Sunday, November 9, 2025

নিজের দিনযাপনের ‘চরৈবতি মন্ত্র’ জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

Date:

Share post:

রাজনীতির (Politics) মঞ্চে অনেক নেতৃত্বের নাম উঠে আসে তাদের লড়াইয়ের জন্য। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) যেভাবে সকলের ঘরের মেয়ে হয় উঠতে পেরেছেন সেই রকম নজির খুব কমই আছে। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayet Election), তার আগে পায়ে হেঁটে মানুষের সঙ্গে মিশে জনসংযোগে ব্যস্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী (CM)। উত্তর ২৪ পরগনা (North 24 Parganas) সফরে কখনও জলপথে হাতে স্টিয়ারিং, কখনওবা গ্রামের বাড়ির উঠোনে বসে মাছ ভাত খাওয়া – দিনের শেষে নিজের জীবন উদযাপনের চরৈবতি মন্ত্র লিখলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।

নিজের দীর্ঘ রাজনৈতিক কেরিয়ারে হাজার ঝড়-ঝাপটা সহ্য করতে হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রথমবার শপথ গ্রহণ করেন। তাঁর দলের লোকেদের বিভিন্ন কাজকর্ম নিয়ে সমালোচনা হলেও, ‘দিদি’র ব্যক্তিগত ভাবমূর্তিতে আঁচ পড়েনি কখনও। রাজ্যে সম্প্রতি শিক্ষক নিয়োগ থেকে গরু, কয়লাপাচারে একের পর এক নেতা-মন্ত্রীর নাম যত জড়িয়ে গিয়েছে, ততই তাঁকে লক্ষ্য করেও ছুটে এসেছে প্রশ্নবাণ। কিন্তু এই সব কিছুকে সামলে মানুষের মাঝেই নিজের জীবন বোধ উদযাপনের মন্ত্র ফাঁস করলেন মমতা। ফেসবুকে বুধবারের কার্যক্রমের বর্ণনা দিতে গিয়ে আবেগে হেসেছেন তিনি। লেখা শুরুই করেছেন, “মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক, আমি তোমাদেরই লোক” বাক্যে। দীর্ঘ পোস্টে বুধবার রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘গ্রাম বাংলার সাথে আমার নাড়ির বন্ধন অচ্ছেদ্য গ্রন্থিতে আবদ্ধ। আজ উত্তর ২৪ পরগনা সফরে সেই বন্ধন আরও সুদৃঢ় হল। বাংলার মানুষ পরিচিত অতিথি-বৎসল হিসেবে। আজ এই জেলার খাঁপুকুরে আবারও সেই অভিজ্ঞতা হল। এক স্থানীয় বাসিন্দাকে আমি জিজ্ঞাসা করি, ‘আপনারা কী খাচ্ছেন?’ তাঁরা জবাব দেন, ‘ভাত, ট্যাংরা মাছের ঝাল, আলু ওলের তরকারি।’ আমিও মহানন্দে তাঁদের সাথে বসে পড়ি মধ্যাহ্নভোজে। তাঁরা আমাকে চামচ এগিয়ে দেন ভাত খেতে। আমি বলি, ‘আমি তো চামচে খাই না! আপনাদের মতো হাত দিয়েই খাই।’ সেই সময় সবার আন্তরিকতা ও ভালোবাসা দেখে আমার মনে হয়, আমি তাঁদের পরিবারেরই একজন। গ্রামের বাড়ির দাওয়ায় বসে প্রাণের আলাপচারিতার সঙ্গে এই খাবারের স্বাদ অমৃতসম। পাশাপাশি তাঁদের সাথে হাত লাগলাম ঝাঁটা বোনায়। তাঁদের শিল্পসত্ত্বা দেখে আমি মুগ্ধ। স্কুল ও কলেজ পড়ুয়াদের সঙ্গেও অন্তরঙ্গ বার্তালাপ হয়। সবার মধ্যে বিতরণ করা হয় শীতবস্ত্র। টাকি গভর্নমেন্ট কলেজের নতুন বিল্ডিং-এর জন্য ১ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। নতুন প্রজন্মই বাংলার আলোর দিশারী। আমি দৃঢ়প্রত্যয়ী, তাঁদের অধ্যবসায়, প্রতিভা ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টা বাংলাকে নিয়ে যাবে এক অনন্য উচ্চতায়। বাংলা আমাদের গর্ব, রাজ্যবাসী আমার প্রাণের দোসর। প্রশাসনিক ব্যস্ততার ফাঁকে এই সব দিনযাপন-ই আমার চরৈবেতি মন্ত্র। মানুষের ভালবাসাই রাজ্যের উন্নয়নে আমৃত্যু অক্লান্ত পরিশ্রম করে যেতে আমায় প্রেরণা জোগাবে।’

 

spot_img

Related articles

এপিকের সঙ্গে মোবাইল লিঙ্ক না থাকলে অনলাইনে ফর্ম নয়! কমিশনের নিয়মে ক্ষোভে ফুঁসলেন কল্যাণ 

নির্বাচন কমিশনের নতুন নির্দেশিকা ঘিরে ফের রাজনৈতিক বিতর্ক। রবিবার শ্রীরামপুর পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভোট রক্ষা শিবিরে অংশ...

ফাইনাল ম্যাচে শাহরুখের মন্ত্রেই ছাত্রীদের তাতিয়ে ছিলেন? অকপট স্মৃতিদের কোচ

ভারতীয় মহিলা দল বিশ্বকাপ জেতার পরই চক দে ইন্ডিয়ার কবীর খান হয়ে উঠেছেন অমল মুজুমদার(Amol Muzumdar)। কী বলে...

এসআইআর আতঙ্কে মৃতদের পরিবারের পাশে তৃণমূল: রাজ্যজুড়ে শোকাহত পরিবারগুলির ঘরে দলের জনপ্রতিনিধিরা 

এসআইআর আতঙ্কে রাজ্যজুড়ে মৃত্যুর ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে। কোথাও আত্মহত্যা, কোথাও আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু— ভয় ছড়িয়ে পড়েছে গ্রাম...

বাংলাভাষায় ১০ কোটিও খরচ নয়! বাঙালিবিদ্বেষী বিজেপির রবীন্দ্র-বঙ্কিম ভাগে তোপ গণমঞ্চের

বিজেপি আদতে বাঙালি বিদ্বেষী, তা সাম্প্রতিক সময়ে বারবার প্রত্যক্ষভাবে প্রমাণিত। সেই বিদ্বেষের বিরুদ্ধে বারবার সরব হয়েছে দেশ বাঁচাও...