কেউ স্বাবলম্বী, কেউ কর্পোরেট ফান্ড পান! আবার কারো উপস্থাপনা যথাযথ নয়! আদতে যে সব নাট্যদলের পথে বিজেপির পথের থেকে কোনও না কোনও ভাবে আলাদা হয়ে গিয়েছে, তাঁদের মাথার উপর থেকে হাত সরিয়ে নেওয়া শুরু করে দিল তৃতীয় মোদি সরকার। সংসদে বাজেট পেশের সময় দেশের শিল্প সংস্কৃতির ধ্বজা ওড়ানো মোদি সরকার এবার বাংলার প্রায় ১৫-১৬টি দলের অনুদান বন্ধের নোটিশ দিল।

মেঘনাদ ভট্টাচার্যের দল ‘সায়ক’ থেকে পৌলমী চট্টোপাধ্যায়ের দল ‘মুখোমুখি’ – কেন্দ্রের তোপের মুখে এবার এই সব দল। লোকসভা নির্বাচনের আগে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের নাটক করা নিয়ে একাধিক দল ভিন্ন মত নিয়েছিল। বিজেপির বার্তা দেওয়া নাটক করতে অস্বীকার করেছিলেন পরিচালক দেবেশ চট্টোপাধ্যায়। এবার অনুদান বন্ধের তালিকায় তাঁর দল ‘সংসৃতি’। প্রত্যেককেই আলাদা আলাদা যুক্তি দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। সংসৃতির ক্ষেত্রে যেমন বলা হয়েছে – তাঁরা কর্পোরেট তহবিল পান। যা পরিচালক দেবেশ চট্টোপাধ্যায় সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন।

আবার মেঘনাদ ভট্টাচার্যের সায়কের জন্য বলা হয়েছে তাঁদের উপস্থাপনা সন্তোষজনক নয়। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের কন্যা পৌলমী চট্টোপাধ্যায়ের দল মুখোমুখির ক্ষেত্রে আবার বলা হয়েছে তাঁদের দল স্বাবলম্বী। তাঁদের সরকারি সহযোগিতার প্রয়োজন নেই। কেন্দ্রের গুরু-শিষ্য পরম্পরা প্রকল্পে নাটকের দলগুলির পরিচালক মাসিক ১৫ হাজার টাকা ও নির্দিষ্ট সংখ্যক কর্মী বয়স অনুযায়ী ২ থেকে ১০ হাজার টাকা করে পেতেন। এবার এক ঝটকায় বাংলার এক ঝাঁক নাটকের দলের অনুদান বন্ধ হয়ে গেল।

বরাবার বাংলাকে বিভিন্ন ভাবে বঞ্চনার মধ্যে রেখে শায়েস্তা করার পথে হাঁটে কেন্দ্রের মোদি সরকার। এবার সেই তালিকায় নতুন করে যুক্ত হল নাটকের দলের বঞ্চনা। পরিচালকদের দাবি, বেছে বেছে তালিকা তৈরি করেই কেন্দ্রের সরকার বিরোধী পরিবেশনা করা দলগুলির অনুদান বন্ধ করা হয়েছে। যদিও এই নিয়ে এখনই রাজনীতির অবকাশ রয়েছে কিনা তা বিবেচনা করে দেখবেন বলে জানান রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তথা নাট্যকার ব্রাত্য বসু। তিনি জানান, “শুনলাম এরকম একটা তালিকা বেরিয়েছে এবং কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গের বহু দল বাদ পড়েছে। অনুদান দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রত্যেকের কিছু ভেদাভেদ মানদণ্ড থাকে। যতক্ষণ না তালিকা খতিয়ে দেখছি এটার পিছনে রাজনৈতিক পক্ষপাত আছে কিনা এখুনি বলতে পারছি না।”

