জি বাংলার জনপ্রিয় রিয়ালিটি শো দিদি নাম্বার ওয়ানের (Didi No 1) টিআরপি বরাবরই বেশি। তবে রবিবার যেন গোটা বাংলা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বসেছিল কখন রাত আটটা বাজবে। দিদি নাম্বার ওয়ানের মঞ্চে হাজির ‘বাংলার দিদি’। কিন্তু নিজেকে এক নম্বর দিদি বললেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee), বরং জানালেন সবার ভালোবাসায় তিনি ‘ইউনিভার্সাল দিদি’ হয়েই থাকতে চান। বাকিটুকু তোলা থাক বাংলার মহিলাদের জন্য। টিজার ও ট্রেলার দেখে মুখ্যমন্ত্রীর গেম শোতে অংশগ্রহণ নিয়ে যাঁরা কটাক্ষ করেছিলেন, তাঁরাও বুঝলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) আসলে নারী ক্ষমতায়নের বার্তা দিতে, বাংলার মেয়েদের দক্ষতার কথা আরও বেশি করে সকলকে জানাতে বিশেষ অতিথি হয়ে হাজির হয়েছিলেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুষ্ঠানে। এদিন রিয়ালিটি শোতে তাঁর উপস্থিতি যেন উজ্জীবিত করল বাংলার মা বোনেদের।একদিকে যেমন রুটি বেলে দেখালেন, অন্যদিকে ধামসাও বাজালেন। ফেলে আসা শৈশবের নস্টালজিয়ার পাশাপাশি আগামী দিনে বাংলার মেয়েদের নিয়ে নিজের স্বপ্নের কথাও জানালেন মুখ্যমন্ত্রী (CM)।

এদিন শুরু থেকেই গেম শোয়ের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে মুখ্যমন্ত্রী। তিনি এলেন অনুষ্ঠানে রইলেন এবং জয় করলেন বাংলার মানুষের মন। আগে থেকেই জমজমাটি নানা পর্বের খেলার ইঙ্গিত ছিল, এপিসোড টেলিকাস্ট হতেই বোঝা গেল কেন বাংলার মানুষের সব থেকে প্রিয় নেত্রীকে নিয়ে এত উন্মাদনা। কবিতা পড়ে শোনালেন, ধামসা বাজালেন, নাচে গানে মাতিয়ে দিলেন, কথার ক্যারিশমায় জমিয়ে দিলেন বাংলার রিয়ালিটি শো দিদি নাম্বার ওয়ান (Didi No 1)। যিনি একা হাতে প্রশাসন সামলান, এতগুলো দফতরের মন্ত্রিত্ব যাঁর হাতে, তিনি কী অবিচল ভাবে টেলিভিশনের ক্যামেরার সামনে একেবারে সাধারণ মানুষের মতো গল্প আড্ডার ছলে ছেলেবেলার স্মৃতিচারণায় ফিরে যেতে পারেন। রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় দিদি নাম্বার ওয়ানের মেজাজটাই ছিল আলাদা। বীরেন ভদ্রের স্তোত্র পাঠের নৃত্য নিবেদনে একগুচ্ছ সেলিব্রিটি দর্শকের উপস্থিতিতে শুরু হয় অনুষ্ঠান। প্রতিযোগী বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়, সংগীত শিল্পী অরুন্ধতী হোম চৌধুরী, শ্রীরাধা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সবার আগ্রহ ছিল সঞ্চালিকা রচনা বন্দোপাধ্যায় কখন বলবেন মুখ্যমন্ত্রীর নাম। বাংলার দিদি এলেন, প্রণাম করলেন শ্রীরামকৃষ্ণ – মা সারদার মূর্তিতে, সকলের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন। এপিসোড শুরু হল রাজ্য সঙ্গীতে। গলা মেলালেন শিবাজি চট্টোপাধ্যায়, ইন্দ্রনীল সেন, রূপঙ্কর বাগচি, অদিতি মুন্সি, অরিত্র মজুমদার সহ উপস্থিত বিশিষ্ট শিল্পীরা।

মুখ্যমন্ত্রী এদিন বাংলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের উন্নয়নের কথা বলেন পাশাপাশি হস্ত শিল্পীদের জন্য বৃহত্তর মার্কেট তৈরি করার চিন্তাভাবনার কথাও জানান। বানতলায় তৈরি ব্যাগ বিদেশে হাজার হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, লেভেলটা নামি ব্র্যান্ডের হলেও আসল প্রোডাক্ট তৈরি হয় এই বাংলায়। যেভাবে রাজ্য সরকার মহিলাদের স্বয়ংসিদ্ধা হয়ে উঠতে সাহায্য করছে সেই কথা রচনাকে তাঁর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সকলকে জানানোর অনুরোধ করেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজের স্বভাব সিদ্ধ ভঙ্গিমায় কখনও ফ্লোর জুড়ে হেঁটে বেড়ালেন আবার কখনও নিজেই ধামসা বাজাতে চাইলেন। সঞ্চালিকার অনুরোধে সাদা ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুললেন বসন্তের রং। জমিয়ে দিলেন তৃণমূল নেত্রী, মেতে উঠলো দিদি নাম্বার ওয়ান।
