আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। শুরু হয়ে গিয়েছে কাউন্ট ডাউন। রাত পোহালেই গোটা দেশের সঙ্গে এই বঙ্গেও সপ্তম তথা শেষ দফার ভোট গ্রহণ। এই পর্বে রাজ্যের ৯টি হাইভোল্টেজ কেন্দ্রে নির্বাচন। যার মধ্যে অন্যতম যাদবপুর। আর এই যাদবপুর কেন্দ্রের মধ্যেই নজরে থাকে স্পর্শকাতর এলাকা ভাঙড়ও। এই ভাঙড় – এর উপর যাদবপুর কেন্দ্রের ভাগ্য অনেকটাই নির্ভর করে। গত কয়েকটি নির্বাচনে ভাঙড়বাসী দু’হাত উজাড় করে তৃণমূলকে ভোট দিয়েছে। গতবারও এখান থেকে তৃণমূল প্রার্থী মিমি চক্রবর্তী ১ লক্ষের বেশি ভোটে লিড করেছিলেন। এবারও ভাঙড় নিয়ে আশাবাদী রাজ্যের শাসক দল।

তবে ২০২১ সালের পর থেকে ভাঙড় – এর রাজনৈতিক সমীকরণ অনেকটাই বদলেছে। বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে আইএসএফ প্রার্থী নওশাদ সিদ্দিকি জেতার পর থেকে তাদের সংগঠন বেড়েছে। যাদবপুর লোকসভার মধ্যে একমাত্র ভাঙড় বিধানসভায় তৃণমূলের বিধায়ক নেই। ফলে ভাঙড়- এ এবার কিছুটা চ্যালেঞ্জের মুখে তৃণমূল।

অন্যদিকে, ভাঙড় মানেই রাজনৈতিক অশান্তি। সেটা পঞ্চায়েত ভোট হোক, বিধানসভা কিংবা লোকসভা! এবারও ভোটের আগে অশান্তিপ্রবণ ভাঙড় ভোটের আগেও তার ‘চরিত্র’ বজায় রাখল। গতকাল, বৃহস্পতিবার রাত থেকে উতপ্ত হয়ে ওঠেভাঙড়ের ভোগালি এলাকা। তৃণমূল-আইএসএফ সংঘর্ষ – এ রেহাই পেল না শিশুও। বোমাবাজিতে জখম এক শিশু-সহ ৭ জন।

তৃণমূলের অভিযোগ, ভোটে আতঙ্ক তৈরির জন্য রাতে তাদের কর্মীদের লক্ষ্য করে বোমা মেরেছে আইএসএফ। গুরুতর আহত চার জনতে জিরানগাছা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাতেই তাঁদের এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। রাতেই আহত দলীয় কর্মীদের দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান তৃণমূল প্রার্থী সায়নী ঘোষ। ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, শওকত মোল্লাও।

তৃণমূলের আহত এক কর্মী হাসপাতালের বেডে শুয়েই বলেন, “রাস্তা দিয়ে মিছিল করে যাচ্ছিলাম। ওরা আমাদের মিছিলের ওপরেই হামলা করে। প্রায় তিরিশটার মতো বোমা মেরেছে। আমার পা ঝলসে গিয়েছে।” আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির গ্রেফতারির দাবি তুলেছেন ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লা। তাঁর অভিযোগ, “রাজনৈতিকভাবে না পেরে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মতো সন্ত্রাস তৈরি করছে নওশাদ সিদ্দিকি। ৫ জন গুরুতর আহত। একটা শিশুও আহত হয়েছে।”

তৃণমূল প্রার্থী সায়নী ঘোষ বলেন, “আইএসএফের পায়ের তলার থেকে মাটি সরে যাচ্ছে, সেটা বুঝেই হামলা করছে। বাড়ি বাড়ি ভোটের স্লিপ দিতে গিয়েছিল। ষড়যন্ত্র করে এই হামলা চালানো হয়েছে। ভোটের দিন আমি ভাঙড় – এ থাকবো।” মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, “হারার আগেই আসলে ওরা হার মেনে নিয়েছে।”

আরও পড়ুন- ‘ভোট ফায়দায়’ বাংলায় ৮ নাগরিকত্ব, নেই কোনও মতুয়ার নাম
