দাড়িভিটকাণ্ডে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চের নির্দেশ, দাড়িভিটের ঘটনায় বোমা বিস্ফোরণের অভিযোগ আগেই ছিল। তাই এনআইএ তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে। পাশাপাশি, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে অবিলম্বে আর্থিক সাহায্যের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
দাড়িভিট স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের বিতর্কে আন্দোলনে নেমে গুলিবিদ্ধ হন দুই প্রাক্তন ছাত্র। এই মৃত্যুর ঘটনাতেই এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দিল আদালত।২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের দাড়িভিট হাই স্কুল। অবরোধ, লাঠিচার্জ, ইট-পাথর ছোড়া থেকে শুরু করে বোমা-গুলিও চলে বলে অভিযোগ। ওই সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছিল রাজেশ সরকার এবং তাপস বর্মণ নামে দুই প্রাক্তন ছাত্রের।
ছাত্র মৃত্যুর ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবিতে তাঁদের পরিবার এবং এলাকাবাসীর একাংশের আন্দোলনে প্রায় দু’মাস ধরে বন্ধ ছিল দাড়িভিট স্কুল। ওই ঘটনার ৫ দিন পরে সিআইডি তদন্তভার নেয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, কোনও শক্তিশালী আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি ছোড়া হয়।যদিও সিআইডি এত দিনেও কোন আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল তা শনাক্ত করতে পারেনি।ঘটনার সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি, রাজ্য মানবাধিকার কমিশনকেও রিপোর্ট দিতে বলা হয়।
এই ঘটনা থেকে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন নিজেদের নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে রেখেছে বলেও মন্তব্য করেছে উচ্চ–আদালত। এমনকী, রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের ভূমিকা নিয়ে আদালতের মন্তব্য, ‘দূর থেকে গোটা ঘটনাক্রম দেখছেন। তাঁরা জেলাশাসক, পুলিশ সুপারকে এতটাই ভরসা করেন যে তাঁদের থেকে রিপোর্ট চেয়েই দায়িত্ব সেরেছেন।
এরই পাশাপাশি,সেদিন উন্মত্ত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কেন উপরের দিকে গুলি ছোড়েনি পুলিশ, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি মান্থা। আগের শুনানিতে তিনি জানিয়েছিলেন, এই তদন্তের গতিপ্রকৃতি বলছে বেশ কিছু ত্রুটি রয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন নিজেদের রিপোর্ট রাজ্যকে দেবে। এ বার অতি সত্ত্বর ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি।