অভিজিৎ ঘোষ, উদয়পুর,রাজস্থান : ট্রাফিক পুলিশ? আপনাকে দূরবীন দিয়ে খুঁজতে হবে। ট্রাফিক সিগন্যাল? সেটাও খুঁজতে হবে। রাজস্থান চলছে আপন খেয়ালে। বাইকের উৎপাত, বিশেষত কমবয়সীদের যেমন তেমন বাইক চালানো তো রয়েইছে। বাদ যাচ্ছে না বয়স্করাও। মোড়ের মাঝে জটলা হচ্ছে, কিন্তু দ্রুত কেটে যাচ্ছে। তবে দেদার উৎপাত অটো আর টোটোর। কিন্তু তারা স্বভাবে অনেক ঠাণ্ডা। কিছু হলেই দল বেঁধে ঝাঁপিয়ে পড়ার লক্ষণটা কম। সরকারি বাস একটু বেশি। প্রাইভেট বাস তুলনায় কম। তবে ভাড়া একটু বেশিই। বাংলার চেয়ে অনেকটাই বেশি।

কিন্তু যেটা দেখার এবং বলার হলো, এখানকার রাস্তাঘাট একেবারে ধোপদুরস্থ। খানাখন্দ কার্যত নেই। রাস্তায় হাম্পও নেই। গাড়ি রাস্তায় গর্তে পড়েছে, এমন ঘটনা আপাতত এখানে বিরল। জয়পুর, যোধপুর, আজমের যেখানেই যান না কেন, অপরাধ খুবই কম। হ্যাঁ, অপরাধের ঘটনা মাঝেমধ্যে দেখা যায় উত্তরপ্রদেশের সীমান্ত জুড়ে ভরতপুরের মতো জেলাগুলিতে। সেখানেও নাকি এখন পরিবেশ বদলাচ্ছে।

জয়পুর থেকে উদয়পুরের দিকে আপনি হাইওয়ে ধরে এগিয়ে চলুন, দেখবেন মার্বেলের শহর। একের পর এক মার্বেলের দোকান, ফ্যাক্ট্রি। এখান থেকেই গোটা দেশের বরাত যাচ্ছে। শ্রমিকদের দেনা-পাওনা নিয়ে ক্ষোভ কম। যারা দৈনিক হাজরিতে কাজ করে, তারা চায় না, একদিনও কাজ বন্ধ হোক। তাহলে হাজরিও যাবে। ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান। তবে ব্যতিক্রমও আছে। সে ঘটনা মারাত্মক।

রাজনীতি নিয়ে স্বচ্ছল এখানকার মানুষ। নভেম্বরের ভোটে পাল্লা ভারী কার? অনেকেই বলছেন, ৮ কোটি জনসংখ্যার রাজস্থান প্রতি পাঁচ বছর সরকারের রঙ বদলায়। কিন্তু মোদির নানা নাটকে বেশ বিরক্ত মানুষ। বয়স্করা চাইছেন থেকে যাক বর্তমান সরকার। কমবয়সীদের মধ্যে এখনও অ্যাডভেঞ্চার রয়েছে। তাই তারা বেশিদিন একই জিনিস দেখতে নারাজ। আবার কেউ কেউ গেহলট-পাইলটের আকচা-আকচিতে ক্ষুব্ধ। কিন্তু প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরার ব্যক্তিগত জীবন এতখানি চর্চিত যে, তার দলের প্রতি আস্থা প্রতিদিন কমছে। আর একটা বিষয়ে দেখলাম ব্যবসায়ী মহল ক্ষুব্ধ, তাহল বিজেপির গেস্ট হাউস পলিটিক্স। বিধায়ক তুলে নিয়ে গিয়ে ভোট কেনা নিয়ে লোকে বলছে বানিয়াকা পার্টি বানা দিয়া। যদিও শুক্রবার পড়লেই গুজরাট থেকে বহু মানুষ ২৫০ কিমি পথ পেরিয়ে চলে আসে রাজস্থানে। মন্দিরে মন্দিরে মিলবে তাদের দেখা। যদিও জয়পুর, উদয়পুর টো-টো করে ঘোরার পর একটা দেওয়াল লিখন, পোস্টার কিংবা ফ্ল্যাগও আপনার চোখে পড়বে না। কে বলবে, রাজস্থানে বিধানসভা ভোটের বাকি এক মাসেরও কম!
নো সিগন্যাল!!

আরও পড়ুন:রেশন দুর্নী.তির শিকড় লুকিয়ে সিপিএম জমানায়! সরকারি বরাত নিয়ে ফুলেফেঁপে উঠেছিল বাকিবুর
