Sunday, August 24, 2025

ক্যান্সারে আক্রান্ত ছেলে, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের আশায় পরিযায়ী শ্রমিক

Date:

Share post:

সংসার চালাতে পরিবার নিয়ে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিয়েছিলেন মালদহের (Maldah) হরিশ্চন্দ্রপুরের কুশিদা এলাকার বাসিন্দা মামুন। সেখানে দিনমজুরি করে সংসার চালাতেন। কিন্তু আচমকাই নেমে আসে বিপর্যয়। অসুস্থ বড়ো ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে ধরা পড়ল ক্যান্সার (Cancer)। কিন্তু সেই চিকিৎসার খরচ চালানোর মতো সামর্থ্য নেই পরিবারের। এখন ভরসা স্বাস্থ্যসাথী কার্ড (Helth Card)। সরকারের দিকে মুখ চেয়ে ক্যান্সার আক্রান্ত ছেলেকে নিয়ে ফিরে এসেছেন রাজ্যে (State)।

কয়েক বছর ধরে রাজস্থানে দিনমজুরি করে কোনোরকমে দিন গুজরান করেন মামুন (Mamun)। সেখানে ক্যান্সারের মতো মারণ রোগের চিকিৎসা করার সামর্থ্য নেই তাঁর। ভিন রাজ্যে বসেই শুনলেন নিজের এলাকায় প্রশাসনের তরফে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দেওয়া হচ্ছে। সেই কার্ড থাকলে নিখরচায় ছেলের চিকিৎসা করাতে পারবেন। তাই দেরি না করে ভিন রাজ্য থেকে হরিশ্চন্দ্রপুরের কুশিদা গ্রামের বাড়িতে ফিরছেন ক্যান্সারাক্রান্ত ছেলেকে নিয়ে। বাড়িতে এসেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য আবেদনও করেছেন মামুন এর স্ত্রী নাসিমা খাতুনের (Nasima Khatun) নামে।

কপর্দকহীন ওই পরিযায়ী পরিবারের কাছে একমাত্র ভরসা স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড। কবে সেই কার্ড মিলবে অসুস্থ ছেলেকে বুকে আঁকড়ে এখন সেই অপেক্ষায় দিন গুণছেন নাসিমা।

কুশিদা মুসলিমপাড়ার বাসিন্দা মামুনের দুই ছেলে দুই মেয়ে। সংসার চালাতে পাঁচ বছর ধরে সপরিবারে আজমেঢ়ে থাকেন। লকডাউনেও সেখানে ছিলেন। কুশিদায় বাড়ি বলতে ভাঙাচোরা মাটির বাড়ি। আবেদন করেও আবাস যোজনায় ঘর মেলেনি বলেও অভিযোগ। সম্প্রতি বড় ছেলে নাসিরুদ্দিন (Nasiruddin) অসুস্থ হয়ে পড়ে। সেখানে তার চিকিৎসা করার পরেই তার ক্যান্সার ধরা পড়ে। ওই পরিযায়ী পরিবারটি যাতে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড পায় তা নিয়ে নিজেই উদ্যোগী হয়েছেন কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান মহম্মদ নূর আজম। প্রশাসনের তরফেও বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে দেখা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।

হরিশ্চন্দ্রপুর ১ বিডিও অনির্বাণ বসু (Anirban) জানান, আবেদনপত্র জমা পড়েছে। দ্রুত যাতে ওরা কার্ড পায় তা দেখছি। মামুনের দাদা মন্টু শেখ বললেন, “মাস খানেক আগে থেকে ছেলেটি অসুস্থ। এখন সরকারের কাছে আবেদন যেন স্বাস্থ্যসাথী কার্ডটি হয়ে যায়। কার্ড না হলে বাচ্চাটিকে বাঁচাতে পারব না।”

কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান মহম্মদ নূর আজম বলেন, “আমি দায়িত্ব পাওয়ার পর যে লিস্ট করেছি তাতে ওই পরিবারের নাম আছে”। এখন এই দরিদ্র পরিযায়ী পরিবার পথ চেয়ে বসে আছে কবে তারা স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড পাবে এবং সমস্যার সমাধান হবে।

 

spot_img

Related articles

পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ‘শ্রমশ্রী’ প্রকল্পে নাম নথিভুক্তি শুরু

পরিযায়ী শ্রমিকদের সুবিধার্থে এবার আরও এক পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের। ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচির আওতায় দুয়ারে সরকার শিবিরেও...

‘নিখুঁত ভুলগুলি’, উৎপল সিনহার কলম

একটা দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান হয়ে ওঠে ...একটি দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান...

ষোলতেই ১৩০ কেজি! ছেলের খাবার জোগাতেই নাজেহাল বাবা-মা

মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি থানার কাবিলপুর পঞ্চায়েতের মথুরাপুর গ্রাম। এখানেই থাকেন দিনমজুর মুনশাদ আলি। তাঁর ছোট ছেলে জিশান আলি...

কবে থেকে শুরু জয়েন্টের কাউন্সেলিং? দিনক্ষণ জানিয়ে দিল বোর্ড

ফলপ্রকাশের পর এবার ১৫ দিনের মধ্যেই কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া তথা ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করবে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড। এবার কাউন্সেলিং...