Monday, August 25, 2025

বাংলাদেশে ভাসমান হোটেলে থাকতে খরচ মাত্র ৫০ টাকা !

Date:

Share post:

বিশেষ প্রতিনিধি , ঢাকা:

এবার খোঁজ মিলল ভাসমান হোটেলের! ওই ভাসমান হোটেল আছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীতে বাবুবাজার সেতুর ঠিক নিচেই মিটফোর্ড মর্গের পাশেই আছে বেশ কিছু ভাসমান হোটেল। আসলে সেখানে নদীর তীরে বাঁধা আছে কয়েকটি নৌকা। সেই নৌকাকেই হোটেলের আকার দেওয়া হয়েছে। থাকার বন্দোবস্তও রয়েছে। আছে বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধাও।
কম টাকায় থাকা যায় বলে ওই হোটেলের ঘরে এসে থাকেন অনেকেই।হোটেল হিসেবে সাজানো নৌকাগুলি দোতলা। এই রকম অন্তত পাঁচটি ভাসমান হোটেল আছে সেখানে। নৌকার মধ্যেই হোটেলের রুমের মতোই আছে অনেকগুলি ঘর। সেগুলির উচ্চতা, দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ যথাক্রমে ছ’ ফুট, সোয়া চার ফুট ও আড়াই ফুট। আকার অনুযায়ী, প্রতিটি ঘরের ভাড়া ৫০ থেকে ১৫০ টাকা। তবে ১৫০ টাকার ঘরগুলি তুলনায় একটু বড়। সেখানে একসঙ্গে পাঁচ জন মানুষ থাকতে পারেন।
ভাড়া অল্প হলেও এসব হোটেলের যাঁরা থাকেন তাঁরা কম সুবিধা পান না। শীতের সময়ে লেপ, কম্বল, তোষক, বালিশ, পানীয় জল, মোবাইল চার্জার সহ সব ধরনের বৈদ্যুতিন সুবিধার ব্যবস্থা আছে এখানে। ওই ঘরগুলি সকাল ছ’টা থেকে রাত দু’টো পর্যন্ত খোলা থাকে।
শরীয়তপুর মুসলিম বোর্ডিংয়ের ম্যানেজার শাহ জামাল জানান, ওই বোর্ডিংয়ের মালিক আবদুস সাত্তার ১৯৬০ সালে এই ব্যবসা শুরু করেছিলেন। তিনি মারা যাওয়ার পর তার ছেলে ওই ব্যবসা চালাচ্ছেন । দোতলা হোটেলে মোট ৫২টি ঘর আছে। তিনি জানান, সাধারণত নিম্ন আয়ের মানুষরাই এখানে থাকতে আসেন। বিশেষ করে যাদের কোনও সুনির্দিষ্ট আয়ের উৎস নেই। এমন কিছু মানুষ আছেন যাঁরা বছরের পর বছর সেখানেই আছেন। একজন তো প্রায় ৪০ বছরের বেশি সময় সেখানে আছেন বলেও, জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘গ্রাহকদের সুবিধাকে মাথায় রেখে ঘরের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। আমরা তাঁদের বিনামূল্যে কম্বল, জল ও বিদ্যুতের সুবিধা দিই।’পুরাতন ঢাকার বাদামতলি এলাকার ফল বিক্রেতা হাসান । তিনি জানান , তিনি প্রায় ছ’ মাস ধরে আছেন সেখানে। তিনি যে ঘরে থাকেন সেটার ভাড়া ৮০ টাকা। তিনি বলেন, ‘আগে আমি একটা মেসে থাকতাম। সেখানে খরচ বেশি পড়ত। কিন্তু এখানে অনেক কম টাকায় থাকতে পারছি। সেই সঙ্গেই বাড়তি কিছু সুবিধাও পাওয়া যায়।’

ফরিদপুর মুসলিম বোর্ডিংয়ের ম্যানেজার মোস্তফা কামাল জানান, তাঁরা ওই হোটেল প্রায় ৩৩ বছর ধরে চালাচ্ছেন। তাঁর হোটেলে এখন ৪৮টি ঘর আছে। সবুজ মিয়ার বোর্ডিংয়ের আগের নাম ছিল বুড়িগঙ্গা বোর্ডিং। সেখানে প্রায় ৩০টি ঘর রয়েছে। এই সব হোটেলে রান্নার কোনও ব্যবস্থা নেই। খাবার আনতে হয় বাইরে থেকে।

তবে একটা সমস্যা আছে । সেটা হল মশার উপদ্রব ও বুড়িগঙ্গার পচা গন্ধ। কিন্তু, সেই সমস্যাকে আমল দিতে চান না এই ভাসমান হোটেলে বসবাসকারীরা। কারণ, নদীর ঢেউয়ে নৌকার মৃদু দুলুনি উপভোগ করতে করতেই সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করেন তাঁরা।

spot_img

Related articles

কলকাতার সর্বজনীন পুজো ডিরেক্টারি: দু-মলাটে বাংলার দুর্গোৎসবের ৪৩৪ বছরের ইতিহাস

রবিবাসরীয় সন্ধেয় গড়িয়াহাটের একটি ব্যাঙ্কয়েটে আড্ডার আবহে প্রকাশিত হল সাংবাদিক-লেখক সম্রাট চট্টোপাধ্যায়ের বই 'কলকাতার সর্বজনীন পুজো ডিরেক্টারি'। উপস্থিত...

তৃণমূল–সমাজবাদী পার্টির পথে এবার আম আদমি পার্টি! জেপিসিতে থাকছে না আপও 

সংবিধান সংশোধনী বিল খতিয়ে দেখতে গঠিত যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিল আম আদমি পার্টি।...

মোদির বিরুদ্ধে সরব! হিটলারি কোপে লাদাখের সোনম ওয়াংচু

দফা এক দাবি এক। লাদাখের জন্য একই দাবিতে আজও অনড় সমাজকর্মী সোনম ওয়াংচু (Sonam Wangchuk)। লাদাখের জমি, যা...

শান্তিপুরে মহিলা স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর ভোটে গোহারা বিজেপি! ২৬-৪-এ জয়ী তৃণমূল 

এসআইআর ইস্যু নিয়ে রাজ্যে বিজেপির মাতামাতির মধ্যে নদিয়ার শান্তিপুরে মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ক্লাস্টার কমিটির নির্বাচনে বড় সাফল্য পেল...