যৌন হেনস্থা করেও বহাল শিক্ষক, বাতিল হতে পারে বিদ্যাসাগর কলেজের স্বীকৃতি

২০১৮ সালের এক ঘটনার জেরে চরম বিপাকে কলকাতার বিদ্যাসাগর কলেজ (Vidyasagar College)৷ পরিস্থিতি এতটাই সঙ্কটজনক যে, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (UGC) জানিয়ে দিয়েছে কলেজের ডিগ্রি দেওয়ার অধিকার কেড়ে নেওয়া হতে পারে। বন্ধ হতে পারে সমস্ত আর্থিক সাহায্য৷ UGC- র নির্দেশ মেনে এখনই পদক্ষেপ না করা হলে কলেজের আড়াই হাজার পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। ওদিকে বিদ্যাসাগর কলেজ পরিচালন সমিতির বক্তব্য, “এই বিপদের মধ্যে পড়ার জন্য বিকাশ ভবনই দায়ী”।

ঘটনা ২০১৮ সালের ৬ জুলাই মাসের। বিদ্যাসাগর কলেজের পড়ুয়া ও শিক্ষকদের সামনেই এক শিক্ষিকার সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন এক শিক্ষক। দু’দিন পর, ১০ আগস্ট, ওই শিক্ষিকা অধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। পরিচালন সমিতি কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের যৌন হেনস্থা সংক্রান্ত আইন এবং UGC-র আইন মেনে অভ্যন্তরীণ তথ্যানুসন্ধান কমিটি বা ICC-র কাছে পাঠায়। তদন্তের পর কমিটি অভিযুক্ত শিক্ষককে দোষী সাব্যস্ত করে এবং ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে। রিপোর্টে বলা হয়, দোষী ওই শিক্ষককে বরখাস্ত অথবা অন্যত্র বদলির করতে হবে৷
এদিকে, পরিচালন সমিতি ২০১৯-এর ২ ফেব্রুয়ারি নিজেদের রিপোর্টে ওই শিক্ষককে অপেক্ষাকৃত কম শাস্তি ও অন্যত্র বদলির সুপারিশ করে উচ্চশিক্ষা দফতরে৷ কিন্তু উচ্চশিক্ষা দফতর থেকে কোনও নির্দেশ না আসায় ওই শাস্তি কার্যকর হয়নি আজও। এই নিয়ে বিরোধ শুরু হয় কলেজ পরিচালন সমিতি ও উচ্চশিক্ষা দফতরের মধ্যে। বিষয়টি পৌঁছে যায় নবান্নেও৷ তাতেও সমাধান হয়না৷ এবার কলেজকে কড়া শাস্তির হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। গত ২২ জানুয়ারি কলেজের অধ্যক্ষ তথা পরিচালন সমিতির সম্পাদক গৌতম কুণ্ডুকে পাঠানো চিঠিতে কমিশন জানিয়েছে, আইসিসি’র বিধি লঙ্ঘন করে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এখনও কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ার প্রেক্ষিতে কলেজের সমস্ত আর্থিক সাহায্য UGC বন্ধ করতে পারে। ডিগ্রি প্রদানের অধিকারও কেড়ে নেওয়া হতে পারে। অধ্যক্ষকে UGC জানিয়েছে, আইসিসি’র ২০১৯-এর ২১ জানুয়ারির সুপারিশ মেনে এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে শাস্তি অবধারিত৷ UGC-র বার্তা মেনে অবিলম্বে পদক্ষেপ না করা হলে কলেজের আড়াই হাজার পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
এদিকে, পরিচালন সমিতি এই ঘটনার দায় চাপিয়েছে উচ্চশিক্ষা দফতরের শীর্ষকর্তাদের উপরেই। বলা হয়েছে,এই টানাপোড়েনের জন্য বিকাশ ভবনই দায়ী। ঠিক সময়ে সব কিছু জানানো সত্ত্বেও উচ্চশিক্ষা দফতর
দু’বছর কাটিয়ে দিয়েছে
সিদ্ধান্ত নিতে৷ আর তার ফলেই কঠৈর শাস্তির মুখে বিদ্যাসাগর কলেজ৷

আরও পড়ুন:খেলা অত সহজ নয়, আমি গোলরক্ষক: চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন মমতা

Advt

Previous articleখেলা অত সহজ নয়, আমি গোলরক্ষক: চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন মমতা
Next articleউত্তরাখণ্ডের মতো বিপর্যয় কড়া নাড়ছে কলকাতাতেও, আশঙ্কা গবেষকদের