Wednesday, November 12, 2025

“এই প্রধানমন্ত্রীকে মানি না”, তৃণমূলের ছাত্রসমাবেশে মোদিকে তুলোধনা সায়নীর

Date:

Share post:

তৃণমূল ছাত্রপরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে ঝাঁঝালো বক্তৃতা দিলেন তৃণমূলের যুবসভানেত্রী সায়নী ঘোষ। বক্তৃতার শুরু থেকে শেষপর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কড়া ভাষায় তিনি আক্রমণ করেন। শুধু তাই নয়, তৃণমূল যুবসভানেত্রী নরেন্দ্র মোদিকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মানেন না বলেই জানালেন।

মোদিকে আক্রমণ করে সায়নী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী ৫৬ইঞ্চি ছাতির কথা বলে বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও স্লোগান দিচ্ছেন, আর বিজেপি শাসিত রাজ্যে মহিলারা সবচেয়ে বেশি লাঞ্ছিত, অপমানিত হচ্ছেন। তাঁর শাসনকালে দেশের মহিলারা সবচেয়ে বেশি অসুরক্ষিত। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি এখন ধর্ষণের রাজধানীতে পরিণত হয়েছে। তাই আমি এমন প্রধানমন্ত্রীকে মানি না যাঁর কথা এক, কাজ আরেক। আমি সেই প্রধানমন্ত্রীকে মানি না, যিনি সাভারকার আর নেতাজিকে একাসনে বসান। আমি সেই প্রধানমন্ত্রীকে মানি না যিনি গান্ধী আর শ্যামাপ্রসাদকে এক তকমা দেন। তাঁর অনুগামীরা তাঁকে বীর বললেই বীর হওয়া যায় না।নেতাজিকে গোটা দেশ গোটা বিশ্ব বীরের সম্মান দেয়। প্রধানমন্ত্রী হতে গেলে প্রকৃত দেশনেতা হতে হয়।”

এদিন মোদি ও বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে সায়নী আরও বলেন, “শাসনকালে অত্যাচার, অনাচার, অপশাসন সবই চলছে। মোদির শাসনকালে BSF নিরীহ মহিলাকে গণধর্ষণ করছে। বিজেপির কাছে দেশের মানুষকে দেওয়ার মতো কিছুই নেই। ওরা শুধু হিন্দু-মুসলমান, ভারত-পাকিস্তান, শ্মশান-কবরস্থান করে বেড়াচ্ছে। বিজেপির হাতে আজ গণতন্ত্র লুণ্ঠিত। ভোট করে কী হবে? বিজেপি টাকা-পয়সার জোরে যেভাবে রাতের অন্ধকারে সবকিছু দখল করেছে, তাতে মানুষের গা ঘিনঘিন করছে। বিজেপি এখন রাজনীতির নীতি-আদর্শ বিসর্জন দিয়ে ভারতীয় জুমলা ও জোকার পার্টিতে পরিণত হয়েছে। বিজেপি দিনের অলোতে নেতা, কর্মী, জনপ্রতিনিধি তৈরি করতে চায় না, রাতের অন্ধকারে নেতা-মন্ত্রী কিনতে চায়।”

এদিন ছাত্রসমাজকে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘ লড়াইয়ের ইতিহাস স্মরণ করিয়ে সায়নী ঘোষ বলেন, একুশে বিরাট জয় পাওয়ার পরও আমাদের লড়াই থেমে যায়নি। গোটা দেশে বিরোধীরা বিজেপির কাছে মাথা নত করেছে, গুটিয়ে গিয়েছে, কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দমানো যায়নি। তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন সিপিএমের থেকে রাজ্য বাঁচানোর লড়াই। আর এখন বিজেপির থেকে দেশ বাঁচানোর লড়াই লড়ছেন। আর তাই ভয় পেয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে কুৎসা করছে। তবে যতই কুৎসা করুন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাদা কাপড়ে দাগ লাগবে না। বাংলার মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও চেনে, আবার বিজেপিকেও চেনে। সেটা একুশের ভোটে মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছে।”

ছাত্র সমাজের উদ্দেশে এদিনের সভামঞ্চ থেকে সায়নীর বার্তা, “শিক্ষার প্রগতি, সঙ্ঘবদ্ধ জীবন, দেশপ্রেমকে এগিয়ে নিয়ে যেতে নিষ্ঠা, সততার প্রয়োজন। লড়াই সংগ্রামের মধ্যে দিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। আর সংগ্রাম এমনটি একটি শব্দ যেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল জন্মলগ্ন থেকে বহন করছে। আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে লড়াই করার অনুপ্রেরণা পাই, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে তাকিয়ে সাহস পাই। তাই আমার প্রিয় ছাত্রযুবদের বলতে চাই, ঘরের শত্রু বিভীষণ আর দেশের শত্রু বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে। অপশাসন, অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে ছাত্রযুবদের জনমত গড়ে তুলতে হবে। সেই শপথ আজ থেকেই নিতে হবে ছাত্রযুবদের।”

spot_img

Related articles

দেশে প্রথমবার সেমিস্টার পদ্ধতিতে ফাজিল! ফলপ্রকাশের পরে সফল পরীক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা মুখ্যমন্ত্রীর

দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে প্রথম মাদ্রাসার দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা হয়েছে সেমেস্টার পদ্ধতিতে। উচ্চ মাধ্যমিকের মতো মাদ্রাসার ফাজিল ২০২৬-এর পরীক্ষা...

অর্পিতার সঙ্গে সম্পর্ক কী, কাদের নিয়ে পরিবার? খোলাখুলি উত্তর পার্থর

শিক্ষক নিয়োগ মামলায় তাঁর গ্রেফতার হওয়ার পরেই গ্রেফতার হন তাঁর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায় (Arpita Mukharjee)। জামিন পেয়ে বাড়ি...

ডবল ইঞ্জিনের গোয়ায় কোটি টাকার চাকরি কেলেঙ্কারি! জড়িত বিজেপি মন্ত্রিসভার সদস্য ও উচ্চপদস্থ আমলা

ফের ডবল ইঞ্জিন সরকারের দুর্নীতি ফাঁস। কোটি কোটি টাকার 'চাকরির বিনিময়ে নগদ' কেলেঙ্কারির এক মূল অভিযুক্ত গোয়ার (Goa)...

এখনও গুটখা-তামাকযুক্ত পান মশলা বিক্রি নিষিদ্ধ বাংলায়, মেয়াদ চলবে কতদিন

আরও এক বছর গুটখা ও তামাকযুক্ত পান মশলা (Pan Masala) বিক্রির নিষেধাজ্ঞা পশ্চিমবঙ্গে (West Banegal)। গত ৭ নভেম্বর...