Sunday, November 9, 2025

ক্লান্তিহীন কান্তি, হারের হ্যাট্রিকের পরেও করোনা হাসপাতাল খুললেন এই “রেড ভলেন্টিয়ার”

Date:

Share post:

তিনি কাজের মানুষ, কাছের মানুষ। বাম আমলে রাজ্যের দাপুটে মন্ত্রী। কিন্তু ২০১১ সালে রাজ্যে রাজনৈতিক পালা বদলের পর থেকে শুধুই পরাজয় সঙ্গী হয়েছে তাঁর। গতবছর করোনা (Corona) আবহের মধ্যে গোদের উপর বিষ ফোঁড়ার মতো আমফানের (Amphun) তাণ্ডবে যখন দিশেহারা সুন্দরবনের মানুষ, তখন তাঁদের আলোর দিশা দেখিয়ে ছিলেন তিনি। তিনি কান্তি গাঙ্গুলি (Kanti Ganguly)। সিপিএম (CPIM) নেতা। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। রায়দিঘির (Roydighi) প্রাক্তন বিধায়ক। এবার বিধানসভা ভোটে (Assembly Election) হারের হ্যাট্রিক হয়েছে। তবে ক্লান্তিহীন কান্তি। মানুষ হয়ে কাজ করার জন্য জন প্রতিনিধি হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। প্রয়োজন মানসিকতার। এবং সেই মানসিকতা দেখিয়েই এখন রেড ভলান্টিয়ার (Red Volunteers) হিসেবে কাজ করছেন কান্তিবাবু।

ভোটে হারার পর মুছড়ে পড়েননি, বরং করোনা কালে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে চালু করে দিয়েছেন “দাওয়াখানা”। সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই-কে সঙ্গে নিয়ে বুড়ো কান্তি এখনও তরুণ-তুর্কিদের মতো লড়ছেন। এবার লড়াই করোনা সংক্রমণের বিরুদ্ধে। করোনা রোগীদের জন্য বা অন্য যে কেউ সেখান থেকে প্রয়োজন মতো ওষুধ, মাস্ক নিচ্ছেন।

শুধু ওষুধ বিতরণ কেন্দ্র নয়, করোনা রোগীদের জন্য বিশেষ হাসপাতাল তৈরি হলো কান্তি গাঙ্গুলির উদ্যোগে। কালান্তক করোনা! একুশের আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ফিরে এসেছে মারণ ভাইরাস। সংক্রমণে লাগাম পরাতে গিয়ে হিমশিম অবস্থা প্রশাসনের। কার্যত লকডাউন চলছে রাজ্যে। মৃত্যু যে থামছে না! গত বছর করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। চলে যান চিকিত্‍সক বিপ্লব দাশগুপ্ত। আর এবছর ‘মৃত্যুমিছিল’-এ কবি শঙ্খ ঘোষ, ২৪ ঘণ্টার এডিটর অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়দের মতো আরও অনেকে। তাঁদের স্মরণ করেই যাত্রা শুরু হয়েছে প্রতিবন্ধী ভিলেজ কোভিড রিলিফ সেন্টারের।

শহরের উপকণ্ঠে ইএম বাইপাস সংলগ্ন মুকুন্দপুরে (Mukundapur) করোনা আক্রান্তদের এই পুর্নবাসন কেন্দ্রটির নেপথ্যে সেই সিপিএম নেতা কাজের মানুষ, কাছের মানুষ কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। আপাতত ৫০টি শয্যা নিয়ে চালু হল এই কেন্দ্র। লক্ষ্য, শয্যা সংখ্যা বাড়িয়ে ১০০ করা।

এই প্রতিবন্ধী কোভিড রিলিফ সেন্টারে (Protibondhi Vivid Relief Centre) কেমন পরিষেবা মিলবে? কান্তি গাঙ্গুলির কথায়, “এটি হাসপাতাল নয়, পুর্নবাসন কেন্দ্র। যতক্ষণ না হাসপাতালে বেড পাচ্ছেন, ততক্ষণ এখানে থাকতে পারবেন করোনা রোগীরা। টাকা-পয়সা লাগবে না। একেবারে নিখরচায়। তবে, সাধারণ মানুষের কাছ আমরা সাহায্য চাইছি। সকলকে এগিয়ে আসার আবেদন জানাচ্ছি। আমরা কৃতজ্ঞ শ্রমজীবী স্বাস্থ্য উদ্যোগ ও ওয়েস্ট বেঙ্গল ডাক্তার’স ফোরামের কাছে। মানুষ মানুষের সাহায্যে পাশে এসে দাঁড়াক, এটাই আমার প্রার্থনা।”

Advt

 

spot_img

Related articles

পশ্চিমবঙ্গই সেরা পারফর্মার: এসআইআর-এ রাজ্যের সাফল্যে সন্তুষ্ট নির্বাচন কমিশন

রাজনৈতিক সংঘাত ও প্রশাসনিক টানাপোড়েনের মধ্যেও এসআইআর সংক্রান্ত সামগ্রিক কাজ এবং এনুমারেশন ফর্ম বিলির ক্ষেত্রে সবার আগে পশ্চিমবঙ্গ।...

রবিতেও ঠাকুরনগরে এলো অ্যাম্বুল্যান্স: ২১ অনশনকারীর মধ্যে অসুস্থ ৯

এসআইআর-এর প্রতিবাদে আমরণ অনশনে মতুয়া পরিবারের সদস্যরা। মতুয়া দলপতিদের অনশনের সিদ্ধান্তে সমর্থন জানিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা...

কংগ্রেসকেও সমর্থন করতে পারত RSS: অরাজনৈতিক সাজার চেষ্টা মোহন ভাগবতের!

একশো বছর উদযাপন ঘিরে রাতারাতি প্রচারের আলোয় অনেক বেশি করে আসছে আরএসএস। সেই সঙ্গে এবার প্রকাশ্যে হিন্দুত্ববাদী চিন্তাধারাকে...

সহপাঠীকে গুলি একাদশ শ্রেণির দুই ছাত্রের, ফ্ল্যাটে উদ্ধার অস্ত্রের সম্ভার

শনিবার রাতে গুরুগ্রামের সেক্টর ৪৮-এ এক অভিজাত আবাসনে ডিনারে ডেকে এনে সহপাঠীকে গুলি করার অভিযোগ উঠল একাদশ শ্রেণির...