শৈশব থেকেই মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন রবীন্দ্রনাথ। প্রিয়জনেরা ছেড়ে চলে গিয়েছেন একে একে। তার মধ্যেও তিনি ছিলেন অনন্য সৃষ্টিশীল। তাঁর বিভিন্ন রচনায়, গানে, কবিতায় ফুটে উঠেছে গভীর মৃত্যুচেতনা। তাঁর রচনায় নানারূপে দেখা দিয়েছে চিরবিচ্ছেদ। সম্প্রতি পেরিয়ে গেল বিশ্বকবির মৃত্যুদিন। রবীন্দ্রনাথের মৃত্যু চেতনা এবং বাইশে শ্রাবণ নিয়ে অনবদ্য এক গীতি-আলেখ্য উপহার দিল পিকাসো। শুক্রবার, জ্ঞান মঞ্চে পরিবেশিত হল গীতি-আলেখ্য “যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন”। গীতি-আলেখ্যর ভাষ্য রচয়িতা সাহিত্যিক রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানে একেবারে অন্য রূপে পাওয়া যায় টেকনো ইন্ডিয়ার কর্ণধার সত্যম রায়চৌধুরীকে। রায়া ভট্টাচার্যের সঙ্গে অনুষ্ঠানে ভাষ্যপাঠ করেন তিনি। রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বাঙালিরা তিনটি তারিখ মনে রাখে। পয়লা বৈশাখ, পঁচিশে বৈশাখ, বাইশে শ্রাবণ। নশ্বর জীবন ত্যাগ করে বাইশে শ্রাবণ রবীন্দ্রনাথের অনন্তে উত্তরণ ঘটেছিল।” গানে ছিলেন অদিতি গুপ্ত, শান্তনু রায়চৌধুরী। তাঁদের পরিবেশনা উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাদের মুগ্ধ করে। যন্ত্রানুষঙ্গে ছিলেন পণ্ডিত বিপ্লব মণ্ডল, সুব্রত বাবু মুখোপাধ্যায়, সৌম্যজ্যোতি ঘোষ।

রোগশয্যায় মুখে বলা রবি ঠাকুরের রচনার অনুলিপিকার ছিলেন রানি চন্দ। সেইসময় রবীন্দ্রনাথ তাঁর কাছেও প্রকাশ করেছেন মৃত্যু সম্পর্কে নিজের উপলব্ধির কথা। শেষ কয়েক বছর অসহ্য রকমের রোগ-যন্ত্রণায় বিদ্ধ ছিলেন কবি। ভেঙে পড়েছিল শরীর। সক্রিয়তা বাড়ছিল শল্য চিকিৎসকদের। কবি বুঝতে পারছিলেন, ফুরিয়ে আসছে আলো।

প্রিয় বর্ষার আবহে, বাইশে শ্রাবণ অবসান ঘটল সমস্ত যন্ত্রণার। তবে তিনি মৃত্যুহীন প্রাণ। সেই সুরটিই ধ্বনিত হয় অনুষ্ঠানে।

আরও পড়ুন- স্বেচ্ছামৃত্যুর জন্য বিদেশ যাওয়া? রোগীকে আটকাতে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ পরিবার

