হিন্দু ধর্মাবলম্বী বিশেষত বৈষ্ণবদের কাছে জন্মাষ্টমী একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, ভাদ্রমাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে রোহিণী নক্ষত্রে শ্রী কৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেছিলেন বলে বিশ্বাস করা হয়। হিন্দু ধর্মে জন্মাষ্টমীর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। প্রতিবছর মথুরা ও বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন উপলক্ষ্যে মহাধুমধাম করে পালন করা হয় জন্মাষ্টমী।কথিত আছে, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ মথুরায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর শৈশব কেটেছে মথুরা ও বৃ্ন্দাবনেই। তাই এদিন শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন উপলক্ষ্যে ভক্তরা উপবাস করে পুজোপাঠ করেন। অনেকে আবার এই শুভ দিনে একবেলা খাবার খেয়ে উপবাস করেন, আবার কেউ কেউ সারাদিন শুধু ফলগ্রহণ করে উপবাস করেন।

আরও পড়ুন:রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়

এ বছর জন্মাষ্টমী তিথির বিস্তার ২ দিন ধরে। তাই ভক্তদের মনে সংশয় কবে তাঁরা রাখবেন জন্মাষ্টমীর উপোস । পঞ্জিকা অনুসারে ৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর পড়েছে জন্মাষ্টমী তিথি।
ভাদ্র মাসের কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী তিথি শুরু হচ্ছে ৬ সেপ্টেম্বর বিকাল ৩টে ৩৭ মিনিটে। অষ্টমী তিথি শেষ হবে ৭ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪.১৪ মিনিটে।
পুরাণ অনুসারে, রাত্রি বারোটায় রোহিণী নক্ষত্রে শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হয়েছিল। এই বিশ্বাস অনুসারে, ৬ সেপ্টেম্বর গৃহস্থরা জন্মাষ্টমী ব্রত পালন করতে পারেন। বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের নিয়ম অনুসারে তাঁরা শ্রী কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী পালন করছে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর । শুধু মথুরা নয়, শ্রীকৃষ্ণের লীলাক্ষেত্র বৃন্দাবন এবং দ্বারকাতেও জন্মাষ্টমী পালিত হয় ধুমধাম করে৷ সেই সঙ্গে বাংলার ঘরে ঘরে চলে বালগোপালের পুজো।
যেহেতু জন্মাষ্টমীর পুজো রাতে হয়, তাই ৬ সেপ্টেম্বর তারিখটিই অনেকে বেছে নিচ্ছেন কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী পালনের জন্য। জন্মাষ্টমী পুজোর শুভ ক্ষণের কথা যদি বলেন, তবে তা মাঝরাত ১২টা ২০ মিনিটে শুরু হবে। চলবে ১২টা ৪৮ মিনিট পর্যন্ত।
• মধ্যরাতে পুজোর শুভক্ষণ শুরু হবে রাত ১২ টা ২০ তে। ইংরিজি মতে ৭ সেপ্টেম্বরই পড়ছে।
• চন্দ্রোদয়ের মুহূর্ত শুরু ১০:৫৫ তে।
• অষ্টমী তিথি শুরু হচ্ছে ৬ সেপ্টেম্বর দুপুর ৩ টে ৩৭ থেকে।
• অষ্টমী তিথি শেষ হবে ৭ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪ টে ১৪ য়।
• রোহিণী নক্ষত্রের সূচনা হবে ৬ সেপ্টেম্বর সকাল ৯ টা ২০ থেকে।
• রোহিণী নক্ষত্র সমাপ্ত হবে ৭ সেপ্টেম্বর সকাল ১০.২৫ এ। কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী ব্রতের তাৎপর্য
পৃথিবীতে কংসের ক্রমবর্ধমান অত্যাচারের অবসান এবং ধর্ম প্রতিষ্ঠার জন্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হয়েছিল। এইদিনটিই জন্মাষ্টমী হিসেবে পালিত। কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমীতে রোহিণী নক্ষত্রে চন্দ্র যখন বৃষভের ঘরে প্রবেশ করে সেই সময় মধ্যরাতে কৃষ্ণ জন্ম নেন মথুরায় । দুষ্টের দমন, সৃষ্টের পালনের হেতুই তাঁর জন্ম। তারপর মামা কংসর হাত থেকে রক্ষা করার জন্য বাবা বসুদেব তাঁকে বৃন্দাবনে নন্দরাজের বাড়িতে রেখে আসেন। ভয়ঙ্কর দুর্যোগের সে-রাতে যমুনা পার হওয়ার লোককথা লোকের মুখে মুখে ফেরে।
