আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে (Panchayat Election) কলকাতা হাইকোর্টের (Kolkata High Court) নির্দেশ মেনে বৃহস্পতিবারই ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Force) চেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে (Central Home Affairs) চিঠি পাঠিয়েছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন (State Election Commission)। আর সেই চিঠি পাওয়ার পরই বৃহস্পতিবার রাতেই দিল্লির (Delhi) দফতর থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, আপাতত রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে (Panchayat Election) ৩১৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হচ্ছে। আর শুক্রবার সেই তথ্যই বিস্তারিতভাবে কলকাতা হাইকোর্টে জানাল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। পাশাপাশি শুক্রবার বাকি ৪৮৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে ফের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে চিঠি পাঠাল রাজ্য নির্বাচন কমিশন।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রকাশিত নির্দে্শিকা থেকে জানা গিয়েছে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে আগে দাবি করা ২২ কোম্পানির পাশাপাশি নতুন করে ৩১৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, খুব দ্রুত এই বাহিনী রাজ্যে এসে পৌঁছবে। ৩৩৭ কোম্পানি বাহিনীর মধ্যে ৫০ কোম্পানি সিআরপিএফ, ৬০ কোম্পানি বিএসএফ, ২৫ কোম্পানি সিআইএসএফ, ২০ কোম্পানি আইটিবিপি, ২৫ কোম্পানি এসএসবি ও ২০ কোম্পানি আরপিএফ জওয়ানরা রয়েছেন। তবে সেই বাহিনী রাজ্যের কোন কোন জেলায় মোতায়েন করা হবে, রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) তার বিস্তারিত তালিকা প্রকাশ করেছেন। ওই তালিকা অনুযায়ী, প্রথম পর্যায়ে ২২ জেলায় ভাগ করে ওই ২২ কোম্পানি বাহিনী মোতায়েন করা হবে। পরে ধাপে ধাপে আরও বাহিনী মোতায়েন করা হবে। প্রথম ধাপে যে সব জেলায় ২২ কোম্পানি বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে, সেগুলি হল— আলিপুরদুয়ার, বাঁকুড়া, বীরভূম, কোচবিহার, দক্ষিণ দিনাজপুর, দার্জিলিং, হুগলি, হাওড়া, জলপাইগুড়ি, ঝাড়গ্রাম, কালিম্পং, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা, পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান, পূর্ব মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর দিনাজপুর।

এদিন হাইকোর্টে (Calcutta High Court) এই মামলার শুনানি চলাকালীন কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল উপস্থিত ছিলেন। তিনিও আদালতে দাবি করেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে আপাতত ৩১৫ কোম্পানি বাহিনী ইতিমধ্যে রাজ্যে পাঠানো হয়েছে। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক আরও জানিয়েছে, একসঙ্গে ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো একটু মুশকিল। আর সেই কথা শুনে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম নির্দেশ দিয়েছেন, কেন্দ্র বাকি ৪৮৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠাচ্ছে কিনা বা রাজ্য পেয়েছে কিনা তা আগামী ২৮ জুনের মধ্যে আদালতকে স্পষ্টভাবে জানাতে হবে। পাশাপাশি রাজ্য নির্বাচন কমিশন কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ যথাযথভাবে মেনে চলছে কিনা তাও সেদিন আদালতকে হলফনামা আকারে জানাতে হবে।

অন্যদিকে, এদিন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে সওয়াল করেন আইনজীবী কিশোর দত্ত। তিনি বলেন, রাজ্য নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ সংস্থা। নির্বাচনের আগেই কমিশনের ভূমিকা নিয়ে কিছু বলা কতটা যথাযথ তা আদালতের খতিয়ে দেখা উচিত।
