Sunday, August 24, 2025

কেন্দ্রের গাফিলতিতেই ভয়াবহ হয়েছে সংক্রমণ, মানছেন নীতি আয়োগের সদস্য

Date:

Share post:

সংক্রমণের কারনে দেশজুড়ে এই মৃত্যু- মিছিলের জন্য দায়ি কেন্দ্রীয় সরকারই৷ নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) বিনোদ পল (Vinod Paul) কার্যত স্বীকার করে নিলেন এই দায়৷

করোনা চলে গিয়েছে, করোনার বিরুদ্ধে জয় পাওয়া গিয়েছে, মোদি সরকারের এই মনোভাবই অনেকাংশে দায়ী বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক গণস্বাস্থ্য সংস্থাগুলিও।

বিশ্বস্তরের গণস্বাস্থ্য সংগঠনগুলি জানিয়েছে, প্রথম দফার সংক্রমণ কমে আসায় নরেন্দ্র মোদি সরকার (Narendra Modi) যুদ্ধজয়ের মেজাজে লাফালাফি শুরু করেছিলো৷ দ্বিতীয় ঢেউয়ের সতর্কতা কেন্দ্র তখন পাত্তাও দেয়নি৷ এই মুহুর্তে কেন্দ্রীয় সরকারের ওই পরিকল্পিত গাফিলতির (Negligency) ফল ভুগতে হচ্ছে দেশবাসীকে। পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে আগামী দিনে মূলত গ্রামীণ ভারত (Rural India) বিপদের মুখে দাঁড়িয়ে।

গোপনে নয়, ঢের আগে প্রকাশ্যেই বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে দিয়েছিলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আরও ভয়ঙ্কর চেহারা নিয়ে ভারতে আসছে৷
কিন্তু এই সতর্কবার্তা হালকাভাবে নেয় কেন্দ্র ৷
সংক্রমণ যে দেশে এত প্রবল আকার নেবে, তা ভাবতে পারেননি বলে স্বীকার করে নিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য কর্তারা। মেনেছেন, প্রস্তুতিতেও খামতি থেকে গিয়েছে। এবং এই কারনেই এতখানি ভয়াবহ চেহারা নিয়েছে সংক্রমণ৷ নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) বিনোদ পলের কথায়, গত জানুয়ারি মাসে ভারতে রক্ত বা সেরো সমীক্ষা করেছিল ICMR বা ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ। ওই সমীক্ষায় দেখা যায়, প্রথম ধাক্কায় দেশের মাত্র ২০ শতাংশ মানুষ করোনার শিকার হয়েছেন। তখনই বোঝা গিয়েছিল দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ করোনা আক্রমণের শিকার হতে পারেন। অথচ সেভাবে প্রস্তুতিই নেওয়া হয়নি৷” বিনোদ পল বলেছেন, দ্বিতীয় ধাক্কায় দেশে ৮০ শতাংশের কাছাকাছি মানুষের আক্রান্ত হওয়ার
আশঙ্কার কথা জানা গেলেও, ঠিক কত লোক আক্রান্ত হতে পারে, কোনও সমীক্ষাতেই তার প্রকৃত পূর্বাভাস দেওয়া হয়নি। ফলে মেনে নিতেই হয়েছে, প্রকৃত আক্রান্তের সংখ্যা নির্ণয় করা দুঃসাধ্য”৷
স্বাস্থ্যমন্ত্রকের এক সূত্রের কথায়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে সংক্রমণের হার বাড়তে শুরু করে। সংক্রমণের প্রথম ঢেউ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও দ্বিতীয় ঢেউ অকল্পনীয় গতিতে ছড়িয়ে পড়ে৷ এর জেরে মে মাসে সংক্রমণ কতটা খারাপ হতে পারে, তখন তা কেউই আঁচ করতে পারেননি। এপ্রিল মাসে প্রথম কোনও কোনও মডেল পরিস্থিতির ভয়াবহতার পূর্বাভাস দেওয়া শুরু করে। কিন্তু অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে তখন।

আরও পড়ুন:গত ২৪ ঘণ্টায় দেশজুড়ে করোনার বলি ৪ হাজার, তবে দৈনিক সংক্রমণ কমলো সামান্য
বিনোদ পল পাশাপাশি বলেছেন, “দ্বিতীয় ঢেউয়ে পরিস্থিতি অবনতির জন্য সাধারণ মানুষের ভূমিকাও অনেকখানি দায়ী। মাস্ক না-পরা, কোভিড প্রোটোকল মেনে না চলার কারনেও আক্রান্তের সংখ্যা বহুগুণ বেড়েছে৷ সাধারণ মানুষ নিয়ম মেনে চললে পরিস্থিতি অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হতো”। বিনোদ পল বলেছেন,”সরকার মানুষকে কোভিড সতর্কবিধি মেনে চলার কথা বললেও জনতার বড় অংশ তাতে কর্ণপাত করেননি।”

spot_img

Related articles

উড়ালপুল–সেতুর নীচে বেআইনি দখলদারি সরাতে ‘উচ্ছেদ অভিযান’! উদ্যোগী কেএমডিএ 

কলকাতার উড়ালপুল ও সেতুর নীচ থেকে বেআইনি দখলদারি সরাতে উদ্যোগী হল কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)। ইতিমধ্যেই চারটি...

ফের জেলা সফরে মুখ্যমন্ত্রী, ২৬ অগাস্টে বর্ধমানে প্রশাসনিক বৈঠক 

চলতি সপ্তাহ থেকেই ফের শুরু হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেলা সফর। আগামী মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট তিনি পৌঁছাবেন বর্ধমান।...

ঠাকুরবাড়ির স্বার্থের রাজনীতি ফাঁস: শান্তনুকে কাঠগড়ায় তুললেন মা-দাদা

বিজেপির মধ্যে ঝগড়া ও স্বার্থের লড়াই শুরু হয়েছে বনগাঁর ঠাকুরনগরে। মতুয়া (Matua) সমাজের প্রভূত উন্নয়ন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা...

মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়ার অধিকার কার: চরম দ্বন্দ্ব শান্তনু-সুব্রতর

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে এবার গোটা ঠাকুর পরিবার। মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষদের ঘটা করে যে নাগরিকত্ব দেওয়ার খেলায়...