বাংলায় বহু প্রচলিত একটি প্রবাদ আছে, “ঠাকুর ঘরে কে?…আমি তো কলা খাইনি”! ভোট বাজারে এই প্রবচনটি এবার প্রযোজ্য হতে পারে প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে। যখন সন্দেশখালির স্ট্রিং অপরেশন নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি, যখন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস শ্লীলতাহানীর অভিযোগে অভিযুক্ত, ঠিক তখনই গভীর আশঙ্কায় ভুগছেন তমলুকের বিজেপি প্রার্থী। স্বেচ্ছাবসর নেওয়া বিচারপতি বিজেপির টিকিট পেয়ে গেরুয়াজার্সি গায়ে চাপিয়েছেন। এবার হারের আশঙ্কায় আগেভাগে “ষড়যন্ত্র” তত্ত্ব খাড়া করে বসলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়!

আচমকাই সাংবাদিক বৈঠক ডেকে বসলেন বিজেপি প্রার্থী। সেখানে তাঁর দাবি, শুধু তিনিই নন, যড়যন্ত্রের শিকার হতে পারেন শুভেন্দু অধিকারীর ভাই তথা কাঁথির বিজেপি প্রার্থী সৌমেন্দু অধিকারী। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, “আমার ও কাঁথির বিজেপি প্রার্থী সৌমেন্দুর বিরুদ্ধে ফেক ভিডিও ছড়ানোর চক্রান্ত চলছে। শীঘ্রই এই ভিডিও বাজারে ছাড়া হবে। যেখানে আমাদের বদনাম করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তবে এমন ভিডিও বাজারে এলে সেটা যে ফেক, তা আমরা আগেভাগেই জানিয়ে রাখছি। কোনও প্রশ্নের উদ্রেক হলে আমরা তার জবাব দেওয়ার জন্য তৈরি আছি।” অভিজিতের এমন বক্তব্য থেকেই পরিষ্কার, ডাল ম্যায় কুছ কালা হ্যায়…! তিনি কি এমন কোনও কাজ করেছেন, যে সেই সত্য ভিডিও আকারে প্রকাশ হতে পারে বলে আগে থেকেই সেল্ফ ডিফেন্স তৈরি রাখছেন? সেই জায়গা থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, “ঠাকুর ঘরে কে…?” এমনিতেই বিজেপিতে যোগদানের পর তাঁর ভাবমূর্তি তলানিতে, তারপর যদি কোনও “কীর্তি” ফাঁস হয়, তাহলে তো ভোটের আগেই হেরে বসবেন!

শুধু ভিডিও নয়, এ বার নির্বাচনে দেদার ভোট লুট হতে চলেছে তমলুকে, এমনও দাবি আগেভাগে করে দিলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। হলদিয়ায় দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন অভিজিৎ বলেন, ‘‘আসন্ন নির্বাচনে তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের বিশেষ কিছু এলাকায় দেদার ভোট লুট হতে চলেছে। আমি নিশ্চিত ভাবে খবর পেয়েছি, একাধিক এলাকায় ১০০ শতাংশ ভোট হবে। এই জায়গাগুলিতে দেদার ভোট লুট করার চক্রান্ত হচ্ছে বলে আমি জানতে পেরেছি। তাই এখনই আমি জানিয়ে দিলাম, যেখানে যেখানে এমন ভোট হবে, সেখানেই নির্বাচন কমিশনকে সতর্ক থাকতে হবে। প্রয়োজন মতো সেই সমস্ত সন্দেহজনক জায়গায় উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে অনুরোধ জানাচ্ছি।’’

তাঁর এমন বক্তব্যের পর তৃণমূলের দাবি, “ভোটের ময়দানে লড়াইয়ে হেরে গিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী। নিজের হারের আশঙ্কায় এখন থেকেই ভোট লুটের অভিযোগ তুলেছেন, যা রীতিমতো হাস্যকর। প্রতিটি প্রার্থী যখন ভোটের ময়দানে মাটি কামড়ে পড়ে রয়েছেন, সেখানে তমলুকের বিজেপ প্রার্থী ঠান্ডা ঘরে বসে এখন থেকেই ভোটের দিন সন্ত্রাস হচ্ছে বলে দিবাস্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। এর থেকে পরিষ্কার, তমলুক কেন্দ্রে বিজেপির সংগঠন তলানিতে ঠেকে গিয়েছে। হারের ভয়ে এখন থেকেই যা তা মন্তব্য করছেন উনি।”
