ট্রামে চড়ে ঠাকুর দেখার আনন্দ হয়তো অনেকেই উপভোগ করেছেন কিন্তু ট্রামের মধ্যে দুর্গা (Durga puja in Tram)প্রতিমার পুজো হতে দেখেছেন কখনও? এবার সেই ঘটনার সাক্ষী হতে চলেছে মহানগরী। সাধারণত দর্শনার্থীরা ঘুরে ঘুরে প্যান্ডেল হপিং করেন বটে, কিন্তু দুর্গা মা ট্রামে চড়ে ঘুরে ঘুরে পুজো নিচ্ছেন এই ঘটনা বিরল। শারদ আবহে ভ্রাম্যমাণ ট্রাম হয়ে গেল বনেদি জমিদার বাড়ি আর আটচালার আদলে গড়া হল ঠাকুর। SEEDZ ফাউন্ডেশনের তরফে এমনই এক অভাবনীয় উদ্যোগ নেওয়া হল। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মূল অমৃতা সিং জানান যে, তাঁদের এই বছর প্রথম পুজো। কিন্তু তাঁরা অনুমতি পাচ্ছিলেন না। তখন তাঁরা ভাবেন যে বাংলার হেরিটেজ দুর্গাপুজোকে এমন জায়গায় শুরু করবেন যা আসলে কলকাতার হেরিটেজ স্থান। সেই থেকেই প্রথম মাথায় আসে ট্রামের নাম। তাই কলকাতার দুর্গা পুজো আর শহরের ট্রাম- এই দুই হেরিটেজকে মিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা। এই পুজোর পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন ট্রান্সজেন্ডাররা। এদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র (Madan Mitra)বলেন, হেরিটেজ ট্রামে হেরিটেজ দুর্গা পুজো অভিনব ঘটনা। কিন্তু আগামীতে ট্রাম যদি যুগের সঙ্গে তাল না দিয়ে উঠতে পারে, তখন কি তাকেও রিফিউজি হতে হবে? এই প্রশ্নও যেন উঁকি দিল। বিধায়ক আরও বলেন যে যেখানে যেভাবেই পুজো হোক না কেন, আসল কথা হল ‘ঐহিকে সব ভিন্ন ভিন্ন, অন্তিমে একাকার’।

দুর্গা সকলের প্রতীক। তিনি যেমন প্রকৃতির প্রতীক তেমনই বিশ্ব সংসারের সব নারীর মধ্যেই রয়ে সেই মাতৃ শক্তির উদযাপন। সেখানে ব্যাতিক্রমী নন রুপান্তরকামী মহিলারাও। আজ এসপ্ল্যানেড ট্রাম ডিপোতে রিফিউজি দুর্গা বন্দনার উদ্বোধনে যেন সেই বার্তাই ধ্বনিত হল। এই মর্মে পুজোর থিম ভাবনার নেপথ্যে রয়েছে রিফিউজিদের দুঃখের কথাও। তাঁরা বলছেন, দেশভাগের পর মা বাংংলাদেশ থেকে কলকাতা এসে পথে পথে ঘুরছেন কারণ মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। তখন মা সন্তানদের নিয়ে ট্রামে বসবাস শুরু করছেন । এই কষ্টটা সকলের সামনে তুলে ধরতেই এই রিফিউজি দুর্গার ভাবনা। ষষ্ঠী থেকে নবমী পর্যন্ত কোন রুটে মা দুর্গাকে নিয়ে ট্রাম যাবে সেটা এখনও জানা যায়নি।
