তীব্র গরমে সংশোধনাগারের আবাসিকদের সুস্থ রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। গরমের কথা মাথায় রেখে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার, হাওড়া, দমদমে রাজ্যের বেশ কয়েকটি সংশোধনাগারে আবাসিকদের জন্য খাবারের মেনুতে পরিবর্তন করা হয়েছে।

এমনিতেই বিভিন্ন সংশোধনাগারে বিভিন্ন শ্রেণির আবাসিকরা রয়েছে। কেউ যাবজ্জীবন সাজা কাটাচ্ছেন, আবার কেউ কেউ বিচারাধীন আবাসিক। তাদের একেকজনের স্বাস্থ্য অনুযায়ী একেকধরনের খাবার থাকে। তবে এই গরমের তীব্র দাবদাহ থেকে বাঁচার জন্য বেশিরভাগ বন্দিদের দু’বেলা খাবারেই রাখা হয়েছে টকডাল, তেতো, শুক্ত, করোলা, নিমপাতা। এই সব পদ গরমের সময়টায় একরকম বাধ্যতামূলকভাবে মেনুতে রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি এই গরমে জল থেকে ইনফেকশন বা পেটের অসুখ হয়। সে ক্ষেত্রে জলের পরিশুদ্ধতার উপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে কারা দফতরের তরফে। সংশোধনাগারে বসানো হচ্ছে বেশ কয়েকটি উন্নত মানের ওয়াটার পিউরিফাই মেশিন। পাশাপাশি হাওড়া সংশোধনাগার এবং দমদমেও এই একই পদ্ধতিতে জল পরিশুদ্ধতার উপর বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে। খেয়াল রাখা হচ্ছে যাতে জল থেকে কোনওরকমের ইনফেকশন হয়ে আবাসিকদের শরীরের ওপর কুপ্রভাব না পড়ে।

এই বিষয়ে রাজ্যের ডিআইজি (কারা) দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, “প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার-সহ বিভিন্ন সংশোধনাগারে এই গরমের হাত থেকে আবাসিকদের কিছুটা রেহাই দেওয়ার জন্য আমরা খাবারের মেনু থেকে শুরু করে অন্যান্য বিষয়ের ওপরেও বিশেষভাবে খেয়াল রাখছি। রান্নায় বেশি তেল, মশলা দেওয়া হচ্ছে না। একেকজন আবাসিককে তাদের ডায়েট চার্ট অনুযায়ী একেকরকম খাবার খায়। ফলে কোনও আবাসিকের যাতে অসুবিধা না-হয়, সেই বিষয়ের উপরও বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে ৷”

তিনি আরও বলেন, “এর পাশাপাশি হাওড়া সংশোধনাগার প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার এবং দমদম সংশোধনাগারে চিকিৎসকরা রয়েছেন তাদের সঙ্গেও নিয়মিতভাবে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে ৷ যাতে সংশোধনাগারের কোনও আবাসিকের মধ্যে যদি শারীরিকভাবে অসুস্থতা দেখা যায়, সে ক্ষেত্রে অবশ্যই এবিষয়ে গুরুত্ব সহকারে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে । এর পাশাপাশি সংশোধনাগরের বিভিন্ন সেলে দীর্ঘদিনের পুরাতন সিলিং ফ্যানগুলি থেকে আবাসিকরা সেই ভাবে হাওয়া পান না। সেই জন্যই প্রায় 300টি নতুন উন্নতমানের হাই স্পিড ফ্যান ইনস্টলেশনের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। এটি মূলত পরীক্ষামূলক ভাবে করা হচ্ছে ৷ যদি সাফল্য আসে তখন আমরা রাজ্যের অন্যান্য সংশোধনাগারগুলিতে এধরনের ব্যবস্থা করব।”

শুধু যে আবাসিকদের উপরেই এই বিশেষ সুযোগ-সুবিধাগুলি দেওয়া হচ্ছে তেমন নয়বরং সংশোধনাগারের রক্ষী যারা রয়েছেন তাদেরও নিয়মিত ওআরএস দেওয়া হচ্ছে যাতে এই গরমে তারা নিজের দায়িত্বে অবিচল থাকতে পারেন।

আরও পড়ুন- রায়ের ৪৮ ঘণ্টা আগে গদ্দার জানল কীভাবে? ‘বোমা ফাটানো’ নিয়ে মোক্ষম প্রশ্ন মমতার
