CPIM-এর হার্মাদরাই জামা পাল্টে BJP! নানুরে ১৩ মে গেরুয়া বিদায়ের ডাক অভিষেকের

বীরভূমের তীব্র দহন। তা উপেক্ষা করেই তাঁর কথা শুনতে হাজির হয়েছিলেন বিপুল জনতা। শুক্রবার, দলীয় প্রার্থী অসিত মালের সমর্থনে নির্বাচনী প্রচার সভা থেকে একতিরে বাম-বিজেপিকে (Left-BJP) বিদ্ধ করলেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তীব্র আক্রমণ করে অভিষেক বলেন, ২০১১-এর আগে সিপিএমের চোখ রাঙানি, হার্মাদদের দাপাদাপি উপেক্ষা করে পরিবর্তন করেছিলেন আপনারা। সেই সিপিএম-এর (CPIM) হার্মাদরাই এখন লাল ঝান্ডা ফেলে গেরুয়া পতাকা নিয়ে বিজেপি হয়েছে। এই নানুরের সুজপুরে ভোট দিতে যাওয়ার পথে হার্মাদদের আক্রমণ প্রাণ হারিয়েছিলেন তৃণমূলের ১১ জন কর্মী-সমর্থক। ১৩ মে যখন ভোট দিতে যাবেন, তখন সিপিএমের সেই অত্যাচারের কথা মনে রাখবেন- বার্তা অভিষেকের (Abhishek Banerjee)।

এদিন নানুরে অভিষেকের জনসভায় ভিড় উপচে পড়ে। আর সেখান থেকেই ২০১১-এর আগে সিপিএমের অত্যাচারের কথা স্মরণ করান অভিষেক। অভিযোগ করেন, ২০০০ সালের ২৭ জুলাই কীভাবে ১১ জন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থককে খুন করেছিল সিপিএমের হার্মাদ বাহিনী। অভিষেকের কথায়, সিপিএম-এর হার্মাদরাই এখন জামা পাল্টা লাল ঝান্ডা ফেলে গেরুয়া পতাকা নিয়ে বিজেপি হয়েছে। তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের কথায়, বাম জমানাতেই যদি ২০১১-তে পরিবর্তন আনতে পারে বাংলার মানুষ, তাহলে এবারও বিজেপিকে বিসর্জন দিতে পারবেন।

১৩ মে বোলপুর ও বীরভূমে লোকসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। ২০১১-তে ওই দিনেই ক্ষমতায় আসে তৃণমূল সরকার। সেই কথা স্মরণ করিয়ে অভিষেক বলেন, এবারও বিজেপিকে ওই দিন বিজেপিকে বিদায় দিতে হবে। বীরভূমে একদিকে যখন অভিষেকের সভা তখন বীরভূমে সভা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিরও। কটাক্ষ করে তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, মোদির সভায় যা লোক রয়েছে, তার ৩গুণ লোক এই নানুরের সভায় হয়েছে। এরপরেই অভিষেক ব্যাখ্যা করনে, কেন তাঁরা বিজেপিকে বাংলা বিরোধী বলেন। তাঁর কথায়, বোলপুর আর কবিগুরু সমার্থক। অথচ বিজেপি সেই বিশ্বভারতীর ফলক থেকে রবীন্দ্রনাথের নাম মুছে দিয়েছে। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে বাড়ি থেকে উৎখাত করার চেষ্টা করেছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি স্বামী বিবেকানন্দকে অজ্ঞ বামপন্থী বলে অপমান করেছেন। ২০১৯-এ নির্বাচনের আগে সভা করতে আসা অমিত শাহের সাঙপাঙ্গরা কলকাতায় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙেছে। দেশের মধ্যে একমাত্র রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ যাদের প্রকল্পের টাকা কেন্দ্র আটকে রেখেছে। এই জন্যই আমরা বিজেপিকে বাংলা বিরোধী বলি- খোঁচা অভিষেকের।

বিজেপি নেত্রী লক্ষ্মীরভাণ্ডার বন্ধ হয়ে যাওযার হুমকি উড়িয়ে অভিষেক জানান, যতদিন তৃণমূল সরকার আছে ততদিন লক্ষ্মীরভাণ্ডার চলবে। মোদি বাংলায় এসে প্রচার করছেন, অথচ অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান নিয়ে একটা শব্দ ব্যয় করেননি।

বিজেপি নেতাদের গাড়ি থেকে ভুরি ভুরি টাকার বান্ডিল উদ্ধার নিয়ে তীব্র আক্রমণ করেন অভিষেক। তাঁর অভিযোগ, বান্ডিল বান্ডিল টাকা নিয়ে ধরা পড়ছেন বিজেপি নেতারা। ভোট কিনতে টাকা বিলি করছেন। তীব্র খোঁচা দিয়ে অভিষেক বলেন, টাকা দিলে নিয়ে নেবেন। ওটা আমাদেরই টাকা।

আগামী দিনে তৃণমূল প্রার্থী অসিত মাল জিতবেন এবং তার পরে রাজ্যে সরকার ৩১ ডিসেম্বরের আগে বাড়ি প্রকল্পের প্রথম কিস্তি পৌঁছে দেবে। সভা থেকে অভিষেকের ঘোষণা, খুঁটি পুজো আগে করে গেলাম, ৪ তারিখ বিজেপি বিসর্জন হবে। আজ যে ভালবাসা তিনি নানুর থেকে পেলেন, আগামী দিনে উন্নয়নে দিয়ে তা শোধ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের।