Monday, November 10, 2025

“জেতা আসন হারাবার জন্য প্ল্যানিং হয়েছে”! ফের দিলীপের নিশানায় শুভেন্দু-সুকান্ত

Date:

Share post:

হারের জ্বালা কিছুতেই মিটছে না দিলীপ ঘোষের। ভোটের আগে যেমন নিয়ম করে বিরোধীদের আক্রমণ করতেন, ভোটে হারের পর ঠিক একইভাবে দলীয় নেতৃত্বকে দুষছেন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। দিলীপ ঘোষের নিশানায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

দলের রাজ্য নেতৃত্বকে তোপ দেগে দিলীপ ঘোষ বলছেন,লোকে হারা আসন জেতার জন্য প্ল্যানিং করে। এখন জেতা আসন হারাবার জন্য প্ল্যানিং হয়েছে। মেদিনীপুরে লড়তে দেওয়া হয়নি, রেজাল্ট দেখা গিয়েছে। এত সাংসদ বিধায়ক ছিল, তাহলে ভোট কমল কেন? দেবশ্রী চৌধুরীর আসন বদল নিয়েও নিশানা দিলীপের। দেবশ্রী ওখানে জিতত না? এর পিছনে কি আছে? এসব কেন করা হয়েছে এগুলো ভাবতে হবে। পার্টির প্রতিষ্ঠিত নেতাদের হারানোর জন্য পাঠানো হয়েছিল?

নাম না করে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে তোপ দেগে দিলীপ ঘোষ বলেন, “পার্টির প্রোগ্রামে আমি ৪ বছর ধরে যাই না। আমাকে কেউ ডাকেও না। আমার মতামতও নেয় না। আমি পার্টির কর্মীদের সঙ্গে থাকি। সাধারণ মানুষের সঙ্গে থাকি। আমি যতদিন রাজনীতি করব আমি এরকমই থাকব। রাজনীতি ছেড়ে দিলে অন্যভাবে মানুষের পাশে থাকব। মানুষের কাছে যেতে কেউ কাউকে আটকাতে পারে না।”

নিজের কেন্দ্র মেদিনীপুরে টিকিট দেওয়া হয়নি দিলীপ ঘোষকে। সেই মেদিনীপুরে বিজেপি হেরে গিয়েছে। আবার বর্ধমান দুর্গাপুরের যে আসন থেকে তাঁকে প্রার্থী করা হয়েছে সেখানেও হার হয়েছে বিজেপির। গতবার এই দুই আসন বিজেপির দখলে ছিল। এ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘পর্যালোচনা হওয়া উচিৎ। কর্মীরা বলবেন কি সমস্যা হয়েছে এখানে। আমি আমার লোকসভায় সময় দিয়েছি। তারপর কিছুদিন অন্য একটি রাজ্যে সময় দিয়েছি। গত ১ বছর ধরে সম্পূর্ণ সময় মেদিনীপুরে দিয়েছিলাম। টাকা- পয়সা, সময় সব দিয়েছি। আমাকে লড়তে দেওয়া হয়নি। তার রেজাল্ট সবাই দেখে নিয়েছে।’

রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলছেন, ‘১০০ বিধানসভায় লিড, ধাক্কা মারলেই ১৩০, হাওয়া ঘুরিয়ে দেব।’ সুকান্তর দাবিকে কার্যত খারিজ করে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘লোকসভা নির্বাচনে আমরা এগোই। বিধানসভায় পিছিয়ে থাকি। ১৯ এর লোকসভায় আমরা ৪১ শতাংশ পেয়েছিলাম। ২১ এর বিধানসভায় সেটা নেমে ৩৮ শতাংশ হয়। এবার লোকসভাতে ৪১ শতাংশ তো পার হওয়া উচিত ছিল। সেটা কমে গেল তো। আবার ৩৮ এ ফিরে এলো। এটাই তো পর্যালোচনার বিষয়। ভোট কমল কেন? এতো নেতা এসে গেছে। বলছে সংগঠন বেড়েছে। এবার তো প্রধানমন্ত্রী সব জায়গায় গেছেন। এতো সাংসদ বিধায়ক ছিল। তাহলে ভোট কমল কেন? ভাবার দরকার আছে।’

এখানেই থেমে থাকেননি দিলীপ ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, ‘আমি নাকি মেদিনীপুরে দাঁড়ালে হেরে যাব। কারণ ওখানে নাকি কুরমিরা আমাদের বিরুদ্ধে। যেখানে কুরমি ভোট বেশি সেই পুরুলিয়া আসনে বিজেপি জিতেছে। আমার বিরুদ্ধে কুরমিদের খ্যপানো হয়েছিল। আমাকে সরানোর জন্য এটা করা হয়েছিল। দেবশ্রী যেখানে কাজ করেছে বা মন্ত্রী ছিল সেখানে আমরা এবারও জিতেছি। একজন কাউন্সিলর ওখানে লোকসভা জিতেছে। তাকে কেউ চিনতই না। একটা গ্রামীণ পুরসভার নেতা। তাহলে দেবশ্রী ওখানে জিতত না? এর পিছনে কি আছে? এসব কেন করা হয়েছে এগুলো ভাবতে হবে। কিছু তো একটা ব্যাপার আছে। নাহলে যারা পার্টির প্রতিষ্ঠিত নেতা তাদের কি হারানোর জন্য পাঠানো হয়েছিল? লোকে হারা আসন জেতার জন্য প্ল্যানিং করে। এতো দেখছি জেতা আসন হারাবার জন্য প্ল্যানিং হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।’

 

spot_img

Related articles

ধর্মীয় বই কিনতে গিয়ে ২ কোটি টাকার প্রতারণার ফাঁদে কলকাতা ইসকন! গ্রেফতার ১ 

ধর্মীয় বই কেনার অর্ডার দিতে গিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকার প্রতারণার শিকার হল কলকাতা ইসকন। অভিযোগ, অর্ডার অনুযায়ী...

বিশ্বকাপজয়ী মেয়ের সৌজন্যে হারানো পুলিশের চাকরি ফিরে পাচ্ছেন বাবা

কয়েকদিন আগেই আইসিসি একদিনের বিশ্বকাপ(ICC World Cup)  জিতেছে ভারতীয়  মহিলা দল। মেয়েদের সাফল্যে গর্বিত মা-বাবারা। তবে বিশ্বকাপজয়ী মেয়ের...

গ্যাস-সমস্যায় নিঃশ্বাসের পরীক্ষা: যুগান্তকারী আবিষ্কারে বিশ্বে স্বীকৃতি বাঁকুড়ার চিকিৎসকের

একটি সাধারণ সমস্যা, যাতে জর্জরিত বর্তমান যুবসমাজ থেকে শিশুরা পর্যন্ত। গ্যাস বা গ্যাসট্রাইটিসের মতো সমস্যা নির্ধারণ করার জন্য...

একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে বাড়তে পারে আসন সংখ্যা, জানালো এসএসসি 

রাজ্যের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের ফলাফল ইতিমধ্যেই প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। প্রকাশিত ফল অনুযায়ী,...