Saturday, August 23, 2025

লন্ডভন্ড বিজেপি : কোন জুটিকে কাঠগড়ায় তুলছেন সুকান্ত মজুমদার?

Date:

Share post:

রাজ্য বিজেপিতে এখন জুটিতে লুটি। লুঠ করতে গিয়ে তস্কর ধরা পড়েছে। সর্বসমক্ষে এনে তাদের বিচার হচ্ছে। সে এক কেলোর কীর্তি! আর বেচারা গৃহকর্তাকে ধরে জেরা করা হচ্ছে। কেন? বলা হচ্ছে আপনাকে বেঁধে রেখে ওরা লুঠপাট করল, আর আপনি মশাই কিছু জানেন না বললে হবে! ল্যাটা বোঝো! মাঝখান থেকে এক প্রাক্তন সবটুকু ক্ষীর খেয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। নেপোয় মারে দই।

আরও পড়ুন:Mumbai:নৌসেনার যুদ্ধজাহাজে বিস্ফোরণ, নিহত ৩ সেনা

রাজ্য বিজেপি এই মুহূর্তে লন্ডভন্ড। মুরলি ধর সেন রোডের অফিসে কর্মীরা ঢুকতে ভয় পাচ্ছেন। কেন? কারণ, একদিকে পদাধিকারীরা, অন্যদিকে মতুয়া, আর এক দিকে আদি বিজেপি। সকলে বলছে, লড়াই লড়াই লড়াই চাই/ লড়াই করে পদে আসতে চাই। সেটা কীরকম? বিজেপির সব কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। কমিটি শূন্য। জেলায় জেলায় কমিটি নিয়ে বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল প্রথমে। তারপর ধুপধাপ পদত্যাগ। তারপর মতুয়া বিদ্রোহ। এরপর দলের আদিদের প্রকাশ্য অনাস্থা। নিট ফল ছন্নছাড়া বিজেপি।

কিন্তু এমনটা হলো কী করে? দিলীপ ঘোষ রাজ্য সভাপতি থাকার সময় সেভাবে কেউ তাঁর উপরে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারতেন না। দিলীপ-সুব্রত জুটিই রাজ্যে সাফল্য এনে দিয়েছেন। ১৮ লোকসভা আসন তাঁদের সৌজন্যেই। কিন্তু দলে পেগাসাস অধিকারী আসার পরেই সংগঠনে নিজের প্রতিপত্তি বাড়াতে মন দিলেন। দলের কোনও পদ নিলেন না, কিন্তু দলকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা শুরু আসার পরদিন থেকে। দিল্লিকে এমন হাবভাব দেখালেন, যেন রাজ্যটা তাঁর হাতের মুঠোয়। দিল্লিকে বোঝালেন ক্ষমতায় আসতে গেলে দলের সাংগঠনিক সম্পাদককে সরিয়ে ইয়ং ব্লাড নিয়ে আসতে হবে। পেগাসাস অধিকারীকে সামনে রেখে দিল্লির চোখে তখন রঙিন স্বপ্ন। তাই দিলেন সরিয়ে সুব্রতকে। এলেন অমিতাভ চক্রবর্তী। আর সেদিন থেকেই রাজ্য সভাপতিকে সরিয়ে দেওয়ার চাল শুরু হলো। বোঝালেন এখানেও নতুন মুখ দরকার, ফ্রেশ মুখ দরকার এবং জুটি বলেও তো একটা ব্যাপার আছে! তাই দিলীপের মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রায় এক বছর আগেই সরিয়ে দেওয়া হলো। কাকে সরানো হলো? যিনি রাজ্য বিজেপিকে ঐতিহাসিক সাফল্য দিয়েছেন। যাঁকে ছোঁয়া মুশকিল। পায়ে কুড়ুল মারা শুরু।

এলেন সুকান্ত মজুমদার। উত্তরবঙ্গকেই যিনি ভাল করে চেনেন না, তিনি কিনা রাজ্য সভাপতি! আসলে সামনে সুকান্ত, পিছনে পেগাসাস অধিকারী। রিমোর্টে পার্টি চালানোই লক্ষ্য। এরপর শুরু নিজের পকেটের লোকজনকে বসানো। আর সেটায় যথেচ্ছাচার করতে গিয়ে দলটাকেই কার্যত হস্টাইল করে দিলেন। সারাজীবন যিনি ‘কোটারি’তে খেলে এসেছেন, তার বাইরে তিনি যাবেন কী করে! অন্যদিকে অমিতাভ চক্রবর্তী সারাজীবন আরএসএস করে এসেছেন। বিজেপির সাংগঠনিক সম্পাদক হয়ে কাণ্ডজ্ঞান হারালেন। দুয়ে মিলে কমিটি গঠন। সুকান্ত সেখানে হাতের পুতুল। ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি নাকি বলেছেন, অর্ধেক নিয়োগের কথা আমায় জানান হয় না। খবরে জানতে পারি। অথচ আমাকে না জেনেই হ্যাঁতে হ্যাঁ মেলাতে হচ্ছে। পাপের দায় নিতে হচ্ছে। পেগাসাস আর অমিতাভ সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, নিজেরাই ইমপ্লিমেন্ট করছেন। আর সংবাদ মাধ্যমের সামনে তার দায় নিতে হচ্ছে সুকান্তকে। বিরক্ত সুকান্ত তাই বালুরঘাটে যাওয়া বাড়িয়ে দিয়েছেন।

ঘনিষ্ঠ মহলে সুকান্ত বলেছেন, দলটার বারোটা বাজাচ্ছে রাজ্য সম্পাদক, দলবদলু নেতা ছাড়াও আর এক ব্যক্তি, যিনি অতীতে তথাকথিত সাংবাদিকতা করে এখন পেগাসাসের স্তাবকে পরিণত হয়েছেন। আমাকে সময় দিন, সব ষড়যন্ত্র উপড়ে ফেলব। আমিও জানি, এটা না করতে পারলে রাজ্যে বিজেপির ভবিষ্যত শূন্য।

পেগাসাস অধিকারী আর তার স্তাবকের বিরুদ্ধে পোস্টার পড়া শুধু ক’টা দিনের অপেক্ষা।

spot_img

Related articles

ফের ডুরান্ড কাপ জয় নর্থইস্টের

প্রতিযোগিতায় দুরন্ত শুরুটা করলেও শেষরক্ষা করতে পারল না। একটানা ম্যাচ। নর্থইস্ট ইউনাইটেডের(North East United) বিরুদ্ধে খানিকটা ক্লান্তিটাই যেন...

‘মাখন চোর’ বলা যাবে না! কৃষ্ণের লীলা বদলানোর চেষ্টা মধ্যপ্রদেশে, কড়া জবাব বিরোধীদের

এবার বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর আজব দাবি! কৃষ্ণের লীলা বদলানোর চেষ্টা করছে গেরুয়া শিবির। শ্রীকৃষ্ণকে ‘মাখন চোর’ বলায়...

মোদি-শাহ যেখানে যাবে, সেখানেই জিতবে তৃণমূল

মোদি-শাহ বাংলার যেখানে পা দেবে সেখানেই জিতবে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। ওরা যত ডেইলি প্যাসেঞ্জারি করবে তত ভোট বাড়বে...

বাংলা ভাষার অপমান মানব না, সরব গর্বিত বাঙালি ঋতুপর্ণা

বিজেপি রাজ্যে বাংলাভাষীদের হেনস্থা, ক্রমাগত বাংলা ভাষার অপমানে গর্জে উঠেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। বাংলা ভাষা ও বাঙালির...