Sunday, May 11, 2025

কৃষকদের রুখতে দাঁত-নখ বের মোদি সরকারের, একমাসব্যাপী ১৪৪ ধারা লাগু দিল্লিতে

Date:

Share post:

একদিকে অশান্ত সন্দেশখালিতে ১৪৪ ধারা লাগু করার ঘটনায় তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিরোধীরা। অথচ এই বিজেপিরই অন্যরূপ ধরা পড়ল দিল্লিতে। নিরস্ত্র, শান্তিপূর্ণ কৃষকদের রুখতে রীতিমতো দাঁত নখ বের করম মোদি সরকার। দিল্লিজুড়ে একমাসব্যাপী লাগু করা হল ১৪৪ ধারা। ১৩ ফেব্রুয়ারি পাঞ্জাব, হরিয়ানা এবং উত্তর প্রদেশের কৃষকদের “দিল্লি চলো” অভিযান ঘিরে আঁটোসাটো নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে রাজধানী দিল্লিকে।

ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি) সহ কৃষি সংক্রান্ত একাধিক দাবি নিয়ে কৃষকরা আবারও রাজধানী দিল্লি ঘেরাওয়ের প্রস্তুতি নিয়েছেন। কৃষকরা ঘোষণা করেছে তারা কেন্দ্রীয় সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে এবং তাদের ন্যায্য দাবিগুলি নিয়ে আলোচনা করতে ১৩ ফেব্রুয়ারি ‘দিল্লি চলো’ অভিযান করবে। ইতিমধ্যেই পাঞ্জাব-হরিয়ানার কৃষকরা আন্দোলনের জন্য দিল্লির উদ্দেশ্যে জড়ো হচ্ছেন। এদিকে আন্দোলনের আগেই হরিয়ানা থেকে দিল্লি পর্যন্ত সীমান্তে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। রাজধানী এবং সংলগ্ন এলাকা জুড়ে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা । দিল্লির পুলিশ কমিশনার সঞ্জয় অরোরা বলেছেন, ১৩ ফেব্রুয়ারি কৃষকদের দিল্লি চলো অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতেই ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। গাজীপুর, সিংঘু এবং হরিয়ানা থেকে দিল্লিতে প্রবেশ করার সমস্ত পথ ইতিমধ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে ৫ হাজারেরও বেশি পুলিশ কর্মী । বড় বড় লোহার বিম এবং লোহার ব্যারিকেট দিয়ে সিল করা হয়েছে সীমান্তবর্তী এলাকা গুলো। রাস্তা জুড়ে লাগানো হয়েছে পেরেক যাতে, কৃষকদের সাথে আসা গাড়ি গুলো কোনভাবেই দিল্লিতে প্রবেশ করতে না পারে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে কৃষকদের আটকাতে মোদি সরকার যেভাবে তৎপরতা শুরু করেছে তাতে এনারা কী কৃষক? নাকি ভয়ঙ্কর কোনও জঙ্গি সংগঠনের সদস্য বলে মনে করছে সরকার? অথচ এই বিজেপিই বাংলার অশান্ত সন্দেশখালিতে ১৪৪ ধারা জারি হলে মানবিকতা, মৌলিক অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তোলে। এগুলি কি তবে দিল্লিতে আন্দোলনকারী কৃষকদের জন্য প্রযোজ্য নয়?

আন্দোলনকারীদের তরফে জানা গিয়েছে, “দিল্লি চলো” অভিযানের ঘোষণা করেছে ইউনাইটেড কিসান মোর্চা এবং কিষাণ মজদুর মোর্চা। এই দুটি সংগঠনই দু’শো কৃষক ইউনিয়নের সঙ্গে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। সংগঠনের অধিকাংশই পাঞ্জাব-হরিয়ানার। তাঁদের রুখতেই একমাসব্যাপী দিল্লি জুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

যার মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু শর্তাবলীও, যেমন: এখন থেকে পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির একসঙ্গে রাস্তা অবরোধ করা, জমায়েত, সমাবেশ বা সভা করার অনুমতি নেই। সভা বা সমাবেশের আগে থেকে নির্দিষ্ট কারণ দেখিয়ে অনুমতি নিতে হবে।

যে কোনো কারণে মিছিল, বিক্ষোভ বা পায়ে হেঁটে মিছিল সংগঠিত করা বা অংশগ্রহণ করা দিল্লিতে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

ট্রাক্টর বা ট্রলির মতো যানবাহন যাতে করে বিভিন্ন জিনিস বহন করা যায় বা কোনওরকম হিংসার সামগ্রী রয়েছে এরকম যানবাহন প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ দিল্লিতে।

দিল্লিতে পাবলিক প্লেসে আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরক, ক্ষয়কারী পদার্থ বা কোনো বিপজ্জনক জিনিস বহন করা নিষিদ্ধ। এছাড়াও, মানুষের ক্ষতি করতে পারে এমন জিনিসপত্র সংগ্রহ করা বা বহন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

প্রতিবেশী জেলাগুলি থেকে আসা যানবাহনগুলি দিল্লির সীমান্তে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তল্লাশি করা হবে। যারা লাঠি, ব্যানার বা অন্যান্য জিনিসপত্র বহন করছে তাদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না।

জনসাধারণের বিশৃঙ্খলা বা অশান্তি সৃষ্টি করতে পারে এমন কোনো উস্কানিমূলক বার্তা বলা বা ছড়িয়ে দেওয়া বেআইনি।

বিবাহ, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া, বা অন্যান্য সম্পূর্ণরূপে ধর্মীয় অনুষ্ঠান সম্পর্কিত যেকোন জমায়েত, যদি সেগুলি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে যথাযথ অনুমতি নেওয়া হয় তাহলে করা যাবে।

spot_img

Related articles

‘বৈভবের ক্রিকেট’, উৎপল সিনহার কলম 

ছাড়ার বল ছাড়োমারার বল মারোএটাই ভদ্রলোকের খেলা ক্রিকেটের আদি আপ্তবাক্য ।এর মানে , ভালো বলকে সম্মান দাও এবং...

সংঘর্ষ বিরতির পর থমথমে জম্মু- কাশ্মীর, সীমান্তবর্তী সব রাজ্যে সতর্কতা

ভারত- পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষ বিরতি (Ceasefire between India Pakistan) আবহে রবিবাসরীয় সকালে থমথমে ভূস্বর্গ। শনিবার রাতে সীমান্তের ওপার...

জম্মুর নাগরোটা মিলিটারি স্টেশনে হামলার চেষ্টা! আহত কর্তব্যরত সেন্ট্রি  

সংঘর্ষ বিরতি লঙ্ঘনের (Ceasefire Violation)মাঝেই শনিবার রাতে জঙ্গি আক্রমণের কায়দায় জম্মুর নাগরোটা মিলিটারি স্টেশনে হামলার চেষ্টা। ভারতীয় সেনার...

বাংলাদেশে আওয়ামি লিগের রাজনৈতিক কার্যকলাপ নিষিদ্ধ, ঘোষণা ইউনুস সরকারের

বাংলাদেশে বড় সিদ্ধান্ত নিল অন্তর্বর্তী ইউনুস সরকার। শনিবার রাতে উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, বিচার প্রক্রিয়া...