বেসরকারি স্কুলে অন লাইন ক্লাস আজও চলছে। অথচ এরা একবারও ভাবছেন না, তাঁদের বাড়ির পাশের মেয়েটি বা ছেলেটি সেই স্কুলে শিক্ষকতা করলে বা কর্মী হিসাবে কাজ করলে তাঁদের বেতন কোথা থেকে আসবে? লকডাউনেও তো ক্লাস নিতে হচ্ছে। অন লাইন ক্লাসে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের স্কুলে হাজির তো হতে হচ্ছে।

আর এখান থেকেই শুরু হয়েছে দ্বন্দ্ব। এক শ্রেণির অভিভাবক করোনার দোহাই দিয়ে কোনও বেতন না দেওয়ার দাবি তুলে আদালতে যান। কোর্ট যদিও রায় দিতে গিয়ে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেয়, মূল বেতন দিতে হবে। উদাহরণ দিয়ে বলা হয়, বাসের তেলের খরচ না হয় অভিভাবকরা দিলেন না, কিন্তু বাসের চালক ও খালাসির বেতন তো দিতে হবেই! কোনও ফিজ না দিলে সেই অর্থ আসবে কোথা থেকে?

এই জটিল পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষর প্রায় সকলেই চাইছে স্কুল খুলে যাক। কিন্তু এই স্কুল খোলার বিষয়টি তাদের হাতে নেই। রাজ্য সরকার এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত না নিলে কোনও কিছু করারও থাকছে না। স্কুল বন্ধ থাকলে এক শ্রেণির অভিভাবকদের প্ররোচনাও চোখের সামনে দেখতে হচ্ছে। এই অভিভাবকরা কোথাও বিক্ষোভ করছেন, কোথাও স্কুল কর্তৃপক্ষের বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছেন। মোট কথা মুল উদ্দেশ্য হলো অশান্তি তৈরি করে কর্তৃপক্ষকে চাপে রাখা আর ফিজ না দিয়ে স্কুলের স্থিতিশীলতা নষ্ট করা। এই প্ররোচনা দেওয়ার কাজ সমানে চলছে। একটি সূত্রের খবর, পরিকল্পিতভাবেই এই প্ররোচনার কাজ চলছে। উদ্দেশ্য বেসরকারি স্কুলগুলির স্থিতিশীলতা নষ্ট করে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করা। এই স্কুল কর্তারা তাই এখন মনেপ্রাণে চাইছেন, স্কুল খোলার নির্দেশ দিক রাজ্য সরকার। একদিকে স্কুল মালিকদের শিক্ষক-অশিক্ষকদের বেতন দিতে হচ্ছে। পরিকাঠামোর খরচ চালাতে হচ্ছে। আবার অন্যদিকে এক শ্রেণির অভিভাবক, বিশেষত অবাঙালি কিছু অভিভাবকদের অযৌক্তিক, অন্যায় হুজ্জতি সহ্য করতে হচ্ছে। এরা কোর্টের নির্দেশকেও বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছেন। বেতন দেব না বলে আন্দোলন করছেন, মালিকের বাড়িতে মিছিল করছেন, বিশৃঙ্খলতার দিকে নিয়ে যাওয়ার টার্গেট নিয়েছেন। বিষয়টা আর্থিক বলে ভুল বুঝিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করাটা সহজ হচ্ছে। দু’ একটি জমায়েতে শোনা যাচ্ছে জয়শ্রীরাম স্লোগানও। প্রশ্ন হচ্ছে, অভিভাবকদের মিছিলে কী করে জয়শ্রীরাম স্লোগান ওঠে। বহু স্কুল মালিকের বক্তব্য, কুনকি হাতির মতো ৫-৬ জনকে জমায়েতে ঢুকিয়ে দিয়ে আসলে অশান্তি তৈরির চেষ্টাই করা হচ্ছে প্রতিটি ক্ষেত্রে।

তাই বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষের আবেদন, এই ন যযৌ, ন তস্থৌ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে রাজ্য স্কুল খোলার ব্যবস্থা করুক। এবং যতদিন স্কুল না খোলে ততদিন কোর্টের নির্দেশ মেনে যেন অভিভাবকরা বেতন দেন। নইলে স্কুলগুলি অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়বে। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারকে স্পষ্ট, সদর্থক ও কড়া পদক্ষেপ করতে হবে। নইলে রাজ্যে ভয়ঙ্কর প্ররোচনায় শিক্ষা ব্যবস্থাই অস্থির অবস্থার মধ্যে পড়বে।

spot_img

Related articles

বাংলা দখলে প্রধানমন্ত্রীর ‘হতাশার আর্তনাদ’! ভিডিও দেখিয়ে তোপ তৃণমূলের

বাংলার মানুষকে দিনের পর দিন বঞ্চিত রেখে বাঙালির কাছেই ভোট ভিক্ষা! বাঙালিকে একের পর এক রাজ্যে হেনস্থা করে...

সঠিক পরিকল্পনাই ডায়মন্ডহারবারের সাফল্যের চাবিকাঠি, মনে করছেন আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়

মাত্র তিন বছরের ক্লাব। কিন্তু কী অসাধারণ সাফল্য। কলকাতা লিগ, আইলিগ থ্রি থেকে আইলিগ টু জিতে এবার আইলিগের...

অসংগঠিত শ্রমিক-ক্ষেত্রে পথ দেখাচ্ছে বাংলা: সাহায্য পেলেন ৭২০ শ্রমিক

একের পর এক নতুন প্রকল্প, অসংগঠিত শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে লাগাতার আলোচনা, তাঁদের পরিবারের প্রতি নজর রাখার ব্যাপারে তৎপর...

প্রাপ্য চায় বাংলা, উপহার না: মোদিকে জবাব তৃণমূলের

বাংলার মানুষ উপহার চায় না, প্রাপ্য চায়। উপহার দিয়ে বাংলার মানুষকে অপমান করবেন না। বাংলায় বরাদ্দ নিয়ে শুক্রবার...