Wednesday, November 12, 2025

ভাসছে অসম, প্রচারে হিমন্ত! ত্রিপুরায় পরিবর্তন চাইলে তৃণমূলই একমাত্র বিকল্প: তৃণমূল নেতৃত্ব

Date:

Share post:

সোমনাথ বিশ্বাস, আগরতলা

ভয়ঙ্কর বন্যা পরিস্থিতি অসমে (Assam)। আর সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা (Himant Biswasharma) ত্রিপুরায় (Tripura) উপনির্বাচনের প্রচার করে বেড়াচ্ছেন। ঘটনাটি নিয়ে রবিবার, আগরতলায় সাংবাদিক বৈঠক থেকে তীব্র কটাক্ষ করলেন তৃণমূল (TMC) মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। তিনি বলেন, “নির্লজ্জ মুখ্যমন্ত্রী আজ এখানে ভোট প্রচার করছেন। নিজের রাজ্যে মানুষের পাশে নেই। এখানে ভোট প্রচারে এসেছেন। এই অবস্থা থেকে বেরোতে চাইলে তৃণমূলকে ভোট দিন।“ এদিনই, সুর্মায় প্রচার করেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী। ত্রিপুরায় মুখ্যমন্ত্রী বদল প্রসঙ্গে কুণালের মন্তব্য, বিজেপি একটি মুখ্যমন্ত্রী নিয়ে সামলাতে পারে না। তাদের প্রকল্প বাস্তবায়ন হয় না।

আরও পড়ুন- কংগ্রেসের সত্যাগ্রহ, শান্তি বজায় রেখে প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়ার বার্তা প্রিয়াঙ্কার
নতুন ত্রিপুরায় বিজেপি বিরোধীর জায়গায় নেই সিপিআইএম-কংগ্রেস (CPIM-Congress)। বাংলার মানুষ টানা তিনবার জিতিয়েছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee)। ভোটের আগে আগরতলা ভাসছে, এটা নাকি বিজেপির স্মার্ট সিটি! কটাক্ষ করেন কুণাল। বলেন, “বাম জমানায় কলকাতায় ৫দিন জল জমে থাকত। এখন ৫ ঘণ্টায় নেমে যায়। আগামিদিনে ৫ মিনিটে নেমে যাবে। আমরা ত্রিপুরার মানুষের পাশে আমাদের কর্মীদের দাঁড়াতে বলেছি। এই দুর্যোগ মোকাবিলায় পাশে দাঁড়িয়ে থাকব আমরা।“
কলকাতা পুরসভার দুই কাউন্সিলরও ত্রিপুরায় এসেছেন- ২৮নম্বর ওয়ার্ডের অয়ন চক্রবর্তী ও ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের শচীন সিং। ত্রিপুরায় ভোট প্রচারে এসেছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। কুণাল বলেন, “কলকাতার প্রতিটি ওয়ার্ডে যান। শহর, পঞ্চায়েত চলে যায় মানুষের দুয়ারে। উন্নয়ন আমাদের নিজের অধিকার। ভোট আসবে। ভোট যাবে। বাংলা গোটা দেশের মডেল। তাহলে কেন ত্রিপুরায় নয়। কেন এই অবস্থা?“
ত্রিপুরার ভোট প্রচারে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) নিজে শেষ লগ্নের প্রচারে থাকছেন। বিজেপির প্রচারকদের নিয়েও কটাক্ষ করেন কুণাল। বলেন, “স্টার নেই, তার আবার স্টার ক্যাম্পেনার। ওই তো লকেট চ্যাটার্জি এসেছেন আজ। তিনি গিয়ে বসে থাকতেন উত্তরাখণ্ডে। লকেট স্টার ক্যাম্পেনার হলে বাংলায় প্রচার করেনি কেন?”
তৃণমূল নেতা মানস ভুঁইয়া (Manas Bhuiya) বলেন, অতীতের সিপিআইএম-কংগ্রেস আর এখন বিজেপি ত্রিপুরাকে ধ্বংস করেছে। কিছুদিন কাজ করার মধ্যে দিয়ে ত্রিপুরার মানুষের আশীর্বাদ তৃণমূল পেয়েছে। কংগ্রেস ক্ষয়ে যেতে যেতে মাটিতে মিশে গেছে। এবারএকমাত্র বিকল্প তৃণমূল। বাংলার মতো প্রকল্প এই রাজ্যের মাটিতে কেন বাস্তবায়ন হচ্ছে না? প্রশ্ন তোলেন মানস ভুঁইয়া।
মানসের মতে, সিপিআইএম মানে অত্যাচারী শাসক। কংগ্রেসকে ভোট দেওয়া মানে নেতিবাচক। ওদের ভোট দেওয়া মানে তা নষ্ট করা। আর বিজেপি মানুষের মৌলিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে। উন্নয়নের ধ্বজা তুলে এগিয়ে চলেছে তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে, অভিষেকের সেনাপতিত্বে এগিয়ে চলতে হবে।
ত্রিপুরায় তৃণমূল প্রার্থীদের উপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে সরব হন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুবল ভৌমিক (Subal Bhowmik)। বলেন, তাঁদের প্রার্থীদের পরিকল্পিতভাবে আক্রমণ করা হয়েছে। ত্রাণ শিবিরে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন। ২৪ ঘণ্টা হয়ে গেলেও কোনও পদক্ষেপ নেয়নি কমিশন। পুলিশ ঠুঁটো জগন্নাথ। “২৩ তারিখ যতই দুর্যোগ থাকুক, সকলে বেরিয়ে এসে ভোট দিন। গণতন্ত্ররক্ষার লড়াইয়ে তৃণমূল রাস্তায় থাকবে।“ বার্তা সুবলের।
তৃণমূলনেত্রী তথা অভিনেত্রী কৌশানী মুখোপাধ্যায় (Koushami Mukharjee) বলেন, “এই প্রথম ত্রিপুরায় এলাম। অভিজ্ঞতা খুব খারাপ। এটা স্মার্ট সিটি হতে পারে না। বাংলায় এই ছবি দেখা যায় না। অভিনেত্রী ইমেজ নিয়ে নয়, মাটিতে নেমে কাজ করতে হবে।“ তাঁর কথায়, ভয়, হুমকি দিয়ে তৃণমূলকে আটকানো যাবে না। তৃণমূলের আরেক নাম লড়াই। তাই লড়াই করে বাঁচতে হবে। মহিলা নিরাপত্তায় তৃণমূলকে জয়ী করার আহ্বান জানান কৌশানী।
সাংবাদিক বৈঠকে “ত্রিপুরাও দিদিকে চায়” বলে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করা হয়। যেখানে ত্রিপুরাবাসীর জন্য একাধিক জনমুখী প্রকল্পের উল্লেখ ও ব্যাখা রয়েছে। তৃণমূল ক্ষমতার এলে, ত্রিপুরাবাসীর উন্নয়নের পরিকল্পনা।

 

spot_img

Related articles

লক্ষ্য ২০২৭! ২৫ নভেম্বর শুরু ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ

ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হচ্ছে আগামী ২৫ নভেম্বর থেকে। রাজ্যের সেচ ও জলপথ মন্ত্রী মানস...

রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কে স্বচ্ছতা আনতে চালু অনলাইন অডিট ব্যবস্থা

রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কগুলির আর্থিক লেনদেনে স্বচ্ছতা আনতে বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। এ বার থেকে সমস্ত সমবায় সমিতি...

সরকারি প্রকল্পে স্বচ্ছতা বাড়াতে চালু হচ্ছে জিও ট্যাগিং ব্যবস্থা! নির্দেশিকা জারি নবান্নের 

সরকারি প্রকল্পের বাস্তবায়ন ও তদারকিতে আরও স্বচ্ছতা আনতে বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। নবান্নের নির্দেশে এবার থেকে রাজ্যের...

মুখ্যমন্ত্রীকে কটূক্তি! ‘নারীবিদ্বেষী’ শান্তনু ঠাকুরের ইস্তফার দাবি তৃণমূলের

বিজেপি বাংলাকে সম্মান করে না। এই বিজেপি মহিলাদেরও সম্মান করে না, করতে জানেও না। সেটা আরও একবার প্রমাণ...