Monday, November 10, 2025

হিন্দুত্বকে পৌঁছেছে ঘরে ঘরে, গান্ধী শান্তি পুরস্কারের জন্য গীতা প্রেসকে বেছে নিলেন মোদি

Date:

Share post:

শতবর্ষ পুরনো গীতা প্রেসকে গান্ধী শান্তি পুরস্কারের(Gandhi peace prize) জন্য বেছে নিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi)। রবিবার কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি জারি করে পুরস্কারের খবর জানানো হয়েছে। সেই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শান্তি ও সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষার্থে গীতা প্রেস(Geeta press) কতটা অবদান রেখেছে, সেই কথা। জাতির স্বার্থে ১০০ বছর ধরে যে কাজ করে আসছে গীতা প্রেস তারই পুরস্কার পেতে চলেছে। যদিও গান্ধী শান্তির মতো পুরস্কারে ফের মোদি সরকারের হিন্দুত্বের প্রাধান্যতে ক্ষুব্ধ কংগ্রেস। রীতিমতো দেগে বলা হয়েছে, “এটা সাভারকার, গডসেকে পুরস্কার দেওয়ার মতো।”

গান্ধী শান্তি পুরস্কারের বিচারকমণ্ডলীর প্রধান হিসাবে ক্ষমতাবলে রয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। জানা গিয়েছে, বিচারকমণ্ডলীর প্রধানের পদে বসে, প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, শান্তি ও সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষার্থে গীসা প্রেস কতটা অবদান রেখেছে, তার কথা। গীতা প্রেস ইতিমধ্যেই ১০০ বছর পার করেছে। জাতির স্বার্থে এই গীতা প্রেস যে কাজ করেছে, তার বিষয়ে বিচারকমণ্ডলীকে অবহিত করেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। তার ভিত্তিতে এই সংস্থাকে গান্ধী শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করে বিচারকমণ্ডলী। তবে এই ঘটনার তীব্র নিন্দায় সরব হয়েছে কংগ্রেস। পুরস্কারের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর থাকেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। তিনি লেখেন, “২০২১ সালের গান্ধী শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়েছে গোরখপুরের গীতা প্রেসকে। ২০১৫ সালে অক্ষয় মুকুলের একটি বায়োগ্ৰাফি প্রকাশ করেছিলেন যেখানে এই সংস্থার সঙ্গে গান্ধীজীর সম্পর্ক তাঁর রাজনৈতিক, ধর্মীয় এবং সামাজিক এজেন্ডায় প্রতি মুহূর্তে কিভাবে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তা তুলে ধরা হয়েছে। তারপর মোদি সরকার সিদ্ধান্ত সত্যিই প্রতারণামূলক এবং সাভারকর এবং গডসেকে পুরস্কার দেওয়ার মতো।”

উল্লেখ্য, ১৯২৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় গীতা প্রেস। বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রকাশনা সংস্থা এরা। ১৪ টি ভাষায় ইতিমধ্যেই ৪১.৭ কোটি বই প্রকাশ করেছে গীতা প্রেস। এরমধ্যে ১৬.২১ কোটি শ্রীমদ্ভগবত গীতা রয়েছে। গীতা প্রেসের মূলমন্ত্রই হল সনাতন ধর্ম। ফলে গীতা প্রেসের উঁচুতলায় আজও চূড়ান্তভাবে জাতের হিসেবে পদমর্যাদা ঠিক করা হয় বলে শোনা যায়। সংস্থার প্রধান আশুতোষ উপাধ্যায় ওই পত্রিকা সম্পর্কে বলেছেন, বোর্ড অফ ট্রাস্টি বা অছিপরিষদের সকলেই মাড়োয়াড়ি। তার বাইরে অন্য জাত থেকে কখনওই এত উঁচুতলায় নিয়োগ দেওয়া হয় না। ম্যানেজমেন্টে দলিত কেউ নেই, তারা শুধুমাত্র মেশিন চালানো, সাফাইকর্মী এইসব কাজেই আছেন। ‘আমরা বর্ণব্যবস্থাতেই বিশ্বাস রাখি। এটা গীতায় লেখা আছে। গীতায় যা লেখা আছে সেটাই একমাত্র সত্যি’।

এদিকে, গান্ধী শান্তি পুরস্কারের পথ চলা শুরু হয়েছিল ১৯৯৫ সাল থেকে। সরকার এই পুরস্কার দিয়ে থাকে। মহাত্মা গান্ধীর ১২৫ তম জন্মবার্ষিকীতে গান্ধী শান্তি পুরস্কারের পথ চলা শুরু হয়েছিল। উল্লেখ্য, এই পুরস্কার জাতি, জাতি, ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, শ্রেণি, লিঙ্গ ভেদে শান্তি রক্ষার্থে যাঁরাই এগিয়ে আসবেন, তাঁদেরই প্রদান করা হয়। তবে প্রতি বছরের বার্ষিক এই পুরস্কার কে পাবেন, তা বেছে নেয় বিচারকমণ্ডলী। আর এই বিচারকমণ্ডলীর প্রধান প্রধানমন্ত্রী। এই পুরস্কারের মূল্য ১ কোটি টাকা। ২০১৯ সালে এই পুরস্কার পেয়েছিলেন সুলতান কাবুস বিন সইদ আল সইদ, ২০২০ সালে এই পুরস্কার প্রদান করা হয় প্রয়াত বঙ্গবন্ধু সেখ মুজিবর রহমানকে।

spot_img

Related articles

ধর্মীয় বই কিনতে গিয়ে ২ কোটি টাকার প্রতারণার ফাঁদে কলকাতা ইসকন! গ্রেফতার ১ 

ধর্মীয় বই কেনার অর্ডার দিতে গিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকার প্রতারণার শিকার হল কলকাতা ইসকন। অভিযোগ, অর্ডার অনুযায়ী...

বিশ্বকাপজয়ী মেয়ের সৌজন্যে হারানো পুলিশের চাকরি ফিরে পাচ্ছেন বাবা

কয়েকদিন আগেই আইসিসি একদিনের বিশ্বকাপ(ICC World Cup)  জিতেছে ভারতীয়  মহিলা দল। মেয়েদের সাফল্যে গর্বিত মা-বাবারা। তবে বিশ্বকাপজয়ী মেয়ের...

গ্যাস-সমস্যায় নিঃশ্বাসের পরীক্ষা: যুগান্তকারী আবিষ্কারে বিশ্বে স্বীকৃতি বাঁকুড়ার চিকিৎসকের

একটি সাধারণ সমস্যা, যাতে জর্জরিত বর্তমান যুবসমাজ থেকে শিশুরা পর্যন্ত। গ্যাস বা গ্যাসট্রাইটিসের মতো সমস্যা নির্ধারণ করার জন্য...

একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে বাড়তে পারে আসন সংখ্যা, জানালো এসএসসি 

রাজ্যের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের ফলাফল ইতিমধ্যেই প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। প্রকাশিত ফল অনুযায়ী,...