আজ ২৪ জুলাই, বাংলার সিনে জগতে মন খারাপ করা একটা দিন। বাঙালির প্রিয় ম্যাটিনি আইডল মহানায়ক উত্তম কুমারের (Uttam Kumar)৪২তম মৃত্যু বার্ষিকী আজ। মাত্র ৫৩ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে যিনি মারা যান, আজ এত বছর পরেও তাঁর ক্যারিশমা সমান ভাবে জনপ্রিয় বাঙালির মনের মণিকোঠায়। আজকের দিনটিকে ভুলতে পারেন না কেউই। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী (CM)নিজেও ২৪ জুলাইকে স্মরণে রেখে উত্তম কুমারকে (Uttam Kumar) শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে ট্যুইট করেছেন।

উত্তমকুমার বাঙালির আবেগের নাম। মহানায়কের মৃত্যুর পর প্রায় চার দশক পার হয়ে গিয়েছে, তবু আজও বাঙালির স্মৃতিতে অমলিন উত্তম। তাঁর তাকান, হাঁটা চলা, কথা বলা, ম্যানারিজম, সংলাপ বলার দক্ষতা – সব মিলিয়ে তিনি সাদা কালো বিনোদন জগতের উজ্জ্বল রঙিন নক্ষত্র তিনি। আজ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে লেখেন, ”কিংবদন্তি মহানায়ক উত্তম কুমারের মৃত্যুবার্ষিকীতে আমার আন্তরিক শ্রদ্ধাঞ্জলি। তিনি ছিলেন আমাদের দেশের সবচেয়ে প্রিয় ম্যাটিনি আইডলদের একজন। আজও আইকন হয়েই আমাদের হৃদয়ে তিনি বাস করছেন।”
My sincerest tribute to legendary Mahanayak Uttam Kumar on his death anniversary. He was one of the most beloved matinee idols of our country. The icon resides in our hearts even today.
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) July 24, 2022
বাঙালির প্রিয় ‘নায়ক’ উত্তম, কখন যে মহানায়ক হয়ে গেছেন তা বোধহয় সিনে দুনিয়ায় বুঝে উঠতে পারে নি। তাঁর উপস্থিতি, তাঁর অভিনয়, তাঁর আকর্ষণ সব কিছু যেন আজও বাঙালির কাছে জীবন্ত। উত্তম কুমার অভিনীত প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘দৃষ্টিদান’। এরপর ধীরে ধীরে আরও একাধিক ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। তার অভিনীত ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ মুক্তি পাওয়ার পরই তিনি চলচ্চিত্রে স্থায়ী একটা জায়গা তৈরি করতে পেরেছিলেন।এই ছবিতেই তিনি প্রথম সুচিত্রা সেনের (Suchitra Sen)বিপরীতে অভিনয় করেন। উত্তম-সুচিত্রার প্রথম পর্দায় আবির্ভাবের এই ছবিটি ব্যাপক সাড়া ফেলে। অনস্ক্রিন রোমান্সের সেরা জুটি হিসেবে আজও থেকে গেছেন তাঁরাই। মোট ২১১টি বাংলা ছবিতে অভিনয় করেছেন উত্তম কুমার (Uttam Kumar)। তিনটি ছবি পরিচালনার কাজও করেন তিনি। সত্যজিৎ রায়ের (Satyajit ray) বিখ্যাত দুটি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন উত্তম। প্রথমটি ‘নায়ক’ (Nayak), দ্বিতীয়টি ‘চিড়িয়াখানা’ (Chiriyakhana)। নায়ক ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমেই তিনি বাঙালির চিরায়ত নায়ক চরিত্রের প্রতিনিধি হয়ে ওঠেন। নায়ক বলতে বাঙালি দর্শকের চোখে ভেসে ওঠে যে চেহারা, তা উত্তম কুমারেরই চেহারা। এই ছবিতে উত্তমের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন শর্মিলা ঠাকুর। ১৯৬৭ সালে অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি ও চিড়িয়াখানা ছবির জন্য তিনি জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন। তাঁর হঠাৎ চলে যাওয়া আজও মেনে নিতে পারেন নি দর্শক। তিনি আজও রয়ে গেছেন বাঙালির আবেগে আর নস্টালজিয়ায়।
