Thursday, November 6, 2025

‘বিজেমূল’ বলা ভুল হয়েছে, মানুষ নেয়নি আমাদের, কর্মীদের কাছে স্বীকারোক্তি সূর্যকান্তর

Date:

Share post:

সিপিএম (cpim) সম্বন্ধে রাজনৈতিক মহলে বেশ কয়েকটি বিশেষণ ঘুরে বেড়ায়। কেউ বলেন, জ্যোতিবাবুর (jyoti basu) দলের চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে। কেউ বলেন প্রত্যেকবার ওরা নিজেদের ভুল খুঁজে বের করে, আর ফের ঘটা করে সেই ভুল আবার করে। কেউ কেউ তো এও বলেন, জ্যোতিবাবু তো সেই কবে নয়ের দশকে ‘ঐতিহাসিক ভুল’-এর (historical blunder) কথা বলে গিয়েছিলেন, সেই ট্র‍্যাডিশন সমানে চলছে।

সেই ট্র‍্যাডিশনে পা মেলালেন রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র (cpm state secretary suryakanta mishra)। বুধবার সোশ্যাল মিডিয়ায় এসে রাজ্যের প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী কী কী ভুল হয়েছিল একুশের বিধানসভা ভোটে তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। দলের বিধায়ক সংখ্যা ‘শূন্য’তে আনার পর অবশেষে সিপিএমের আত্মোপলব্ধি!

কী কী ভুলের তালিকা সামনে এনেছেন সূর্যকান্ত?

১) বিজেপি (bjp) বিরোধিতায় তাঁদের ঘাটতি ছিল। অর্থাৎ বিজেপি-তৃণমূলকে একাসনে বসানো উচিত হয়নি।

২) দুটি দলকে একাসনে বসাতে গিয়ে ‘বিজেমূল’-এর মতো স্লোগান ব্যবহার করা হয়েছে। এতে বাম ভোটাররা বিভ্রান্ত হয়েছেন, কেউ আবার বিরক্তিতে তৃণমূলকে বেছে নিয়েছেন।

৩) ১০ বছরের প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার প্রেক্ষিত বদলে দিতে সরকার বেশ কিছু জনপ্রিয় স্কিম চালু করেছিল। যে স্কিমে মানুষ দারুনভাবে উপকৃত হয়। বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা করে ‘দুয়ারে সরকার’ (duare sarkar), ‘স্বাস্থ্য সাথী’ (sasthya sathi), দিদিকে বলো’কে (didike bolo) নিয়ে ব্যঙ্গ করা হয়েছে। কিন্তু মানুষ যে উপকার পেয়েছে তার অভিজ্ঞতার সঙ্গে এগুলো মেলেনি। ফলে মানুষ বাম কংগ্রেসকে পরিত্যাগ করেছে।

৪) সূর্যকান্তর অকপট স্বীকারোক্তি, ২০১৪-র লোকসভা এবং ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে তৃণমূল-বিজেপির কোথাও একটা অদৃশ্য বোঝাপড়া ছিল বলে মনে হয়েছে। কিন্তু ২০১৯ থেকে তৃণমূল কংগ্রেস সরাসরি বিজেপি বিরোধিতায় নামে, প্রবলভাবে নামে। সেখানে কোনও কৃত্রিমতা ছিল না। বামেরা তাদের ব্যঙ্গ করতে গিয়ে মানুষের থেকে নিজেরাই বিচ্ছিন্ন হয়েছে।

৫) ভোটের সময় আঘাত পাওয়া মুখ্যমন্ত্রীর হুইল চেয়ার প্রচারকে কটাক্ষ করাও মানুষ ভালোভাবে নেয়নি।

৬) সূর্যকান্ত জানান, দলের বিপর্যয়ের পর বিস্তর গালমন্দ করে বহু চিঠি দলের কাছে আসছে। সেগুলোকে উপেক্ষা করা নয়, গুরুত্ব দিয়ে পড়া হচ্ছে, ইতিবাচক বিষয়গুলোকে আত্মস্থ করার চেষ্টা চলছে।

লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো আগামিদিনে বামফ্রন্ট (left front) তাদের আন্দোলন-কর্মসূচি চালাবে। কিন্তু সংযুক্ত মোর্চার ব্যানারে নয়। কেন? সুর্যর বক্তব্য, মোর্চা থাকবে কিনা সে বিষয়ে বামফ্রন্টে আলোচনা হবে। সেখানে ছাড়পত্র পেলে তবেই পদক্ষেপ। অর্থাৎ সংযুক্ত মোর্চার (left alliance) অস্তিত্ব যে বিলোপ হয়েছে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক।

 

spot_img

Related articles

রাত পোহালে প্রথম দফার নির্বাচন বিহারে: হিংসা ঠেকানোই চ্যালেঞ্জ

নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে পরপর খুন। রাজনৈতিক নেতা থেকে সমর্থক। বিহার বিধানসভা নির্বাচনে তাই শান্তি বজায় রাখাই চ্যালেঞ্জ...

বাংলা কথায় দক্ষতা, কোন পদে পান তৃপ্তি? দীপ্তিকে নিয়ে স্মৃতির ঝাঁপি খুললেন ‘অভিভাবক’ মিঠু

সন্দীপ সুর বাংলার প্রথম ক্রিকেটার হিসাবে আইসিসি একদিনের বিশ্বকাপ জিতেছেন রিচা ঘোষ কিন্তু ভারতীয় দলের আরও এক ক্রিকেটারের সঙ্গে...

দিঘার জগন্নাথ ধামে প্রথম রাস উৎসবে ভক্তদের ঢল 

দিঘার জগন্নাথ ধামে এবারই প্রথম পালিত হল রাস উৎসব, আর সেই উপলক্ষে সকাল থেকেই উপচে পড়েছে ভক্তসমুদ্র। উৎসবের...

বেঁচে আছেন, তাই জানতে পারলেন ‘দোষী নন’: আজব বিচার উত্তরপ্রদেশে

বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে। উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ের (Aligarh) মিঠু সিংয়ের জীবনে যেন সেটাই সত্যি হতে বসেছিল। অবশেষে ৫৫...