মধ্যরাতেও জলপাইগুড়িতে মানুষের পাশে মুখ্যমন্ত্রী, বিকেলেই পৌঁছবেন অভিষেক

সোমবার সকালেই জলপাইগুড়ি পৌঁছেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যে বাগডোগরায় পৌঁছে যান রাজ্যপাল।

ঝড়ে রীতিমতো লন্ডভন্ড অবস্থা উত্তরবঙ্গের (North Bengal) বিস্তীর্ণ এলাকা। জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri ) ময়নাগুড়ি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কথা শুনেই রবিবার রাতেই জলপাইগুড়িতে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তারপর গভীর রাত পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাত ২টো পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী এলাকা পরিদর্শন করেন বলে খবর। পাশাপাশি প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপরই রাতেই জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে আহতদের দেখতে যান তিনি। আহতদের সঙ্গে কথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে বিপদের কথা জানান ক্ষতিগ্রস্তরা। এদিকে সোমবার বিকেলেই সেখানে পৌঁছে যাবেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। এদিকে সোমবার সকাল থেকেই থমথমে এলাকা।

জলপাইগুড়ি, ময়নাগুড়ির যে যে এলাকা রবিবারের ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সে সব জায়গায় রাতেই গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিজে খতিয়ে দেখেছেন। পরিস্থিতির তদারকি করেছেন। সব মিটিয়ে তাঁর হোটেলে ফিরতে রাত আড়াইটে বেজে গিয়েছিল। আপাতত মালবাজারের চালসার একটি হোটেলে আছেন মমতা। এদিকে সোমবার সকালেই জলপাইগুড়ি পৌঁছেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যে বাগডোগরায় পৌঁছে যান রাজ্যপাল। বিমানবন্দর থেকে জলপাইগুড়ির ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল। যাঁরা এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। রাজ্যপাল বলেন, “জলপাইগুড়িতে ঝড়ে প্রাণহানি ঘটেছে। অনেকে আহত। আমি উদ্বিগ্ন। সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। সকলে একসঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলার কাজ করছেন। আমি ওখানে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখব, মানুষের সঙ্গে কথা বলব। যা যা করা সম্ভব, করব।’’ এদিকে, বাংলার দুর্যোগ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। রাতেই তিনি এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে উদ্বেগ ও দুঃখ প্রকাশ করেন। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকা ও সাহায্য করার নির্দেশ দেন বিজেপির কার্যকর্তাদের।

রবিবার বিকেলে চার মিনিটের ঘূর্ণিঝড়ে সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ময়নাগুড়ির বার্নিশ গ্রাম। কালবৈশাখী ঝড়ে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ৫ জনের, আহত অনেকে, ভেঙে পড়েছে কয়েকশো বাড়ি। প্রচুর গাছ উপড়ে পড়েছে। বিদ্যুৎহীন একাধিক এলাকা। এলাকার ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখতে গভীর রাতে বার্নিশ গ্রামে ত্রাণ শিবিরে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। কথা বলেন এলাকাবাসীর সঙ্গে। মৃতদের পরিবারের সঙ্গেও কথা বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর রাত ২টো নাগাদ চালসার উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। মমতা বলেন, ‘প্রশাসন প্রশাসনের মতো কাজ করে যাবে। তবে যেহেতু ভোটের দিন ঘোষণা হয়ে গিয়েছে তাই সব কথা আমি বলতে পারি না। যা কথা বলার হয়ে গিয়েছে।’ এর আগে বিমানবন্দরে মমতা বলেছিলেন, ‘আমার কাছে মানুষের ভালো থাকাটাই শেষ কথা।’


এদিকে সোমবার সকালেও আবহাওয়া প্রতিকূল জলপাইগুড়িতে। উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় ঝোড়ো হাওয়া বইছে। আকাশের মুখও ভার। মাঝেমাঝে মেঘ ডাকছে। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে উত্তরের জেলাগুলিতে।