Friday, August 29, 2025

বাদাম বিক্রেতার পুলিশ পরিচয়ে প্রেম ও বিয়ে, অতঃপর হাজতবাস

Date:

Share post:

খায়রুল আলম, ঢাকা: মোবাইল ফোনে আলাপ। আর সেই আলাপ গড়াই প্রেম পর্যন্ত। নিজেকে সহকারি সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশ(ASP) পরিচয় দিয়ে দেড় বছর কলেজ ছাত্রীর(১৭) সঙ্গে দিব্যি প্রেম চালিয়ে গিয়েছিল যুবক। একপর্যায়ে সেই সম্পর্ক বিয়ে পর্যন্ত গড়ায়। কিন্তু বিয়ের এক সপ্তাহের মাথায় জানা যায় তিনি নিজেকে পুলিশকর্তা পরিচয় দেওয়া যুবক আসলে একজন বাদাম বিক্রেতা। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরই পুলিশের দ্বারস্থ হলেন প্রতারিত যুবতী। অভিযোগ পেয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে বগুড়া সদর উপজেলার গোকুল ইউনিয়নের পলাশবাড়ি গ্রাম থেকে আবদুল আলিম (৩২) নামের ওই যুবককে আটক করে পুলিশ। তিনি পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার ঢাকিয়াপাড়া গ্রামের মৃত ফজলুল হকের ছেলে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে করে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনসহ প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে অভিযুক্তকে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বছর দেড়েক আগে বগুড়া সদরের গোকুল ইউনিয়নের বাসিন্দা ও ছাত্রীর সঙ্গে আলিমের মুঠোফোনে যোগাযোগ হয়। ওই সময়ে তিনি নিজেকে পুলিশের এএসপি পরিচয় দেন এবং রংপুর রেঞ্জে কর্মরত বলেন। নিজের নাম বলেন রাসেল (৩২) এবং বাসা রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায়। এরপর মুঠোফোনে ওই কলেজছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন।

আরও পড়ুন:টিকাকরণের গতি বহাল রাখতে এনজিও-র সাহায্য নেওয়ার পরামর্শ মোদির

একপর্যায়ে বিয়ের কথা বলেন। ওই ছাত্রী তাকে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে বাড়িতে আসতে বলেন। এরপর ১৮ জুন সকালে হঠাৎ করে ছাত্রীর বাড়িতে এসে হাজির হন ওই যুবক। তার সঙ্গে ছিল পুলিশের মনোগ্রামসংবলিত একটি ব্যাগও। এ সময় তরুণীর পরিবারকে বলেন, পুলিশে নতুন চাকরি, বাহিনী থেকে এখনো বিয়ের অনুমতি মেলেনি। এ কারণে গোপনে বিয়ে করতে হবে।

ওই যুবকের কথা বিশ্বাস করে ১৮ জুন রাতে মৌলবি ডেকে ঘরোয়াভাবে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে ছাত্রীর পরিবার।এরপর কলেজছাত্রীর সঙ্গে স্বামী–স্ত্রী হিসেবে শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করতে থাকেন ওই যুবক। সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতে ওই যুবকের কথাবার্তায় সন্দেহ হয়। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর প্রতিবেশীরাও ওই যুবককে চাপ দেয়। চাপে পড়ে স্বীকার করেন তিনি ‘ভুয়ো পুলিশ কর্মকর্তা’। পরে খবর দেওয়া হয় বগুড়া সদর মডেল থানায়।

সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (Sub Inspector) বেদার উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বগুড়া সদরের পলাশবাড়ি গ্রাম থেকে ওই যুবককে আটক করে থানায় নেওয়া হয়। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে তার নাম, ঠিকানা, পরিচয় সবই ভুয়া। জিজ্ঞাসাবাদে ওই যুবক আরও স্বীকার করেন, তিনি পেশাদার প্রতারক। মাঝেমধ্যে ফেরি করে বাদাম বিক্রি করেন। প্রতারণা করে কিশোরী ও তরুণীদের বিয়ে করা তার নেশা। এ পর্যন্ত প্রতারণার মাধ্যমে তিনি পাঁচটি বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রীর পক্ষে দুটি সন্তানও রয়েছে তার। তবে স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়েছে।

 

spot_img

Related articles

রজতজয়ন্তীতে ডব্লিউবিএনইউজেএসকে উচ্চ প্রশংসা, মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ প্রধান বিচারপতির

কলকাতার পশ্চিমবঙ্গ জাতীয় আইন বিশ্ববিদ্যালয় (ডব্লিউবিএনইউজেএস)-এর উৎকর্ষতা এখন বেঙ্গালুরুর থেকেও এগিয়ে—রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করলেন কলকাতা হাই কোর্টের...

এসএসসি নিয়োগ পরীক্ষা পিছবে না, আবেদন খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট 

স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেও লাভ হলো না কিছু প্রার্থীর। দেশের...

যাত্রীদের জন্য দুঃসংবাদ! রবিবার টালিগঞ্জ থেকে ক্ষুদিরাম পর্যন্ত বন্ধ মেট্রো 

কলকাতার ব্লু লাইনের যাত্রীদের জন্য দুঃসংবাদ। আগামী রবিবার মহানায়ক উত্তম কুমার (টালিগঞ্জ) থেকে শহিদ ক্ষুদিরাম স্টেশন পর্যন্ত বন্ধ...

এনএইচএম কর্মীদের বড় উপহার, উৎসবের মুখে বোনাস ঘোষণা রাজ্যের 

উৎসবের দোরগোড়ায় জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের কাজে নিযুক্ত রাজ্যের স্বেচ্ছাসেবক ও চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের জন্য বড় ঘোষণা করল রাজ্য সরকার।...