বিরোধী সাংসদদের সংসদের দুই কক্ষ থেকে সাসপেন্ড করে দিয়ে একের পর এক বিল থেকে আইন পর্যন্ত পাশ করেছে দ্বিতীয় মোদি সরকার। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে জনগণের রায় মোদির বিরুদ্ধে যাওয়ায় এবার মোদি সরকারের গায়ের জোরে আইন পাশের পথও বন্ধ হল। রাজ্যসভায় সংখ্যা গরিষ্ঠতা হারালো বিজেপি তথা এনডিএ। চলতি বছরে যে ১১ টি রাজ্যসভার আসনে নির্বাচন রয়েছে, এখন সেই নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে কেন্দ্রের শাসক থেকে বিরোধী উভয় পক্ষই।

শনিবার মেয়াদ শেষ হয় চার রাজ্যসভার সাংসদ – রাকেশ সিনহা, রাম সকল, সোনাল মানসিং ও মহেশ জেটমালানির। চারজনই বিজেপির মনোনিত প্রার্থী ছিলেন। তার ফলে বর্তমানে রাজ্যসভায় বিজেপির সাংসদ সংখ্যা দাঁড়ালো ৮৬ জন, যা বিরোধী জোটের থেকেও কম। I.N.D.I.A. জোটের মোট সাংসদ রাজ্যসভায় ৮৭ জন। তবে এনডিএ জোটের মোট সাংসদ সংখ্যা ১০১ জন। কিন্তু সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেতে গেলে সাংসদ সংখ্যা কমপক্ষে ১১২ জন হতে হবে।


সেক্ষেত্রে এখন বিজেপিকে নির্ভর করতে হবে দক্ষিণের এআইএডিএমকে, জগনমোহন রেড্ডির ওয়াইএসআর কংগ্রেস, কে চন্দ্রশেখর রাও-এর বিআরএস, নবীন পট্টনায়েকের বিজেডির সাংসদদের উপর। যার মধ্যে এআইএডিএমকে বরাবরের মতো বিজেপিকে সমর্থন করলেও বাকিদের সমর্থন নিয়েই অনিশ্চিত মোদি সরকার। চন্দ্রবাবু নাইডু তামিলনাড়ুর ক্ষমতায় আসার পরে বিরোধী জগনমোহন কোনওভাবেই নাইডুর পাশে থাকবেন না। বিআরএস নেত্রী কে কবিতাকে জেলে ঢোকানোর পরে তাঁদের সাংসদদেরও সমর্থনের প্রত্যাশা নেই। ওড়িশায় ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পরে নবীন পট্টনায়েকও বিজেপিকে সমর্থনের পথ থেকে সরে এসেছেন।

এই পরিস্থিতিতে রাজ্যসভায় এখন ২০টি আসন খালি রয়েছে। তার মধ্যে ১১টি নির্বাচিত আসন। সেই আসনে নির্বাচন এই বছরই হওয়ার কথা। এর মধ্যে মহারাষ্ট্র, অসম, বিহারের দুটি করে আসন, হরিয়ানা, রাজস্থান, তেলেঙ্গানা, মধ্যপ্রদেশ, ত্রিপুরার একটি করে আসনে নির্বাচন হবে। ডবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলির আসন নিশ্চিত হলেও হরিয়ানা, তেলেঙ্গানার আসন নিয়ে প্রত্যাশী কংগ্রেস। উপনির্বাচনে মধ্যপ্রদেশ যে ফলাফল দেখিয়েছে তাতে সেখানেও রাজ্যসভার সাংসদ নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হতে পারে। মহারাষ্ট্রে ইতিমধ্যেই ব্যাকফুটে এনডিএ জোট। বর্তমান প্রেক্ষাপটে তাই কোনওভাবেই রাজ্যসভায় সংখ্যা গরিষ্ঠতা ধরে রেখে আইন পাশ করানোর স্বেচ্ছাচারিতা করতে পারবেন না নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহরা।

