Thursday, November 6, 2025

স্বামীর শাস্তি চেয়ে আদালতে, খরচ চালাতে নিজের রক্ত বিক্রির সিদ্ধান্ত গৃহবধূর

Date:

Share post:

বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার এবং সেই অত্যাচারীদের শাস্তি দিতে গৃহবধূর আইনের দ্বারস্থ হওয়া এটা নতুন কোনও ঘটনা নয়। কিন্তু এবারের ঘটনা সম্পূর্ণ ভিন্ন। শ্বশুরবাড়িতে অত্যাচারীদের শাস্তি দিতে আদালতের দ্বারস্থ হলেও তারজন্য প্রয়োজন প্রচুর টাকার। এবার সেই টাকার জোগান দিতেই নিজের রক্ত বিক্রি করতেও পিছু পা হলেন না ওই গৃহবধূ। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে।

আরও পড়ুন – ১৮ বছরের দাম্পত্যে ইতি, আলাদা হলেন ধনুশ এবং রজনীকান্ত-কন্যা 

তবে তাঁর এই অবস্থার জন্য গৃহবধূটি পুলিশকেও দায়ী করেছেন। জানা গিয়েছে, ওই গৃহবধূর নাম মধুমিতা পাল। হুগলির (Hoogly) পাণ্ডুয়া থানা এলাকার মেয়ে মধুমিতা পুরশুড়া থানার ভাঙ্গামোড়া গ্রামের গৃহবধূ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দশেক আগে ওই গ্রামেরই বাসিন্দা দিলীপ পালের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। বর্তমানে দুই সন্তানের মা মধুমিতা। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার চাপ দিয়ে স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে মারধর থেকে মানসিক নির্যাতন চালাতো বলে অভিযোগ। অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে থাকায় গত নভেম্বরে দুই ছেলে, মেয়েকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে আসেন তিনি। এরপর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে হুগলীর (Hoogly) চুঁচুড়া আদালতে বধূ নির্যাতনের মামলা দায়ের করেন। কিন্তু হাতে টাকা নেই। তাই টাকার জন্য তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতাল রক্ত বিক্রি করতে আসেন মধুমিতা।

তবে পুলিশ তাঁকে সাহায্য করলে এই পদক্ষেপ করতে হত না বলে অভিযোগ গৃহবধূর।
মধুমিতার কথায়, ‘আমি চাই, আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের শাস্তি হোক। তার জন্য পুরশুড়া থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে আমাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় এবং পাণ্ডুয়া থানায় অভিযোগ জানাতে বলে। তারপর বারবার আমি পাণ্ডুয়া থানায় ছুটেছি। কিন্তু পুলিশ পাত্তা দেয়নি।’ বাধ্য হয়ে আমি চুঁচুড়া কোর্টে বধূ নির্যাতনের মামলা দায়ের করেছি। সেই মামলার টাকা জোগাড় করতেই রক্ত বিক্রি করতে যান তিনি।

এই বিষয়ে মধুমিতা বলেন, ‘মামলা চালাতে অনেক খরচ। উকিলের জন্য টাকা লাগবে। আমার কাছে টাকা কোথায়! তাই বাধ্য হয়েই আমি রক্ত বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যদিও হাসপাতালে যাওয়ার পর হাসপাতাল কর্মী এবং স্থানীয় অ্যাম্বুলেন্স চালকেরা বুঝিয়ে মধুমিতাকে নিরস্ত করেন। সরকারি হাসপাতালে যে রক্ত বিক্রি হয় না, তা জানতেন না বলেও দাবি মধুমিতার। যদিও মধুমিতাকে সাহায্য না করার অভিযোগ অস্বীকার করে পাণ্ডুয়া থানার এক আধিকারিক বলেন, ‘ওই ভদ্রমহিলা ঠিক বলছেন না। এই থানায় বধূ নির্যাতনের কেস হয়েছে। বর্তমান আইনানুযায়ী বধূ নির্যাতন মামলায় সহজে গ্রেফতার করা যায় না। আমরা নোটিস পাঠিয়েছি। পদ্ধতি মাফিক এগোনো হচ্ছে।’ তাঁর আরও দাবি, ‘ওই মহিলার ভাই এই থানার সিভিক। তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেই আসল তথ্য বের হয়ে যাবে।’ সবমিলিয়ে, গোটা ঘটনায় প্রশাসনিক স্তরেও চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।’

spot_img

Related articles

KIFF: সিনেপার্বণের সূচনায় আজ শহরে নক্ষত্র সমাবেশ, বিকেলে ফিল্মোৎসবের উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী

রুপোলি সিনেমা শহরে দিল পা, বছর ঘুরে আবার এল কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (31st Kolkata International Film Festival...

সুপ্রিম নির্দেশে রাজ্যে ফের শুরু ১০০ দিনের কাজ, নবান্নে তৎপরতা তুঙ্গে 

প্রায় তিন বছর পর ফের রাজ্যে শুরু হতে চলেছে কেন্দ্রীয় ১০০ দিনের কাজ (এমজিএনআরইজিএ) প্রকল্প। সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা...

রাত পোহালে প্রথম দফার নির্বাচন বিহারে: হিংসা ঠেকানোই চ্যালেঞ্জ

নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে পরপর খুন। রাজনৈতিক নেতা থেকে সমর্থক। বিহার বিধানসভা নির্বাচনে তাই শান্তি বজায় রাখাই চ্যালেঞ্জ...

বাংলা কথায় দক্ষতা, কোন পদে পান তৃপ্তি? দীপ্তিকে নিয়ে স্মৃতির ঝাঁপি খুললেন ‘অভিভাবক’ মিঠু

সন্দীপ সুর বাংলার প্রথম ক্রিকেটার হিসাবে আইসিসি একদিনের বিশ্বকাপ জিতেছেন রিচা ঘোষ কিন্তু ভারতীয় দলের আরও এক ক্রিকেটারের সঙ্গে...