Sunday, November 2, 2025

নির্বাচনী বন্ড: বিজেপিকে টাকা দেওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ইডি-সিবিআই পদক্ষেপ করবে তো?

Date:

Share post:

কোন রাজনৈতিক দল গত পাঁচ বছরে কোন শিল্প সংস্থার থেকে কত টাকা চাঁদা পেয়েছে, তা আগামী মার্চ মাসের মধ্যেই প্রকাশ করবে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। এই ঘটনায় সবচেয়ে বেশি অস্বস্তিতে পড়বে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি। কারণ, মোডি সরকার নির্বাচনী বন্ড চালু করার পর থেকে সব থেকে বেশি ফায়দা তুলেছে বিজেপিই। তাই বিজেপির নেতারা ঘনিষ্ঠ মহলে স্বীকার করে নিচ্ছেন, সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত তাঁদের খুশি করেনি।

এদিকে সরকার নির্বাচনী বন্ড চালু করার পরে বিরোধী শিবির থেকে অভিযোগ উঠেছিল, সরকারে থাকার সুবাদে বিজেপি কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে নানা সুবিধা পাইয়ে দিয়ে গোপনে তাদের থেকে চাঁদা আদায় করছে। ২০১৭ সালের বাজেটে নির্বাচনী বন্ডের ঘোষণা হয়েছিল। ২০১৮-র জানুয়ারি মাসে নির্বাচনী বন্ড চালুর বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। ২০১৭-১৮ থেকে ২০২২-২৩-এর মধ্যে মোট ১২,০০৮ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড বিক্রি হয়েছে। এর প্রায় ৫৫ শতাংশ বা ৬,৫৬৪ কোটি টাকা বিজেপির কোষাগারে ঢুকেছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, বিজেপি-সহ সব দলকে এই কোটি কোটি টাকা চাঁদাকে দিয়েছে, ১৩ মার্চের মধ্যেই তা প্রকাশ্যে আনবে নির্বাচন কমিশন।

নির্বাচনী বন্ডের বিরুদ্ধে মামলার অন্যতম আইনজীবী কপিল সিব্বলের দাবি, এতে বিজেপির মুখোশ খুলে যাবে। কারণ, কেউ বিনা কারণে বিজেপিকে কোটি কোটি টাকা দেয়নি। একই মত পি চিদম্বরমের। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিজেপি কর্পোরেট ও বড়লোকদের চাঁদার ৯০ শতাংশ নিজের ঝুলিতে পুরেছিল। সবাই জানুক, কবে, কাকে চাঁদা দেওয়া হয়েছে। তার পরে মানুষ জানতে চাইবেন, কেন এই চাঁদা দেওয়া হয়েছে। তার পরে মানুষই সিদ্ধান্ত নেবেন।’’

তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা তথ্য জানার অধিকার নিয়ে দীর্ঘ দিন কাজ করা সাকেত গোখলে তাঁর পোস্টে লেখেন, “নির্বাচনী বন্ডকে বেআইনি ঘোষণা করা খুব সম্ভবত গত পাঁচ বছরের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের সবচেয়ে ঐতিহাসিক রায়।” বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের একটি নির্দেশকে উদ্ধৃত করে তিনি জানান, মার্চের মাঝামাঝি সময়ের আগেই নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে টাকা দেওয়া ব্যক্তি এবং সেই টাকার প্রাপক যে রাজনৈতিক দলগুলি, তাদের নাম প্রকাশ করতে হবে। তার পরই বিজেপিকে কটাক্ষ করে তিনি লেখেন, “যে সমস্ত অনুদানদাতা ব্যক্তি এবং সংস্থা বিজেপিকে টাকা দিয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে ইডি-সিবিআই পদক্ষেপ করেছে কি না, সেটাই এখন দেখার।”

তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষের বক্তব্য, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার নির্বাচনী সংস্কারের দাবি করেছেন। কোথা থেকে টাকা আসছে, দলের অর্থের উৎস কী, তা মানুষকে জানাতে হবে।”

আরও পড়ুন – তৃণমূল বিধায়ক ইদ্রিস আলির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ মমতা- অভিষেকের

spot_img

Related articles

ভারত কোনও ধর্মশালা নয়, দেশে জন্মালেই ভোটাধিকার! শাহের ন্যক্কারজনক মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ তৃণমূলের 

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সাম্প্রতিক মন্তব্য ঘিরে তীব্র বিতর্ক। তাঁর বক্তব্য— “ভারত কোনও ধর্মশালা নয়, যারা এই দেশে...

ভারত চেম্বার অফ কমার্সের ১২৫ বছর: রাজ্যে আসছেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা

ভারত চেম্বার অফ কমার্সের ১২৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সোমবার কলকাতায় আসছেন লোকসভার স্পিকার ওম...

বৃষ্টি – দুর্যোগ কাটতেই দার্জিলিংয়ে ফের শুরু সরস মেলা 

ভারী বৃষ্টিতে ফের বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও সমতল। শনিবার রাতের বৃষ্টিতে কালিম্পং জেলায় একাধিক স্থানে ধস নামে। বন্ধ...

শুভেন্দুর স্বাস্থ্য শিবিরে জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যা! নিরপেক্ষতা কোথায়? প্রশ্ন তৃণমূলের

জাতীয় মহিলা কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলল তৃণমূল কংগ্রেস। অভিযোগ, বিজেপির নির্দেশ মেনে ও রাজনৈতিক স্বার্থে কাজ করছে...