Wednesday, December 24, 2025

“হিন্দুস্তান পাকিস্তান হবে না, কুৎসায় কান না দিয়ে ভরসা রাখুন”! হিন্দিভাষীদের বার্তা মমতার

Date:

Share post:

ভবানীপুর বিধানসভা উপনির্বাচনের আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে ৭২ নম্বর ওয়ার্ডের পদ্মপুকুর এলাকার উত্তম উদ্যানে হিন্দিভাষী মানুষদের মুখোমুখি হলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৩০ সেপ্টেম্বর উপনির্বাচনে ভবনীপুর কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী খোদ মুখ্যমন্ত্রী। ভবানীপুর বিধানসভা এলাকায় বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে হিন্দিভাষী ভোটারদের প্রভাব যথেষ্ট।

যদিও এদিন উত্তম উদ্যানে সরাসরি ভোট প্রচারে নামেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বরং, এলাকার হিন্দিভাষীদের সঙ্গে সরাসরি জনসংযোগ করলেন তিনি। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ”আমি মসজিদে গিয়েছিলাম বলে আমাকে কটাক্ষ করছে বিজেপি। আমি মন্দিরে গিয়েছি। গুরুদ্বারেও গেলাম। বিজেপির এই ধরনের কুৎসা ও নোংরামি পছন্দ করি না। গুজরাতি হোক, মারোয়াড়ি হোক-কারও খারাপ চাই না। আমি আপনাদের রক্ষা করব। পুজোর মতো ছটেও ছুটি থাকে। আমি মায়াপুরে জমি দিয়েছি। সেখানে পর্যটনস্থল হবে। মন্দির হবে। যার যা ধর্ম তাই করুন।”

মুখ্যমন্ত্রীর এই কর্মসূচিকে ভবানীপুর কার্যত মিনি ইন্ডিয়া হয়ে উঠেছিল এ দিন সম্প্রীতি ও সর্ব ধর্ম সমন্বয়ের বার্তা দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ”গুজরাত হোক, রাজস্থান হোক, ইউপি হোক বা বাংলা হোক- সকলের আলাদা সংস্কৃতি আছে। আমি মুড়িও খাই, হালুয়াও খাই। আমি রাজস্থানে গেলে যেমন আজমেঢ় শরিফে যাব। তেমনই পুস্করেও যাই। নন্দীগ্রামকে পাকিস্তান বলেছিল। ভবানীপুরকেও পাকিস্তান বলছে। এটা আমার দেশ, আমার মাতৃভূমি। অন্য কিছু কেন হবে? আমি আমার দেশ, মাতৃভূমিকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি। আপনারা শান্তিতে থাকুন। আপনারা ভালো থাকুন। এই হিন্দুস্তান আরও উন্নতি করবে। আমার লড়াই জারি থাকবে। এই মাটি হিন্দুস্তানের। এই মাটি রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দ, নজরুলের। এটাই আমাদের দেশ। আগে দেশ। পরে আমি। অনেকে রাজনীতি করতে গিয়ে কুৎসা করছে। বিভাজন করছে। আমি আপনাদের বলছি, বাংলাই হিন্দুস্তানকে রক্ষা করবে। বিশ্বাস রাখুন, হিন্দুস্তান কখনও পাকিস্তান হবে না।”

এখানেই শেষ নয়। শুরু থেকেই নোটবন্দির বিরোধিতা করে আসা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিনও সেই প্রসঙ্গ তুলে তৃণমূল বলেন, “নোটবন্দির সময় কী হয়েছিল আপনারা দেখেছেন! আমি রোজ বড়বাজার যেতাম। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলতাম।”

মূলত, ভবানীপরে শিখ, জৈন, গুজরাতি, মারাঠিসহ হিন্দিভাষী মানুষেরও তিনি ঘরের মেয়ে সেই বার্তাই দেন মুখ্যমন্ত্রী। দীর্ঘদিন তিনি দক্ষিণ কলকাতার সাংসদ ছিলেন, ভবানীপুরে এর আগে দু’বার বিধায়কও ছিলেন তিনি। তাই এখানে তিনি বাঙালি, অবাঙালি বিভাজন করেননি। তিনি বা তাঁর দল বিভাজনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন না। তাঁর কাছে সকলে সমান। তিনি সকলের জন্য কাজ করেছেন। অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে আপ্লুত এলাকার হিন্দিভাষী মানুষও। তাঁদের শরীরী ভাষায় স্পষ্ট, ৩০ সেপ্টেম্বর ঘরের মেয়ে মমতাকেই সমর্থন করবেন তাঁরা। এবং রেকর্ড মার্জিনে মুখ্যমন্ত্রীকে জেতাবেন। সব মিলিয়ে এদিনের চিত্রটা ছিল, “নানা ভাষা নানা মতো নানা পরিধান, বিবিধের মাঝে দেখো মিলন মহান।”! এ যেন একটি মিনি ইন্ডিয়া।

এদিনের এই ববৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও ছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, দক্ষিণ কলকাতা কেন্দ্রের সভাপতি তথা রাসবিহারীর বিধায়ক দেবাশিস কুমার, তৃণমূলের শাখা সংগঠন জয়হিন্দ বাহিনীর সভাপতি কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়, জোড়াসাঁকোর তৃণমূল বিধায়ক বিবেক গুপ্তা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়য়ের মুখ্য নির্বাচনী এজেন্ট বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়-সহ ভবানীপুর বিধানসভার অন্তর্গত কলকাতা পুরসভার সমস্ত ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটররা।

এদিন উত্তম মঞ্চে বৈঠক সেরে স্থানীয় লক্ষ্মীনারায়ণ মন্দির পরিদর্শনে যান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে গিয়ে সন্ধ্যা আরতি করেন।

আরও পড়ুন- NCRB রিপোর্ট: দেশে গড়ে প্রতিদিন ৮০টি খুন ও ৭৭টি ধর্ষণ, হত্যায় শীর্ষে যোগীরাজ্য

advt 19

 

spot_img

Related articles

শালবনিতে ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র, হুগলিতে ওয়্যারহাউস! সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভার 

কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি শিল্প পরিকাঠামো বৃদ্ধি করতে বড় সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে...

ডিরেক্টরেট স্তরের কর্মীদের জন্য কমন ক্যাডার গঠন, সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভায়

রাজ্য সরকার এবার সচিবালয়ের কর্মীদের মতোই ডিরেক্টরেট স্তরের কর্মীদের জন্য কমন ক্যাডার গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নবান্ন সূত্রে জানা...

পর্যটন মরশুমে নিয়মে বদল! বড়দিন ও নববর্ষে খোলা থাকবে ডুয়ার্সের জঙ্গল 

পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে ভরা পর্যটন মরশুমে বড় সিদ্ধান্ত নিল বনদফতর। জঙ্গল সাফারির সাপ্তাহিক রুটিনে সাময়িক পরিবর্তন এনে...

গান্ধীর নাম বাদের প্রতিবাদে কংগ্রেসের মিছিল ঘিরে অশান্তি

দিন কয়েক আগেই বিরোধীদের প্রবল বিক্ষোভ সত্ত্বেও মনরেগার (MGNREGA) পরিবর্তে জি রাম জি বিল পাশ করিয়েছে মোদি সরকার...