Tuesday, November 11, 2025

উত্তরাখণ্ডের মতো বিপর্যয় কড়া নাড়ছে কলকাতাতেও, আশঙ্কা গবেষকদের

Date:

Share post:

উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলায় হড়পা বাণের জেরে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৩১ জনের। নিরুদ্দেশ ১৭০ জনেরও বেশি মানুষ। ভয়াবহ এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের বিশ্লেষণে এখন ব্যস্ত গবেষকরা। তাঁদের অনুমানে দেখা গেছে,  হিমানি সম্প্রপাত বা হিমবাহ হ্রদের হঠাৎ ফেটে যাওয়া, যাকে ইংরেজিতে গ্লেসিয়াল লেক আউট বার্স্ট ফ্লাড (GLOF) বলে, সেই কারণেই উত্তরাখণ্ডের বিপর্যয় ঘটেছে। তবে একে সহজভাবে নেওয়াটা ঠিক নয়। কলকাতাও এই বিপদসীমার আওতায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। বিজ্ঞানীদের দাবি, উত্তরাখণ্ডের মতো কলকাতাতেও অচিরেই ঘটে যেতে পারে এই ধরণের বিপর্যয়। কিন্তু কেন?

পুণের ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ ট্রপিকাল মেটিরিওলজির জলবায়ু বিজ্ঞানী ডক্টর রক্সি মেথিউ কোল বলেছেন, এই ঘটনার অন্যতম কারণ হতে পারে জলবায়ুর পরিবর্তন। এছাড়াও উত্তরাখণ্ডের বিভিন্ন এলাকায় যে নতুন তুষারপাত হয়েছে, সেই বরফ জলের উপরে জমে যাওয়ায় ফ্ল্যাশ ফ্লাড হওয়ার সম্ভাবনাকেও একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না ডক্টর কোল। প্রতিবছর ভারতের জলবায়ুর পরিবর্তন নিয়ে সম্প্রতি যে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে সেখানে বলা হয়েছে, প্রতি দশকে জলবায়ুর পরিবর্তনের জন্য হিমালয়ের তাপমাত্রা .২ ডিগ্রি সেলসিয়াস করে বৃদ্ধি পাচ্ছে।  ৪০০০ মিটারের বেশি উচ্চতায় এই উষ্ণায়নের পরিমাণ দশক প্রতি .৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এভাবে ক্রমাগত উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য বিগত কয়েক দশকে হিমালয়ের বরফ গলতে শুরু করেছে এবং যে বিপুল পরিমাণ বরফ এত দিন জমা হয়েছিল সেটার পরিমাণও কম হয়ে যাচ্ছে বলে অনুমান করছেন ডক্টর কোল। টেরি (TERI)-র সেন্টার ফর হিমালয়ান ইকোলজির তরফ থেকে হিমবাহবিদ শ্রেষ্ঠ তয়াল বলেছেন, প্রাকৃতিক বিপর্যয় রোধ করা যাবে না ঠিকই, কিন্তু সেটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। যদি এই বিপর্যয়প্রবণ এলাকা আগে থেকে চিহ্নিত করে নেওয়া যায়, তাহলে সম্পদ ও মানুষের প্রাণহানি অনেক কম হবে। আর সেই চেষ্টাই তাঁরা করছেন। যে সমস্ত হিমবাহ হ্রদ খুব দ্রুত আয়তন বিস্তার করছে বা ক্রমাগত বৃষ্টি হয়ে চলেছে যে সব হ্রদ অঞ্চলে, সেগুলিকে আলাদা গুরুত্ব দিয়ে খুঁজে বের করা হচ্ছে। কারণ এই জাতীয় অঞ্চলেই বিপর্যয়ের আশঙ্কা বেশি থাকে।

গবেষকরা জানিয়েছেন, ভারতের অন্যান্য জায়গার পাশাপাশি বিপদসীমার বাইরে নয় শহর কলকাতাও। বিজ্ঞানীদের দাবি, উত্তরাখণ্ডের মতো হিমবাহ বিস্ফোরণ নয়, কলকাতা মেঘ ভাঙা বৃষির কবলে পড়তে পারে। তবে এরকমটা হলে তিলোত্তমা চলে যেতে পারে জলের তলায়। ভেসে যেতে পারে গোটা শহর। কলকাতার বিপদ যে দোড়গোড়ায় তা ভালই জানান দিয়েছে আমফান । তছনছ করে দিয়েছিল গোটা শহর। এর আগেও অবশ্য সতর্কতা দিয়েছিল আয়লা। তারপর মাঝের কয়েকটা ছোটখাটো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাক্ষী থেকেছে কলকাতা। পরিবেশবিদদের দাবি, আসলে শহরের বিপদ বাড়াচ্ছে বঙ্গোপসাগরের জলের উষ্ণতা বৃদ্ধি। যার জেরে এখন ঘন ঘন ঘূর্ণীঝড় জন্ম নিচ্ছে বঙ্গোপসাগরের বুকে।  তাতেই কড়া নাড়ছে বিপদ।

Advt

spot_img

Related articles

সঙ্গীত পরিচালকের ভূমিকায় সৃজিত?

১৫ বছর টলিউডে রাজত্ব করেছেন। ঝুলিতে রয়েছে দুর্দান্ত সব ছবি। কিন্তু এবার সঙ্গীত পরিচালকের ভূমিকায় কাজ করতে চলেছেন...

উচ্চ মাধ্যমিকের তৃতীয় সেমিস্টারের আনসার কী প্রকাশ! মিলিয়ে দেখার সুযোগ পরীক্ষার্থীদের

প্রকাশিত হল উচ্চ মাধ্যমিকের তৃতীয় সেমিস্টারের আনসার কী। মঙ্গলবার অনলাইনে এই উত্তরপত্র প্রকাশ করেছে পশ্চিমবঙ্গ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা...

কোন ধারায় আমি সাসপেন্ড? পার্থর বিস্ফোরক চিঠি দলীয় নেতৃত্বকে

দলকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাঠানো চিঠি প্রকাশ্যে আসতেই হইচই। দুর্নীতির অভিযোগে সাসপেনসেনকে অবৈধ বলে ব্যাখ্যা করেছেন পার্থ।...

দুদফায় ভোটগ্রহণ শেষে বিহারের Exit Polls: নীতীশ না তেজস্বী-শেষ হাসি হাসবেন কে?

দুদফায় ভোটগ্রহণের শেষের পরেই প্রকাশিত বিহারের বুথ ফেরত সমীক্ষা। আর তাতেই দেখা যাচ্ছে জোট শরিকদের দুর্বলতায় মসনদে বসা...