Bappi Lahiri:সোনাকে কেন ভগবান বলতেন বাপি লাহিড়ি, জানেন?

মঙ্গলবার সন্ধ্যেয় ঘুমের দেশে পাড়ি দিয়েছেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। তারপরই বুধবার সকালেই সুরসম্রাট বাপি লাহিড়ি চলে যাওয়া। একে একে সঙ্গীত জগতের নক্ষত্রপতন। পর পর দুই সংগীত শিল্পীর চলে যাওয়ায় শোকস্তব্ধ সঙ্গীত দুনিয়া ৷ বাপি লাহিড়ি রেখে গেলেন তাঁর হাজার কম্পোজিশন যা যুগ যুগ ধরে মানুষের মনে থেকে যাবে৷ নিজের সঙ্গীত ছাড়া আরও একটা জিনিসের জন্য বাপ্পি লাহিড়ির স্মৃতি সকলের মনে অমলিন থাকবে  তা হল বাপি লাহিড়ির সোনার সংগ্রহ। যেখানেই যেতেন দেবদেবীর মূর্তির লকেট দেওয়া সোনার হার পড়তেন। একবার এক সাক্ষাৎকারে তাঁকে জিজ্ঞেস করতেই বলেছিলেন, ‘সোনা আমার ভগবান।’ সোনার গয়না তাঁর জন্য পয়মন্ত ছিল বলেই মনে করতেন তিনি।

আরও পড়ুন:অবসট্রাক্টিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া অসুখে প্রয়াত বাপ্পি লাহিড়ি, জানুন কী এই রোগ

সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন ,‘আমার মা আমাকে একটা সোনার হার দিয়েছিলেন। তাতে হরে রাম হরে কৃষ্ণ লকেট ছিল। এরপরেই আমার প্রথম ব্লকবাস্টার জখমি। মা আমাকে সোনার হার দিয়ে বলেছিলেন, এতে আমার ভাল হবে। এরপর থেকে আমি যত সোনার হার পেয়েছি, ততই বক্স অফিসে সাফল্য এসেছে।’

বাপি লাহিড়ি জানান, ‘আমি সবসময় পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে সোনা পেয়েছি। আমার মায়ের পরে স্ত্রী চিত্রাণী একটা সোনার হার উপহার দেয়। তার সঙ্গে গণেশের বড় লকেট ছিল। ১৯৭৭ সালে আমার জন্মদিনে এই উপহার দেয় স্ত্রী। এরপরেই ‘আপ কি খাতির’, ‘বোম্বাই সে আয়া মেরা দোস্ত’-এর মতো দুর্দান্ত সাফল্য পাই।’

বাপি লাহিড়ি আরও জানান, ‘আমার কাছে সাতটি সোনার হার আছে। গণেশ আমার জীবনে বড় পরিবর্তন আনেন। আমি সিদ্ধিবিনায়ক ও লালবাগচা রাজার ভক্ত। একদিন আমি স্বপ্নে আদেশ পাই, বুকে গণপতি রাখতে হবে। এরপরেই গানের জন্য গিনেস বুকে আমার নাম ওঠে।’

মাত্র তিন বছর বয়স থেকেই তবলা বাজানো শেখা শুরু করেছিলেন বাপি লাহিড়ি। ১৯ বছর বয়সে তিনি মুম্বই পাড়ি দিয়েছিলেন, ১৯৭৩ সালে তিনি প্রথম সঙ্গীত নির্দেশনা করেন। ৮০-র দশকে নিজের গানের জন্য সকলকে মুগ্ধ করে দিয়েছেন৷ সকলেই তাঁর সুরে ডিস্কো ডান্স করেছেন৷ ১৯৮২ সালে মিঠুন চক্রবর্তী -র ছবি ডিস্কো ডান্সার ইতিহাস রচনা করেছেন৷ এক প্যাশনের সঙ্গে তাঁর গান শোনা হত৷ তবে ৮০-র দশকের গান সেই সময়ের গণ্ডি পেরিয়ে ছড়িয়ে গেছে দেশ কালের সীমা অতিক্রম করে৷এরপর একের পর এক হিট গান উপহার দিয়েছেন বাপি লাহিড়ি। বাংলা সঙ্গীতকে যেমন উচ্চমানের সঙ্গীত উপহার দিয়েছিলেন তেমনি বলিউডও তাঁকে এনে দিয়েছে জনপ্রিয়তা।

জানা যায়, বাপি লাহিড়ি সিনেমার একটা গানের জন্য ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকা পারিশ্রমিক নিতেন৷ তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৩ মিলিয়ন ডলার যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২২ কোটি টাকার সম্পত্তি৷ এছাড়াও তাঁর মাসিক আয় ছিল ২০ লক্ষ টাকা এবং বাৎসরিক আয় ২ কোটি টাকারও বেশি ছিল৷ বিভিন্ন মিউজিক কম্পোজিশনের পাশাপাশি স্টেজ শো-থেকে প্রচুর রোজগার করতেন৷

তাঁর সোনার গয়না ছাড়া দামি গাড়ির প্রতিও দারুণ আকর্ষণ ছিল৷ তাঁর মহারাষ্ট্রের মুম্বইতে ২০০১ বাড়ি কেনেন৷ তাঁর বাড়ির ভ্যালু ৩.৫ কোটি টাকার৷ বাপ্পি লাহিড়ির ৫ টি অত্যন্ত দামি গাড়ির মধ্যে BMW, AUDI-র মতো গাড়ি ছিল৷ তাঁর কাছে ৫৫ লক্ষ টাকার টেসলা গাড়িও ছিল৷