সিপিএমে বিদ্রোহ! ‘টুম্পা সোনা’ নয়া প্রজন্মের বিরুদ্ধে একজোট আদিরা, কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে গণচিঠি

Date:

Share post:

সিপিএমে (cpim) বেনজির ঘটনা। নতুনদের বিরুদ্ধে পুরনোদের বিদ্রোহ, অনেকটা যেন বিজেপির আদি- নব্য (old vs young fight in bjp) লড়াই। বিধানসভায় (Assembly) বিধায়কশূন্য হওয়ার পর দলের মধ্যে নানা বিতর্ক উঁকিঝুঁকি মারছে। পরিস্থিতি এতটাই অগ্নিগর্ভ যে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীকে (state secretariat) উপেক্ষা করে চিঠি পাঠানো হচ্ছে কেন্দ্রীয় কমিটির (central committee) কাছে। দাবি, দলের একাংশের ভুলের বিচার চাই। সিপিএমে বিদ্রোহ (almost revolution in cpim)।

কেন্দ্রীয় কমিটিকে চিঠি পাঠাতে যারা সই সংগ্রহে নেমেছেন তাদের বক্তব্য কী?

১. বিদ্রোহীদের রাগ মূলত সুজন চক্রবর্তী (sujan Chakrabarty) , মহম্মদ সেলিমের (md selim) মতো নেতাদের বিরুদ্ধে। কেন? কারণ, এদের কয়েকজনের সিদ্ধান্তে দলে বেশ কিছু তরুণ মুখকে প্রার্থী করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে দলীয় অনুমোদনকে তোয়াক্কা না করে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। টুম্পা সোনা সংস্কৃতির (tumpa sona culture) নয়া প্রজন্ম বয়স্কদের চাইতে শুধু কম ভোট পেয়েছেন তাই নয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভোটের শতাংশ ১২-১৩%-এর বেশি এগোয়নি। বিদ্রোহীদের প্রশ্ন, এই হঠকারী ব্যর্থতার দায় কে নেবে?

২. অভিযোগ সেলিম-সুজনকে প্রকাশ্যে মদত দিয়েছেন রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র (suryakanta mishra)। নতুনদের নেওয়ার প্রশ্নে তাঁদের একটি গোষ্ঠী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দলকে জানানো হয়নি। দলে স্বেচ্ছ্বাচারিতা চালানো হয়েছে। গণতান্ত্রিক কেন্দ্রীকতার নামে গ্রুপবাজি করা হয়েছে। বলা হয়েছিল দল ঘুরে দাঁড়াবে। আসলে দল ঘূর্ণিঝড়ে ডুবে গিয়েছে।

৩. নতুনদের কী অবস্থা হয়েছে, তার গ্রাফিক্যাল প্রেজেন্টসও দেওয়া হচ্ছে কেন্দ্রীয় কমিটিকে। বলা হয়েছে কীভাবে ফানুস ফোলানো হয়েছে ফল দেখলেই বোঝা যাবে। যেমন ‘নন্দীগ্রামের স্টার’ মীণাক্ষী পেয়েছে ৬২৬৭ ভোট, শতাংশের হিসাবে ২.৭৪%! জেএনইউ-র ঐশী ঘোষ বা দীপ্সিতা ধরদের নিয়ে দারুন নাচাকোঁদা হয়েছিল। বলা হচ্ছিল জামুড়িয়ায় নাকি জিতেই গিয়েছে ঐশী। নিট রেজাল্ট কী? ঐশী পেয়েছে ২৪ হাজার ভোট, শতাংশের হিসাবে ১৫%-এরও কম। দীপ্সিতা ২২হাজার ভোট, ১৭% শতাংশের আশপাশে। বাকি শতরূপ ঘোষ থেকে শুরু করে সপ্তর্ষি দেব, শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, পৃথা ধর, সায়নদীপ গড়ে ১৫% -এর আশপাশে। একমাত্র দেবদূত ২০% পেরিয়েছেন, সায়নদীপ প্রায় ২০%। আর দলের সুবক্তা মধুজা সেন সকলকে ডুবিয়ে ভোট পেয়েছেন মাত্র ৫.১৭%।

সব সমীকরণ হাজির করে আদি বিজেপির মতোই সিপিএমের বয়স্কদের বক্তব্য, যে বদল দলকে ধুলোয় মিশিয়ে দেয়, সেই বদল আসলে দলের কবর খোঁড়া। কেন্দ্রীয় কমিটি আগামী দিনে এই পরিস্থিতি তৈরির কারীগরদের দূরে সরিয়ে রাখুক। সম্পাদকমণ্ডলীকে চিঠি দিয়ে লাভ নেই। কারণ, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের কাছেই তাহলে এই চিঠি যেত। তাতে দলের কোনও উপকার হতো না। তাই দলীয় শৃঙখলা ভেঙে আমরা সর্বোচ্চ কমিটির কাছে বিচার চাইছি। দাবি, সিপিএম ফিরে আসুক তাদের আদি অবস্থানে, যেভাবে অতীতে সাফল্য পেয়েছে।

spot_img

Related articles

জেলা সফরে বহরমপুরে মুখ্যমন্ত্রী: বুধের সভার জন্য প্রস্তুত মালদহের গাজোল

মঙ্গলবার নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠক শেষেই জেলা সফরে মুখ্যমন্ত্রী। পৌঁছে যান মুর্শিদাবাদে বহরমপুরে। বুধবার সকালে  তিনি হেলিকপ্টারে করে উড়ে...

নিভৃতে… খাদ্যহীন! যার জন্য দেশে সূ্ত্রপাত ‘নারী আন্দোলনে’র, সেই ‘মথুরা’ই দুরবস্থায় মহারাষ্ট্রে

সেই সালটা ১৯৭২। এখন ২০২৫। মাঝে পেরিয়েছে ৫৩ বছর। এর মধ্যে তাঁকে ভুলেই গিয়েছে গোটা দেশ। হঠাৎ মনে...

বুধেই ভাগ্য নির্ধারণ! বাংলাদেশে বসে ফেরার অপেক্ষায় অন্তঃসত্ত্বা সোনালি

বাংলাদেশে নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন। ফলে জেলমুক্তি ঘটেছে। কিন্তু নিজের দেশে, নিজের ঘরে ফেরা কবে? আজও জানেন না বীরভূমের...

প্রশাসনিক গতি ফেরাতে যাদবপুরে দুই মাসের অস্থায়ী রেজিস্ট্রার সেলিম বক্স মন্ডল

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজকর্ম দীর্ঘদিন ধরে রেজিস্ট্রার শূন্য থাকার কারণে বিঘ্নিত হচ্ছিল। কর্মসমিতির বৈঠক হলেও রেজিস্ট্রার অনুপস্থিত থাকায়...