Sunday, November 9, 2025

সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ তৈরির লক্ষ্যেই কি শীতলকুচির গুলি? উঠছে প্রশ্ন

Date:

Share post:

কিছু দলত্যাগী গদ্দারকে সামনে রেখে আর মোদি-শাহের ‘সুনার বঙ্গাল’ করার আর্তনাদে সেভাবে কাজ হচ্ছে না দেখেই কি ধর্মীয় মেরুকরণ ( communal division) তৈরির লক্ষ্যে পরিকল্পিত চিত্রনাট্য অনুযায়ী মানুষ মারার কাণ্ড ঘটানো হল? শীতলকুচির ঘটনার (sitalkuchi incident) পর বিজেপি (bjp) নেতাদের পরবর্তী কাণ্ডকারখানা ও একসুরে উস্কানি দেখে সেই ইঙ্গিতটি ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে। কী ধরনের আক্রমণের মুখে পড়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী গুলি চালনার মত চরম সিদ্ধান্ত নিল তা নিয়ে যথেষ্ট ধোঁয়াশা। এত বড় একটি ঘটনার প্রেক্ষাপট নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দায়সারা জবাবদিহি সংশয় বাড়াচ্ছে। সেইসঙ্গে, গুলিতে চার পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যুর পর বিজেপি নেতারা যেরকম কুৎসিতভাবে মৃতদের ধর্মীয় পরিচয়কে সামনে রেখে প্রচারে নেমে পড়েছেন তাতে মনে হওয়া স্বাভাবিক, যেন ধর্মীয় মেরুকরণের হাওয়া তৈরি করতেই অলক্ষ্যে কোনও চক্রান্ত হয়েছে। আর কে না জানে, সাম্প্রদায়িক তাসটাই যে কোনও ভোটে বিজেপির আস্তিনে রাখা সবচেয়ে প্রিয় অস্ত্র!

এতদিন পর্যন্ত বাংলার ভোটে অন্য যত যাই ইস্যু থাক, মানুষে মানুষে ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে বিভাজন ও হিংসা উসকে দেওয়ার নির্লজ্জ চেষ্টা এত নগ্নভাবে দেখা যায়নি। বাম ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ থাকলেও রাজ্যের সংখ্যাগুরু হিন্দুরা বাংলায় বিরাটভাবে বঞ্চিত হয়েছেন, এমন কথা পাগলেও বলবে না। বিচ্ছিন্ন কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা নিশ্চয়ই হয়েছে যা অনভিপ্রেত নয়, কিন্তু তা বলে বাংলায় হিন্দুরা অত্যাচারিত এমন মিথ্যাচার করে বিজেপি যদি শুধু ধর্মের ভিত্তিতে ভোট ভাগাভাগির পুঁজি নিয়ে ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখে, তা অধরাই থেকে যাবে। বরং উল্টো দিক থেকে বলা যায়, বর্তমান তৃণমূল জমামায় বাঙালির সর্ববৃহৎ উৎসব দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে যে বিপুল সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা অথবা গত কয়েক বছরে বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবীর বারোয়ারি পুজোপার্বণের যে ঢল তার ভিত্তিতে সংখ্যাগুরুদের বঞ্চনার চিত্রটা ধোপে টেঁকে না। এর পরেও হিন্দুত্ব ও জাতপাতের নামে বিজেপি যে উত্তর ও পশ্চিম ভারতের সংস্কৃতি জোর করে বাংলায় চাপিয়ে দিতে চাইছে তা যত্রতত্র ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনিতে স্পষ্ট। এই ধ্বনির আস্ফালন পুরোটাই রাজনৈতিক। এবং সুকৌশলে বঙ্গীয় উদার ধর্মনিরপেক্ষ ভাবাবেগে আঘাত করার চেষ্টা। বাংলা ভাষা, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির সংস্কৃতি ও বাঙালির জাত্যভিমানকে আহত করার চেষ্টা করছে বিজেপি। একইসঙ্গে হিন্দি ভাষার আগ্রাসন চাপিয়ে দেওয়ারও চেষ্টা হচ্ছে। দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলোয় এটা করে লাভ নেই। তামিলনাড়ু, কেরলে এসব চলবে না। কিন্তু বাংলায় তার পরীক্ষামূলক ব্যবহার শুরু করেছে গেরুয়া শিবির। নরেন্দ্র মোদির মত জনপ্রিয় নেতার মুখ সামনে রেখে একদিকে সাম্প্রদায়িক বিভাজন ও অন্যদিকে সোনার বাংলার অলীক গল্পকথা ছড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। এই চোরা ফাঁদে পা দিলে বাংলার মানুষকে অদূর ভবিষ্যতে পাশের রাজ্য ত্রিপুরার মানুষের মতই আপসোস করতে হবে।

Advt

spot_img

Related articles

বালিচকের প্লাটফর্মে ধাক্কা মালগাড়ির, অল্পের জন্য বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা

রবিবার সকালে খড়্গপুর ডিভিশনে রেল দুর্ঘটনা। নটা নাগাদ বালিচক স্টেশনে বিকট আওয়াজে একটি মালগাড়ির ইঞ্জিন ধাক্কা মারে প্ল্যাটফর্মে।...

তারকেশ্বরে শিশুকন্যাকে অপহরণ করে যৌন নির্যাতন, গ্রেফতার দাদু!

চার বছরের ঘুমন্ত শিশুকন্যাকে মশারি কেটে বের করে নিয়ে গিয়ে যৌন নির্যাতন। তারকেশ্বর স্টেশন (Tarkeswar Station) সংলগ্ন ড্রেন...

রবিবাসরীয় সকালে চাঁদনী চকের CESC অফিসের ট্রান্সফর্মারে বিস্ফোরণ!

সাতসকালে মহানগরীতে ফের অগ্নিকাণ্ড (Fire incident in Kolkata)। সকাল ৭টা ১০ মিনিট নাগাদ চাঁদনী চকের CESC অফিসের একটি...

গ্রিন লাইনে ট্র্যাফিক ব্লক, রবির শেষ মেট্রোসূচিতে বদল!

ছুটির দিনে মহানগরীর পাতাল পরিষেবায় বদল। হাওড়া ময়দান - সেক্টর ফাইভ (Howrah Maidan to Sector V) রুটে শেষ...