বাংলা ভাগে বড়সড় চক্রান্ত শুরু করেছে কেন্দ্রের বিজেপি (BJP) সরকার। সম্প্রতি বাংলার স্বার্থবিরোধী এই চক্রান্তের কথা তুলে ধরে এক প্রতিবেদন প্রকাশ্যে এনেছে সর্বভারতীয় এক হিন্দি দৈনিক(Hindi media)। এর জবাবে সোমবার, নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বলেন, “বঙ্গভঙ্গ করার ষড়যন্ত্র করছে বিজেপি। বাংলাকে ভাগ করতে চাওয়ার উপযুক্ত জবাব দেবে রাজ্যের মানুষ। বাংলাকে পরাধীন করতে দেব না।”

বিধানসভা ভোটে ধরাশায়ী হওয়ার পর রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে রোজই নিত্যনতুন অভিযোগ করছে বিজেপি (Bjp)। বাংলাদেশ, নেপাল-সহ একাধিক দেশ থেকে উত্তরবঙ্গে ঢুকছে দুষ্কৃতীরা। রোহিঙ্গারাও উত্তরবঙ্গকে সেফ করিডোর হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিজেপির সাংসদ-বিধায়করা। এবার উত্তরবঙ্গকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে গণ্য করার দাবি তুলছেন তাঁরা। বিজেপির এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে সরব মমতা।

সম্প্রতি ‘দৈনিক ভাস্কর’ নামক এক সর্বভারতীয় হিন্দি দৈনিকও বিজেপির ভয়ঙ্কর এই চক্রান্তের তথ্য প্রকাশ্যে এনেছে। ওই সংবাদ-মাধ্যমের প্রতিবেদনে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে হয়ত জম্মু কাশ্মীরের(Jammu Kashmir) ছকে পশ্চিমবঙ্গকেও তিন ভাগে ভাগ করার পরিকল্পনা চলছে। আর এই ৩ ভাগের দক্ষিণ অংশ হবে পশ্চিমবঙ্গ। উত্তরভাগে শিলিগুড়ি করিডোর ও দার্জিলিংকে আলাদা করে গোর্খাল্যান্ড (Gorkhaland) নামক আলাদা রাজ্য তৈরি করা হতে পারে। মালদহ, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুরের এলাকাগুলিকে একত্রিত করে করা হতে পারে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। বাংলা দখলে মরিয়া চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর এবার এই ছকেই বাংলার শাসনভার হাতে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

ওইদিন সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন তোলেন, “কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মানে কী দিল্লির পায়ে পড়তে হবে? জম্মু কাশ্মীরের মতো মুখ বন্ধ করে রাখতে হবে?” এরপরই তিনি বলেন, এ সব এত সহজ নয়। এর জন্য রাজ্যের অনুমতি লাগে। “বিজেপি চাইলে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার বিক্রি করে দিতে পারে না।” এরপরই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে মমতা বলেন, বাংলাকে ভাঙতে এলে মানুষ তার জবাব দেবে। “কিছুদিন আগে ভোটে হেরেও শিক্ষা হয়নি ওদের।”

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, মোদি-শাহরা ভালো মত জানেন ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদিকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যার ফলেই একুশের নির্বাচনে কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকা বিজেপির কাছে বাংলা দখল শুরু থেকেই বাড়তি প্রাধান্য পেয়েছিল। কিন্তু সব চেষ্টার পর অধরাই থেকে গিয়েছে সাফল্য। এহেন অবস্থায় ভোট-পরবর্তী রাজনৈতিক হিংসাকে হাতিয়ার করে তলে তলে চলছে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির ষড়যন্ত্র। এ বিষয়ে উত্তরবঙ্গের যেসব জায়গায় বিজেপি ভালো ফল করেছে সেসব জায়গায় বিধায়ক এবং সাংসদরা দিল্লিতে গিয়ে এ বিষয়ে দরবার করছেন বলে সূত্রের খবর। এদিন সেই অপচেষ্টারই তীব্র জবাব দিয়েছেন মমতা।
