মিডিয়ায় প্রভাবিত হবেন না, নন্দীগ্রামে দিদিই জিতছেন, বললেন কুণাল

মহেশতলা পুরসভা অঞ্চলে মেটিয়াবুরুজ বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী আব্দুল খালেক মোল্লার সমর্থনে বৃহস্পতিবার একটি জনসভায় ভাষণ দেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। কুণাল এদিন অত্যন্ত দৃঢ় এবং স্পষ্ট ভাষায় বলেন নন্দীগ্রামে দিদিই জিতছেন। কোনও মিডিয়ার প্রচারে প্রভাবিত হবেন না। বিভ্রান্ত হবেন না। কুণাল ঘোষ এদিন বলেন, সকাল থেকে অনেক ফোন পাচ্ছি, সবাই জানতে চাইছেন, নন্দীগ্রামে কী হল? নন্দীগ্রামে কী হবে? আবারও আশ্বস্ত করছি নন্দীগ্রামে দিদিই জিতছেন। নন্দীগ্রামে বয়াল বলে একটা বুথ আছে। আজ সকালে সেখানে একটু গোলমাল হয়েছিল। গোলমাল আর কী, তৃণমূল আর বিজেপি সমর্থকরা একটু কাছাকাছি চলে এসেছিলেন। এখন টেলিভিশনের যুগ। সবাই টোয়েন্টি টোয়েন্টি ম্যাচ দেখার মত গোলমাল হচ্ছে দেখে টিভির সামনে বসে পড়েছিলেন। সবার একটাই বক্তব্য তৃণমূল কংগ্রেস এত অভিযোগ জানাচ্ছে। অথচ বিজেপি খালি জয় শ্রীরাম বলে চলেছে । আমাদের কি চিন্তার কোনো কারণ আছে? আমি বলি, তৃণমূলকে অত বোকা ভাবার কোনও কারণ নেই। সকাল থেকে যা যা করার, করল তো। দেখলাম তো। কোন কোন বুথে ওরা ডিস্টার্ব করতে পারে সেটা খুব ভাল করেই জানা ছিল আমাদের। চিন্তা খালি একটাই। মমতাদির জেতার মার্জিন ওখানে এক লাখ ক্রস করবে তো? শুভেন্দু বলেছে তৃণমূল নাকি ওখানে এজেন্ট দিতে পারেনি। আমি বলি, ওরে তৃণমূলের ওখানে এজেন্ট লাগেনা। তোমরা যাদের এজেন্ট করে পাঠিয়েছো তারাই মমতাদিকে ভোটটা দিয়ে এসেছে।

জয় শ্রীরাম স্লোগান আমদানি করেছে। বিজেপি আমাদের হিন্দুত্বের ঠেকা নিয়েছে? কারো হিন্দু ঘরে জন্ম। কারো মুসলিম ঘরে জন্ম । কারো আবার ক্রিশ্চান পরিবারে জন্ম। এই নিয়েই তো আমাদের দল। টিএমসি। টি ফর টেম্পল। এম ফর মস্ক। আর সি ফর চার্চ। এইতো তৃণমূল কংগ্রেস দল। বিজেপিকে আমাদের হিন্দুত্বের ঠেকা নিতে হবে না। আমি তৃণমূল কংগ্রেসের সৈনিক। আমার মা ঠাকুরমার কাছ থেকে ঠাকুর-দেবতা শিখে এসেছি। বিজেপির কাছে ধর্ম শিখতে যাব না। জয় শ্রীরাম বলতে আমিও রাজি আছি। পেট্রোল পাম্পে গিয়ে জয় শ্রীরাম বললে যদি ৪০ টাকা লিটারে পেট্রোল দিয়ে দেয় তাহলে আমিও জয় শ্রীরাম বলব। আমার মা- বোনেরা যদি নরেন্দ্র মোদির ছবির সামনে দাঁড়িয়ে জয় শ্রীরাম বললে রান্নার গ্যাস টা ২০০ টাকায় পেয়ে যান, তাহলে তারাও জয় শ্রীরাম বলতে রাজি আছেন। কাল রাতে হঠাৎ সব রকম স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে মোদি সরকার সুদ কমিয়ে দিল। আর তার পরেই হয়তো মনে হয়েছিল এতগুলো রাজ্যে ভোট চলছে। খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। সকালবেলা উঠে অর্থমন্ত্রী সুদ কমানোর ব্যাপারটা স্থগিত করে দিলেন। এভাবে ছেলেখেলা করে একটা সরকার চলছে? কংগ্রেস আমলে, ইউপিএ আমলে দেশে যে সম্পদগুলো তৈরি হয়েছিল, বিজেপি সরকারের কাজ হলো সেগুলো সব বেচে দেওয়া। রেল বেচছে। প্লেন বেচছে । ব্যাংক বেচছে । জীবন বিমা বেচছে।

এরা নাকি আবার বিশ্বের বৃহত্তম দল। যারা ২৯৪ টা আসনে ঠিক ভাবে প্রার্থী দিতে পারেনা, তৃণমূল, কংগ্রেস সবার থেকে লোক ধরে ধরে নিয়ে গিয়ে প্রার্থী করতে হয় তারা কিসের বিশ্বের বৃহত্তম দল?

একদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের নানা প্রকল্প। অন্যদিকে রাজ্য সরকারের নানা প্রকল্প, উন্নয়নমূলক কাজ। কন্যাশ্রী যুবশ্রী দুয়ারে সরকার স্বাস্থ্য সাথী ইত্যাদি ইত্যাদি.. যতটা পারা যায় মমতাদির সরকার আপনাদের জন্য করেছে। ভুলত্রুটি কি কিছু নেই? সে তো থাকবেই। কাজ করলে ভুল তো হবেই। আবার কাজ করতে করতে ভুল শুধরে নিতে হবে। আমি আপনাদের বলছি, আপনারা নিশ্চিন্ত থাকুন অন্তত ২২৫ টা আসনে জিতে মমতাদি তৃতীয়বারের জন্য সরকার গড়তে চলেছেন।

Advt