চাঁদের মাটিতে নিজের কাজে ব্যস্ত রোভার ‘প্রজ্ঞান’ (PRAGYAN)। গোটা বিশ্বকে অবাক করে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নেমেছে ভারতের চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan 3)। তৈরি হয়েছে ইতিহাস।এখনও পর্যন্ত নির্বিঘ্নে ইসরোর (ISRO) পরিকল্পনামাফিকই এগোচ্ছে ভারতের তৃতীয় মনুষ্যবিহীন চন্দ্র অভিযান। কী কাজ করছে রোভার তা প্রকাশ্যে আনল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।

গত বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ৪মিনিটে চাঁদের মাটিতে প্রথম বার পা রাখে ‘বিক্রম’। তার পর চাঁদের মাটিতে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে শক্তি সঞ্চয়ের কাজ শুরু। কয়েক ঘণ্টা পরে গড়গড়িয়ে নেমে আসে রোভার ‘প্রজ্ঞান’। সেই ভিডিও প্রকাশ্যে এনেছে ইসরো। এরপর শুক্রবার সন্ধ্যায় ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার তরফে‘প্রজ্ঞান’ রোভারের অগ্রগতির গতিপ্রকৃতিও জানিয়েছে। রোভারটি সফল ভাবে ৮ মিটার পথ অতিক্রম করে ফেলেছে। তবে এ হাঁটা সাধারণ হাঁটা নয়, হাঁটার পাশাপাশি চাঁদের মাটির বৈশিষ্ট্য, পৃথিবীর উপগ্রহের ভূপ্রকৃতিও খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে।প্রজ্ঞানের পে-লোড ‘এলআইবিএস’ (LIBS) এবং ‘এপিএক্সএস’ (APXS) চালু করে দেওয়া হয়েছে। এই ‘আলফা পার্টিকল এক্স-রে স্পেকট্রোমিটার’ (Alpha particle X-ray spectrometer) চাঁদের মাটির রাসায়নিক গঠন এবং মাটির নীচে লুকিয়ে থাকা খনিজ ভান্ডারের গঠনের বিজ্ঞানসম্মত অনুমান বিজ্ঞানীদের হাতে তুলে দেবে। এর পাশাপাশি ‘লেসার-ইনডিউসড ব্রেকডাউন স্পেকট্রোস্কোপ’ (Laser-induced breakdown spectroscope) চাঁদের মাটি এবং শিলার মৌলিক গঠন অর্থাৎ ম্যাগনেশিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম, সিলিকন, টাইটেনিয়াম ইত্যাদি রাসায়নিক ঠিক কী রূপে মিশে রয়েছে, তা বিশ্লেষণ করবে। চাঁদের মাটিতে ঘুরে ঘুরে রোভার তথ্য সংগ্রহ করবে, ‘বিক্রম’ সেই তথ্য পাঠাবে পৃথিবীতে। সৌরশক্তিতে কাজ করবে ‘বিক্রম’ এবং ‘প্রজ্ঞান’। আপাতত বিক্রম অবতরণস্থলেই দাঁড়িয়ে থাকবে। ইসরো থেকে যাবতীয় বার্তা সরাসরি পৌঁছবে বিক্রমে। তার পর ‘বিক্রম’ স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে সেই বার্তা বেছে প্রয়োজন অনুসারে পাঠাতে থাকবে চন্দ্রপৃষ্ঠে ঘুরে বেড়ানো রোভার প্রজ্ঞানে।

অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকা ও গ্রিস সফর সেরে বেঙ্গালুরু পৌঁছেই সোজা ইসরো গেলেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর গলায় ‘জয় জওয়ান, জয় বিজ্ঞান, জয় অনুসন্ধান’ স্লোগান। চন্দ্রযান ৩-এর সাফল্যের জন্য শনিবার ইসরো-র বিজ্ঞানীদের সঙ্গে দেখা করে শুভেচ্ছা জানান নরেন্দ্র মোদি।
